রোমাঞ্চের লড়াইয়ে বিতর্কের আগুন

প্রথম দিনেই জমে উঠল দক্ষিণ আফ্রিকা ও শ্রীলঙ্কার প্রথম টেস্ট। পেসারদের দাপট। কয়েকজনের ইনজুরি। ক্ষণে ক্ষণে ম্যাচের রঙ বদলানো। সবমিলিয়ে ডারবান টেস্টের প্রথমটা দিনটা হয়ে উঠল দারুণ উপভোগ্য। কিন্তু এসব কিছু ছাপিয়ে গেল আম্পায়ারিং বিতর্ক।

দুর্দান্ত এই লড়াইটা হলো সমানে সমান। নির্দিষ্টভাবে এগিয়ে রাখা যাচ্ছে না কোনো দলকেই। আগে ব্যাট করতে নেমে অনেক ঝড়-ঝাপ্টার পর দলীয় সংগ্রহ দুশো ছাড়িয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা। লঙ্কান তোপে শেষ অবধি প্রথম ইনিংসে ২৩৫ রানে গুটিয়ে গেছে প্রোটিয়ারা। জবাব দিতে নেমে এক উইকেটে ৪৯ রানে দিনের খেলা শেষ করেছে সফরকারীরা।

বুধবার টস আগে আগে ব্যাট করতে নামা দক্ষিণ আফ্রিকার টপ অর্ডার ধসে পড়ে শুরুতেই। ১৭ রানের মধ্যে তিন উইকেট খুইয়ে বসে তারা। শুরুর এই ভহায়হ বিপর্যয় চতুর্থ উইকেটে কিছুটা কাটিয়ে ওঠে প্রোটিয়ারা। কিন্তু ৮৯ রানে দলের চতুর্থ ব্যাটসম্যান হিসেবে সাজঘরে ফিরে যান ফ্যাফ ডু প্লেসি।

৩৫ রানে আউট হন স্বাগতিক অধিনায়ক। তার মতো আশা জাগিয়েও হাফসেঞ্চুরি করতে পারেননি টেম্বা বাভুমা। কয়েক মিনিট পর ডু প্লেসিকে অনুকরণ করলেন তিনিও। ফেরার আগে ৪৭ রানের ইনিংস খেলে গেছেন বাভুমা। এরপর মিডল ও লোয়ার অর্ডার ব্যাটসম্যানদের নিয়ে লঙ্কান পেসের বিপরীতে প্রতিরোধ গড়েন কুইন্টন ডি কক।

তিনিই একমাত্র ইনিংসে হাফসেঞ্চুরি পাড়ি দিয়েছেন। শতকের সম্ভাবনাও জাগিয়েছিলেন প্রোটিয়াদের উইকেটক্ষক-ব্যাটসম্যান। কিন্তু যোগ্য সঙ্গীর অভাবে ঝলমলে ইনিংসটার সুন্দর পরিণতি দিতে পারেননি তিনি। অপর প্রান্তে সতীর্থদের আসা-যাওয়ার মিছিল লেগে যায়। পরিস্থিতি বুঝে ওয়ানডে মেজাজে ব্যাট চালাতে থাকেন ডি কক।

সেটাই কাল হয়ে দাঁড়াল। সেঞ্চুরি থেকে কুড়ি রান দূরে দলের শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হয়ে যান তিনি। ৯৪ বলে ৮০ রানের ইনিংসটি আটটি চার ও একটি ছক্কায় হাঁকিয়েছিলেন ডি কক। এই ইনিংস খেলার পথে কেশব মহারাজের (২৯) কাছ থেকে ভালোই একটা সঙ্গ পেয়েছেন তিনি। ডেল স্টেইনও (১৫) কিছুটা ভরসা জুগিয়েছিলেন।

কিন্তু শেষটা মধুর হলো না ডি কক ও দক্ষিণ আফ্রিকার। থেমে যেতে হলো তাদের। স্বাগতিকদের দ্রুত গুটিয়ে দিতে মূল ভূমিকা রেখেছেন বিশ্ব ফার্নান্দো। শিকার করেছেন চার উইকেট। তিনটি শিকার কাসুন রাজিথার। সুরঙ্গ লাকমল নিয়েছেন হাশিম আমলার উইকেট। আমলার আউট নিয়ে ভালোই বিতর্ক হয়েছিল।

আম্পায়ারদের দাবি রিভিউ চাইতে দেরি করেছে লঙ্কানরা। তাই এলবি হয়েও বিতর্কিতভাবে বেঁচে যান আমলা। নিয়ম অনুযায়ী বল ‘ডেড’ হওয়ার ১৫ সেকেন্ডের মধ্যে রিভিউ চাইতে জবে। ব্রডকাস্টার সূত্রের বরাত দিয়ে টিভি ধারাভাষ্যকাররা জানিয়েছেন ১৩ সেকেন্ডের মাথায় আবেদন করেছে শ্রীলঙ্কা। কিন্তু আম্পায়ারের ভুলের কারণে আমলা আউট হয়েও বেঁচে গেলেন।

প্রোটিয়াদের ‘অল্প’তে গুটিয়ে দেওয়ার পর দলীয় ১৯ রানে ওপেনার লাহিরু থিরিমান্নেকে হারায় শ্রীলঙ্কা। যদিও শেষ বিকেলের বাকিটা সময় নির্বিঘ্নে কাটিয়ে দেন করুনারত্নে (২৮*) ও ওশাদা (১৭*)।