যৌন উত্তেজক পান করিয়ে ধর্ষণ, অপমানে কিশোরীর আত্মহত্যা

যৌন উত্তেজক পান করিয়ে গাড়ির ভেতরেই কিশোরীকে দুই দফা ধর্ষণ করে এক উবার চালক। আর সেই লজ্জা সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যা করেন ১৭ বছর বয়সী ওই কিশোরী। তবে উবার চালককে গ্রেফতারের পরই ধর্ষণের বিষয়টি প্রকাশ পায়। ঘটনাটি ঘটেছে চট্টগ্রামে।

পুলিশ জানিয়েছে, গত ২৪ এপ্রিল ওই কিশোরী আত্মহত্যার পর ঘটনার অনুসন্ধান করতে গিয়ে শনিবার মধ্যরাতে নগরীর পাঠানটুলী এলাকা থেকে বাদশা নামে ওই উবার চালককে গ্রেফতার করা হয়।

গতকাল রোববার সন্ধ্যায় মেট্রোপলিটন ম্যাজিষ্ট্রেট মোহাম্মদ সফি উদ্দিনের আদালতে বাদশাকে হাজির করা হলে সে ১৬৪ ধারায় ধর্ষণের ঘটনার জবানবন্দি দেয়।

চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের ডবলমুরিং জোনের সিনিয়র সহকারী কমিশনার আশিকুর রহমান জানান, গত ২৪ এপ্রিল সকালে ডবলমুরিং থানা এলাকার মোগলটুলির বাসায় ফ্যানের সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেন এক কিশোরী। পরে পুলিশ গিয়ে তার ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে।

তিনি বলেন, কিশোরীর বোন ডবলমুরিং থানায় আত্মহত্যায় প্ররোচণার একটি মামলা দায়ের করেন। মেয়েটিকে বাদশা নিয়মিত উত্যক্ত করতো বলে ওই মামলায় অভিযোগ করা হয়।

মামলায় আরো বলা হয়, ক্রমাগত যৌন নিপীড়ন সহ্য করতে না পেরে তার বোন আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছে।

পুলিশ জানায়, যৌন হয়রানির মামলা তদন্ত করতে গিয়ে ধর্ষণের বিষয়টি প্রকাশ পায়। কিন্তু মৃত্যুর আগে স্বজনদের কাছে ধর্ষণের বিষয়ে কিছু বলেননি মেয়েটি। অভিযুক্ত বাদশাকে গ্রেফতারের পর পুরো বিষয়টি প্রকাশ হয়।

জিজ্ঞাসাবাদে বাদশা জানিয়েছে, ওই কিশোরী ও বাদশা এক সময় একই প্রতিষ্ঠানে চাকুরি করতো। কিন্তু বাদশা প্রায়ই ওই কিশোরীকে উত্যক্ত করতো। বাদশা পোশাক কারখানা থেকে চাকরি ছেড়ে দিয়ে উবার সার্ভিসের প্রাইভেট কার চালানো শুরু করে।

গত ২৩ এপ্রিল সন্ধ্যায় পোশাক কারখানায় ছুটির পর বাদশা ওই কিশোরীকে প্রাইভেট কারে তুলে নেয়। প্রথমে আগ্রাবাদ বারিক বিল্ডিং এলাকায় একটি রেস্টুরেন্টে গিয়ে যৌন উত্তেজক পানীয় পান করে।

এর পর মেয়েটিকে নিয়ে প্রাইভেট কারে করে আগ্রাবাদ জাম্বুরি মাঠের পাশে অন্ধকার একটি নির্জন স্থানে যায়। সেখানে গাড়ির ভেতরে ওই কিশোরীকে দুই দফা ধর্ষণ করে। দ্বিতীয়বার ধর্ষণের সময় মেয়েটি অজ্ঞান হয়ে যায়।

পুলিশ আরো জানায়, পরে বাদশা ও তার মা মিলে মেয়েটিকে আগ্রাবাদ মা ও শিশু হাসপাতালে নিয়ে যায়। হাসপাতালে চিকিৎসক মেয়েটির শরীর দুর্বল উল্লেখ করে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেয়।

এর পর বাদশা ও তার মা মেয়েটিকে নিজেদের বাসায় নিয়ে যায়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে রাত দেড়টার দিকে তাকে আবারও হাসপাতালে ভর্তি করে বাদশা পালিয়ে যায়।

খবর পেয়ে কিশোরীর ভগ্নিপতি হাসপাতাল থেকে তাকে বাসায় নিয়ে যান। পর দিন সকালে বোন চাকরিতে চলে যাবার পর বাসায় একা থাকার সুবাদে কিশোরী আত্মহত্যা করেন।

ডবলমুরিং থানার পুলিশ আরো জানিয়েছে, জবানবন্দি গ্রহণের পর বাদশাকে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত। অন্যদিকে, বাদশার বাসা থেকে কিশোরীর ব্যাগ, মোবাইল ও আইডি কার্ড উদ্ধার করা হয়েছে।