গত এক বছরে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট থেকে কী প্রাপ্তি?

বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ এর সফল উৎক্ষেপণের এক বছর পূর্ণ হয়েছে সোমবার। যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার কেপ ক্যানাভেরাল থেকে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ উৎক্ষেপণ করা হয় গত বছরের ১২ মে। বাংলাদেশের প্রথম স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের পর প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছিলো এর মাধ্যমে সারা দেশে ই-লার্নিং, ই-এডুকেশন এবং টেলি-মেডিসিনসহ আরও অনেক সেবা দেয়া হবে। কিন্তু উৎক্ষেপণের এক বছর পরও পূরণ হয়নি প্রতিশ্রুতি।

বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ উৎক্ষেপণ করা হয়েছিলো দেশের দুর্গম অঞ্চলগুলোতে নিরবচ্ছিন্ন সম্প্রচার সেবা নিশ্চিত ও টেলিযোগযোগ স্থাপন করতে। যেনো প্রাকৃতিক দুর্যোগে ফাইবার অপটিক নেটওয়ার্ক বা ট্রান্সমিশন টাওয়ার ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পরেও যোগাযোগ ব্যবস্থা ব্যাহত না হয়। এছাড়া এই স্যাটেলাইটের আওতায় দেশের সরকারি ও বেসরকারি টেলিভিশন স্টেশনগুলোও আনার পরিকল্পনা ছিল।

কিন্তু স্যাটেলাইট নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষ বলছে, স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের এক বছর পূর্ণ হলেও এ থেকে এখন পর্যন্ত কোন ধরনের আয় করা সম্ভব হয়নি। নিশ্চিত করা যায়নি শহরের মত দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলোতে ই-লার্নিং, ই-এডুকেশন এবং স্যাটেলাইটের মাধ্যমে চিকিৎসা সেবা দেয়া। চালু করা হয়নি বাণিজ্যিকভাবে ডিটিএইচ (ডিরেক্ট টু হোম) সুবিধা, যেখানে ১২৫টি চ্যানেল সরাসরি স্যাটেলাইট থেকে সিগন্যাল নিয়ে সম্প্রচারের কথা ছিল।

স্যাটেলাইটটির মালিকানা প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ কমিউনিকেশন স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটেড বিসিএসসিএল বলছে, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ ব্যবহার করে এখন পর্যন্ত বিটিভি ও কয়েকটি বেসরকারি চ্যানেলের কিছু অনুষ্ঠানের এবং গত বছরের সেপ্টেম্বরে অনুষ্ঠিত সাফ ফুটবল গেমসের পরীক্ষামূলক সম্প্রচার করা হয়। স্যাটেলাইটটি উৎক্ষেপনের পর দেয়া প্রতিশ্রুতিগুলো কবে নাগাদ পাওয়া যাবে তা পরিষ্কারভাবে বলতে পারেননি কর্মকর্তারা।

বিসিএসসিএল এর চেয়ারম্যান শাহজাহান মাহমুদ বলেন, বিশ্বের অনেক দেশই এখন স্যাটেলাইট তুলছে। একইসঙ্গে সরবরাহ বেড়েছে অনেক। তাই বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট উৎক্ষেপনের সময় ব্যান্ডউইথের যে দাম ছিল, তা এখন আর নেই। সে কারণে ৫-৭ বছরের মধ্যে স্যাটেলাইটের নির্মাণ ও উৎক্ষেপণ ব্যয় তোলার কথা থাকলেও সেটা এখন আর সম্ভব হচ্ছে না।

ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তফা জব্বার বলেন, এই স্যাটেলাইট থেকে অবশ্যই আয় করা যাবে। তবে এর জন্য একটু সময় লাগতে পারে। স্যাটেলাইট ব্যবহার করে অতি দ্রুত সম্প্রচার ও সেবা প্রদান শুরু করা হবে। এখান থেকে বর্তমানে কোন প্রকার আয় না থাকলেও, মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ার আগেই এর নির্মাণ ও উৎক্ষেপণ ব্যয় তুলে ফেলা যাবে এবং সঙ্গে মুনাফাও আসবে বলে আশাবাদী তিনি।