আপনি পড়ছেন

চলছে রহমতের মাস। সারাদিন রোজা শেষে বিকেলের ইফতার পর্ব চারিদিকে জান্নাতি পরিবেশ তৈরি করে। কোরআন তেলাওয়াত ও ইসলামি আলোচনার ফাঁকে চলে ইফতারের আয়োজন। সাধ্যের মধ্যে সেরা ইফতার সবার চাওয়া থাকে। মৌসুমি ফল ইফতারের প্রধান চাহিদা।

o businessman think a little

মৌসুমি ফলের আশ্চর্য ক্ষমতা হল, যে মৌসুমে যে রোগের সম্ভাবনা রয়েছে, ওই মৌসুমের ফলগুলো তার প্রতিষেধক। সহজ কথায় কেউ যদি মৌসুমি ফল নিয়মিত খায়, তার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি থাকে। 

ইফতার ও সাহারিতে ফলের চাহিদা বিশ্বজুড়েই রয়েছে। খোদার অপার দান এ ফলের জন্য শোকরিয়া আদায় করা চাই। মুখে আলহাদুলিল্লাহ বলার পাশাপাশি এক কেজি ফল ক্ষুধার্ত প্রতিবেশীর কাছে পৌঁছে দিতে হবে। একটি আম দু’টি কলা রাাস্তায় পড়ে থাকা বনি আদমের হাতে তুলে দিতে হবে। তবেই খুশি হবেন আল্লাহ তায়ালা।

ফল বেহেশতি খাবার। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা জান্নাতের বর্ণনা দিতে গিয়ে অসংখ্যবার ফলের কথা বলেছেন। আফসোস! রোগ প্রতিশেধক সেই ফল একদল অসাধু ব্যবসায়ীদের কারণে রোগের মাধ্যম হয়ে দাঁড়িয়েছে। যে ফল আমরা সুস্থ থাকার জন্য খেয়ে থাকি সে ফলই আমাদের অসুস্থ্যতার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে আজকাল। ফল নয় যেনো বিষ কিনে খাচ্ছি আমরা।

বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা বলছেন, ফল সংরক্ষণ ও পাকানোর জন্য যে সব বিষাক্ত ক্যামিকেল ব্যবহার করা হয় তা মানব সাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। এসব ক্যামিকেলের প্রভাবে ক্যান্সার, হার্ট এটাকসহ নানা ধরনের জটিল ও কঠিন রোগ হতে পারে।

পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, ‘আহাল্লাহুল বায়আ ওয়া হাররামার রিবা।’ অর্থাৎ- ‘আল্লাহ ব্যবসাকে হালাল করেছেন আর সুদকে করেছেন হারাম।’

হালাল ব্যবসার নামে মানুষকে বিষ খাওয়ানো কোনভাবেই জায়েজ হতে পারে না। এটা সুস্পষ্ট প্রতারণা। মানুষকে ধোঁকা দেওয়া আর আল্লাহকে ধোঁকা দেওয়ার একই কথা। আল্লাহ বলেন, ‘ইউখাদিয়ু নাল্লাহা ওয়াল্লাযিনা আমানু’ অর্থাৎ- ‘তারা আল্লাহ এবং বিশ্বাসীদের ধোঁকা দিচ্ছে।’

যারা ধোঁকা ও প্রতারণা করে মানুষ ঠকায়, তারা রাসুল (সা) এর উম্মতের অন্তুর্ভূক্ত নয়। হযরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, যে প্রতারণা করে সে আমার উম্মত নয়।’ অন্য বর্ণনায় এসেছে, ‘যে আমাদের সঙ্গে প্রতরণা করে সে আমাদের দলভুক্ত নয়।’ (মিশকাত শরিফ।)

ব্যবাসায়ীদের বিবেকের কাছে প্রশ্ন রাখতে চাই- যে বিষ মাখানো ফল সাধারণ মানুষকে খাওয়াচ্ছেন সে ফল কি আপনার সন্তানকে খাওয়াতে পারবেন? আপনি নিজে খেতে পারবেন? যদি না পারেন তাহলে কেন তা আমাদের এবং আমাদের সন্তানদের খাওয়াচ্ছেন?

রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘মুমিন তো সে যে নিজের জন্য যা পছন্দ করে তা তার ভাইয়ের জন্যও পছন্দ করবে।’ (মুসলিম।)

এ হাদিসের আলোকে প্রতিটি ব্যবসায়ী নিজেকে প্রশ্ন করা উচিত, তিনি কেমন মুমিন? একজন মুমিন কখনোই মুনাফার লোভে মানুষকে বিষ খাওয়াতে পারে না। আল্লাহ তায়ালা আমাদের সবাইকে সহি বুঝ দান করুন। আমিন।

গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...

খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর