ওই চাল ‘প্লাস্টিকের’ নয়, ব্যাখ্যা দিয়ে জানালেন ডিসি

গাইবান্ধায় ‘প্লাস্টিকের চাল’ জব্দের ঘটনা নিয়ে গণমাধ্যমে খবর আসার পর সারাদেশে তোলপাড় চলছে। এর মধ্যেই বিষয়টি নিয়ে মঙ্গলবার দুপুরে নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে আসেন জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. আবদুল মতিন। এ সময় তিনি বলেন, ‘উদ্ধার করা চাল প্লাস্টিকের নয়, নিম্নমানের অথবা ভেজাল হতে পারে। এ নিয়ে আতঙ্কিত হবার কিছু নেই।’

প্লাস্টিকের চালে সন্দেহে তোলপাড়

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ‘প্লাস্টিকের চাল’ সন্দেহে গাইবান্ধা শহরের নতুন বাজারের একটি দোকান থেকে আটক করা চাল প্রাথমিকভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়েছে। এ চাল ভিজিয়ে ও রান্না করে দেখা গেছে এর ভাত স্বাভাবিক চালের মতোই। এ চাল চূড়ান্তভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য ঢাকায় ভোক্তা সংরক্ষণের প্রধান কার্যালয়ের পরীক্ষাগারে পাঠানো হয়েছে।

এ সময় সেখানে জেলার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) রোকসানা বেগম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. তোফায়েল হোসেন, জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক জহিরুল ইসলাম, জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক মো. শওকত ওসমান, জেলা মার্কেটিং কর্মকর্তা মো. মোয়াজ্জেম হোসেন, সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা উত্তম কুমার রায় প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

গাইবান্ধার জেলা প্রশাসক মো. আবদুল মতিন

যেভাবে প্লাস্টিকের চালের খবর সামনে এলো: খবরে প্রকাশ, গাইবান্ধা শহর এলাকার বাসিন্দা রনি মিয়া। শহরের নতুন বাজার থেকে চাল কিনেছিলেন বাসার জন্য। দুই-একদিন ওই চাল খাওয়ার পর ভাতের অদ্ভুত স্বাদের কারণে তার মনে সন্দেহ হয়। পরীক্ষা করতে সেই চাল সরাসরি আগুনে দিলেই কারণ বুঝতে পারেন রনি মিয়া। এরপর চুলায় রান্না না বসিয়ে সেই চালগুলো নিয়ে সোজা সদর থানায় হাজির হন তিনি।

চালগুলো দেখতে প্লাস্টিকের মতো মনে হওয়ায় পুলিশকে বিষয়টি দেখান রনি মিয়া। পুলিশ ভাল করে পর্যবেক্ষণ করার পর তাদেরও চালগুলো নিয়ে সন্দেহ হয়। পরে পুলিশ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) উত্তম কুমার সরকারকে বিষয়টি অবহিত করেন।

এরপর সোমবার দুপুরে শহরের নতুন বাজার চালের আড়তে অভিযান পরিচালনা করে ‘নোমান মিয়ার চালের দোকান’ থেকে দেড় বস্তা প্লাস্টিক সদৃশ চাল জব্দ করে পুলিশ।

সদর থানার ওসি খান মো. শাহরিয়ার জানান, সকালে রনি মিয়া নামের এক ব্যক্তি তার বাড়িতে ভাত রান্না করতে গিয়ে প্লাস্টিক সদৃশ চাল লক্ষ্য করেন। তিনি সেই চাল রান্নায় না চড়িয়ে সেগুলো নিয়ে সদর থানায় হাজির হন।

‘আমরা বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অবহিত করলে তিনি সঙ্গে সঙ্গে এ বিষয়ে অভিযান পরিচালনার নির্দেশ দেন। তার নেতৃত্বে অভিযান পরিচালনা করে ব্যবসায়ী নোমান মিয়ার দোকান থেকে দেড় বস্তা প্লাস্টিক সদৃশ চাল জব্দ করা হয়’, বলেন ওসি।

তিনি আরও বলেন, এছাড়াও পুলিশ ওই চালের খোঁজে বাজারের কয়েকটি দোকানে অভিযান চালায়। নোমান মিয়ার দোকান সিলগালা করে দেয়া হয়। তবে, তাকে গ্রেপ্তার করা যায়নি। বাজারের অন্যান্য দোকানও প্লাস্টিকের চালে ছেয়ে গেছে বলে সন্দেহ করছেন তারা।

ক্রেতা রনি মিয়া জানায়, চালগুলো নিয়ে আমার সন্দেহ হয়। পরে কিছু চাল খোলা আগুনে তাপ দেয়ার সাথে সাথে পুড়ে প্লাস্টিকের আকার ধারণ করে। এরপর সঙ্গে সঙ্গে পুলিশের কাছে এই চাল নিয়ে হাজির হই।