আশরাফুলের বদলি ইয়াসিরই বিপিএলের ‘নতুন আবিষ্কার’

একরকম অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠেছিল চিটাগং ভাইকিংস। দারুণ ফর্মে থেকেই ঘরের মাঠে ফিরেছিল মুশফিকুর রহিমের দল। কিন্তু নিজেদের মাঠ জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে এসেই রাহুর দশায় পড়েছে ভাইকিংস। চট্টগ্রাম পর্বে দুই ম্যাচ খেলে দুটিতেই হেরে বসেছে বন্দর নগরীর ফ্র্যাঞ্চাইজিটি।

অবশ্য পরপর দুই দিনে দুটি ম্যাচ হারলেও নয় ম্যাচে ছয় জয় নিয়ে যথারীতি শীর্ষেই আছে চিটাগং ভাইকিংস। দুটো ম্যাচেই টস জিতে রানপাহাড়ের চ্যালেঞ্জ নিতে হয়েছে তাদের। কিন্তু আশা জাগিয়েও কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানস ও রংপুর রাইডার্সের কাছে হেরে গেছে। শুরুর দিকে ব্যাটসম্যানরা দায়িত্ব নিয়ে খেললে ম্যাচ দুটির ফল অন্যরকম হতে পারতো।

কাল ম্যাচ হারের পর এমনটাই জানালেন চিটাগংয়ের ইনিংসের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক ইয়াসির আলি রাব্বি। সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেছেন, ‘আসলে ক্রিকেট খেলাটাই হার-জিতের। এখানে হোম-অ্যাওয়ে তেমন কিছু না। ওরা (রাজশাহী কিংস) একটু ভালো খেলেছে, আমরা একটু কম ভালো খেলেছি। এ জন্যই হেরে গেছি। যদি প্রথম দিকে আমরা ব্যাটসম্যানরা আরো দায়িত্ব নিয়ে খেলতাম তাহলে এই পরিস্থিতিটা হতো না।’

বলা হচ্ছে এবারের বিপিএলে বাংলাদেশ ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় আবিষ্কার ইয়াসির। যিনি আসরের শুরুতে ব্রাত্য ছিলেন। পরে মোহাম্মদ আশরাফুলের পরিবর্তিত হিসেবে ভাইকিংসের একাদশে ঢুকে পড়েন। বাংলাদেশ ক্রিকেটের প্রথম সুপারস্টারের পরিবর্তিত হিসেবে খেলতে নামায় স্বাভাবিকভাবেই চাপে থাকার কথা ছিল ইয়াসিরের।

কিন্তু প্রত্যাশার চাপটা নেননি ইয়াসির। ব্যাট করেছেন স্বাচ্ছন্দে। এ জন্য দলের সবারই সমর্থন পেয়েছেন তিনি। আশরাফুলের পরিবর্তিত হিসেবে ব্যাট হাতে আস্থার প্রতিদান দিতে পারায় খুশি ইয়াসির। বলেছেন, ‘টিম ম্যানেজমেন্ট, অধিনায়ক এবং সতীর্থরা আমাকে মানসিক সমর্থন দিয়ে গেছেন। বলেছেন, দুই বছর কোনো ম্যাচ খেলিসনি এটা কোনো ব্যাপার না। সামনে ম্যাচ খেলার সুযোগ পেলে সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করবি। ইনশাল্লাহ ভালো করবি। এ কারণে আমি চাপ অনুভব করিনি।’

বিপিএলের এবারে আসরে সাত ম্যাচে তিনটিতেই হাফসেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন ইয়াসির। প্রথম ম্যাচটি খেলতে নেমে করেছিলেন ৪১। অথচ এই ইয়াসিরই গত মৌসুমে বিপিএলে খেলার সুযোগই পাননি। সেই জেদটাই এবার তার ভেতরে আগুন জ্বালিয়ে দিয়েছে, ‘হ্যাঁ, অবশ্যই। জেদ তো কাজ করেই। দুই মৌসুম ধরে ম্যাচ (বিপিএল) খেলছি না। অবশ্যই নিজেকে প্রমাণ করার একটা আকাঙ্ক্ষা ছিল। আলহামদুল্লিল্লাহ ওটাই চেষ্টা করছি।’

দুর্দান্ত এই ফর্মই এখন ২৩ বছর ছুঁই ছুঁই ইয়াসিরকে স্বপ্ন দেখাচ্ছে বাংলাদেশ জাতীয় দলের, ‘ছোটবেলা থেকেই ক্রিকেট খেলি। বাবাই আমার প্রথম কোচ। ভালো খেলছি। অবশ্যই স্বপ্ন দেখছি (জাতীয় দলের)। এখন বাকিটুকু আল্লাহর হাতে। কপালে রাখলে ইনশাআল্লাহ জাতীয় দলে খেলবো। বাকিটা নির্বাচকদের হাতে।’

ইয়াসির নিজের সামর্থ্যের প্রমাণ দিয়ে যাচ্ছেন। এবার নির্বাচকদের টনক নড়লেই চলে!