হঠাৎ কূটনীতিকদের দৌড়ঝাঁপ, সক্রিয় মার্কিন রাষ্ট্রদূতও
- Details
- by নিজস্ব প্রতিবেদক
আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে ঢাকায় নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকদের দৌড়ঝাঁপ হঠাৎ করেই বেড়েছে। এর মধ্যে নব নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত আর্ল রবার্ট মিলারের সক্রিয়তা উল্লেখ করার মতো। এরই মধ্যে রবার্ট মিলার আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতয়ীয় ঐক্যফ্রন্ট ও প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে পর পর কয়েকটি বৈঠক করেছেন। প্রতিটি বৈঠকেই তিনি সব পক্ষকে নির্বাচনী সহিংসতা পরিহারের আহ্বান জানিয়েছেন।
সর্বশেষ বুধবার জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতাদের সঙ্গে ঢাকার একটি হোটেলে বৈঠক করেন ঢাকায় কর্মরত বিদেশি কূটনীতিকরা। ওই বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, চীন, জাপান, ভারত, পাকিস্তান, তুরস্ক, ফ্রান্স, অস্ট্রেলিয়া, সুইডেন, সুইজারল্যান্ড, নরওয়ে, ডেনমার্ক, কোরিয়া, ইন্দোনেশিয়া ও ফিলিপাইন্সসহ বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও দূতাবাসের শীর্ষ কর্মকর্তারা অংশ নেন।
বৈঠকে ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেন, বিএনপির নির্বাচনী সমন্বয়ক নজরুল ইসলাম খান, ডা. জাফর উল্লাহ চৌধুরী, সাবিহ উদ্দিন আহমেদসহ শীর্ষ নেতারাও ছিলেন। তারা আসন্ন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিরোধী প্রার্থী ও নেতাকর্মীদের ওপর হামলা, মামলা, গ্রেপ্তার ও সহিংসতাসহ দেশের সর্বশেষ সামগ্রিক চিত্র কূটনীতিকদের কাছে তুলে ধরেন।
বৈঠক শেষে ড. কামাল হোসেন বলেন, ‘নির্বাচনের পরিবেশ নিয়ে আমারা যে পর্যবেক্ষণের কথা বলছি, তার সঙ্গে বিদেশি কূটনীতিকদের পর্যবেক্ষণের মিল রয়েছে।’ অন্যদিকে মার্কিন রাষ্ট্রদূত মিলার বলেন, ‘আমরা আশা করছি, নির্বাচন কমিশন তাদের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করবে। সব দলকে নির্বাচনী সহিংসতা পরিহার করতে হবে।’
এর আগে গত ১৮ ডিসেম্বর বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে বৈঠক করেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত মিলার। বৈঠকে তিনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে একটি অবাধ, সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য, অংশগ্রণমূলক ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন দেখতে চায়। আমরা মনে করি, নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় সবাই সমানভাবে অংশগ্রহণ করতে না পারলে নির্বাচনের পদ্ধতি কার্যকর হবে না।’ এ সময় তিনি নির্বাচনী সহিংসতার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, ‘সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সবাইকে সহিংসতা পরিহার করতে হবে।’
দায়িত্ব নিয়ে ঢাকায় আসার পর গত ১৭ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত আর্ল রবার্ট মিলার। সৌজন্য সাক্ষাৎ হলেও তিনি বের হয়ে আসন্ন সংসদ নির্বাচন নিয়ে মন্তব্য করেন। তিনি জানান, নির্বাচন অবাধ, নিরপেক্ষ, সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য ও শান্তিপূর্ণ হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
মার্কিন রাষ্ট্রদূত মিলার প্রধানমন্ত্রীকে জানিয়েছেন, এবার নির্বাচন পর্যবেক্ষণে ৩২ জন পর্যবেক্ষক পাঠাবে যুক্তরাষ্ট্র। এছাড়া মার্কিন দূতাবাসের ১১টি দলও নির্বাচন পর্যবেক্ষণে অংশ নেবে।
বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব এহসানুল করিম জানান, “বিরোধী দলের নির্বাচনী প্রচারণায় হামলার অভিযোগের বিষয়ে শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘নির্বাচনকালীন সন্ত্রাসের শিকার হয়ে আওয়ামী লীগের দুইজন কর্মী মারা গেছেন।’ তবে মার্কিন রাষ্টদূতকে প্রধানমন্ত্রী জানান, তিনি দলীয় নেতাকর্মীদের ধৈর্য ধারনের আহবান জানিয়েছেন।”
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরে সঙ্গেও সচিবালয়ে বৈঠক করেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত মিলার। এ সময় তিনি নির্বাচনের পরিবেশ এবং পর্যবেক্ষণের বিষয়ে কথা করেন।
এর আগে গত ২০ নভেম্বর ভারতের হাইকমিশনার হর্ষবর্ধন শ্রিংলা যুক্তফ্রন্টের চেয়াম্যান ও বিকল্প ধারার প্রধান একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরীর বাসায় বৈঠক করেন। অন্যদিকে একই দিন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষনেতা ড. কামাল হোসেনের সঙ্গে বৈঠক করেন ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাজ্যের হাইকমিশনার অ্যালিসন ব্লেইক।
এছাড়া গত ১৮ অক্টোবর ঢাকায় নিযুক্ত বিদেশি কূটনীতিকদের সাথে বৈঠক করে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতারা। সে সময় তারা একটি সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনের দাবিতে সরকারকে দেয়া ৭ দফা দাবি ও ১১ লক্ষ্য কূটনীতিকদের সামনে তুলে ধরেন। ওই বৈঠকে কানাডা, জার্মানি, ফ্রান্স, জাপান, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, নরওয়ে, সুইজারল্যান্ড, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, চীন, কাতার, ভিয়েতনাম, কোরিয়া, পাকিস্তান, সৌদি আরব, তুরস্কসহ প্রায় ২৫টিরও বেশি দেশের রাষ্ট্রদূত এবং হাইকমিশনার ও তাদের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
গত ১১ অক্টোবর ইউরোপীয় পার্লামেন্টে এক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে কথা বলেন কমিশনের পররাষ্ট্রবিষয়ক প্রধান ফেডেরিকা মঘেরিনি। তিনি বলেছিলেন, ‘কোনো পাতানো নির্বাচনকে বৈধতা দেয়া তাদের কাজ নয়।’ এর কিছু দিন আগে একাদশ নির্বাচন উপলক্ষে বাংলাদেশে কোনো পর্যবেক্ষক পাঠাবে না বলে জানায় সংস্থাটি।
এগুলো ছাড়াও নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার আগে-পরে আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে বেশ কয়েক দফা বৈঠক করেন বিদেশি কূটনীতিকরা। এছাড়া ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিরাও একই ধরনের বৈঠক করেছেন।
গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...
খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর
Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.
Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.