মনোনয়ন নিয়ে আ.লীগে অসন্তোষ, জোটে ক্ষোভ

আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন নিয়ে আওয়ামী লীগে অসন্তোষ বাড়ছে। দলীয় মনোনয়ন বঞ্চনা ও জোট প্রার্থীদের আসন ছাড় দেয়ায় এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। সেই সঙ্গে দলটির নেতৃত্বাধীন ১৪ দল ও মহাজোটেও চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। এই অসন্তোষ ও ক্ষোভ বিভিন্ন নির্বাচনী এলাকায় ইতোমধ্যেই প্রকাশ্য রূপ নিয়েছে বা নিচ্ছে। তবে এ অবস্থার দ্রুত অবসান হবে বলে আশার কথা শোনালেন আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারকরা।

আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা গেছে, সংসদীয় ৩০০ আসনের মধ্যে ২৬৪ আসনে দলীয় মনোনয়নের প্রত্যয়নের চিঠি দিয়েছে আওয়ামী লীগ। অধিকাংশ আসনে একজন করে মনোনয়ন দেয়া হলেও কিছু আসনে বিকল্প হিসেবে একাধিক প্রার্থীও রাখা হয়েছে। এরই মধ্যে মনোনয়ন বঞ্চিতদের অসন্তোষ প্রকাশ্য রূপ নিয়েছে। তবে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিনের পর ক্রমাগত বাড়তে থাকা এই অসন্তোষ সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

এদিকে গত নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ১৪ দলের শরিক দলগুলোকে ১৫টি আসন দিলেও এবার ১৩টি আসন ছেড়েছে। এ নিয়ে ‘আদর্শিক জোটের’ শরিকদের মধ্যে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। অন্যদিকে আওয়ামী লীগ এবার মহাজোটের অন্যতম শরিক জাতীয় পার্টিকে ৪০টির বেশি আসন ছাড়তে নারাজ। কিন্তু এতে অখুশি জাপা ২ শ’এর মতো আসনে প্রার্থী দিয়ে রেখেছে। এখনো চলছে দর-কষাকষি। জোট-মহাজোটের প্রার্থীদের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ, সড়ক অবরোধ ও মিছিল করেছে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের অনুসারীরা।

তবে ৯ ডিসেম্বর মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিনের আগেই আওয়ামী লীগকে আসন বণ্টনের সমস্যা সমাধান করতে হবে। এই সময়ের মধ্যে নির্বাচন কমিশনকে মনোনয়নের তালিকা চূড়ান্ত করে জানাতে হবে, যাতে তারা সে অনুযায়ী প্রতীক বরাদ্ধ দিতে পারে।

আওয়ামী লীগ নেতারা জানান, এরই মধ্যে দল ও জোটের প্রার্থী তালিকা নির্বাচন কমিশনকে জানানো হয়েছে। আসন বণ্টনে জটিলতা ও কৌশলগত কারণে এখনো গোপন রাখা হচ্ছে। তবে এবার সিদ্ধান্তের বাইরে ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থী হওয়ার খুব একটা সুযোগ নেই। কেন্দ্র থেকে বলার পরে অনেকেই মনোনয়ন প্রত্যাহার করেছে। তাই দলের মনোনয়ন বঞ্চিতদের অসন্তোষ খুব শিগগিরই স্বাভাবিক হয়ে আসবে।

তারা বলছেন, জাতীয় পার্টি, ঐক্যফ্রন্ট ও ইসলামী দলগুলোর সঙ্গে আসন বণ্টন নিয়ে যে জটিলতা রয়েছে, তা দু-তিনদিনের মধ্যে মিটে যাবে। এরপর সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে আওয়ামী লীগ ও জোট প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করবে।

তবে এ বিষয়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে ক্ষোভের কথা জানিয়েছেন ১৪ দল ও জাতীয় পার্টির নেতারা। কিন্তু এ ব্যাপারে উচ্চবাচ্চ্য করে তারা আওয়ামী লীগের বিরাগভাজন হতে রাজি নন।