আহতদের দেখতে গিয়ে তোপের মুখে শোভন–রাব্বানী

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণাকে কেন্দ্র করে পদবঞ্চিতদের ওপর হামলা করে পদপ্রাপ্ত নেতাকর্মীরা। এ ঘটনায় সংগঠনের নেতাকর্মীদের মধ্যে তীব্র অসন্তোষ বিরাজ করছে। তার প্রমাণও মিললো। ওই হামলায় আহতদের দেখতে গিয়ে ছাত্রলীগের সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী তোপের মুখে পড়েছেন।

সোমবার সন্ধ্যায় ছাত্রলীগের পদবঞ্চিতরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে সংবাদ সম্মেলন শেষে মিছিল বের করেন। এ সময় পদপ্রাপ্ত গ্রুপের নেতাকর্মীরা হামলা চালালে ডাকসুর তিন নেতা ও নারী নেত্রীসহ অন্তত ১০-১২ জন আহত হন। পরে তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে রাত পৌনে ১১টায় দেখতে যান শোভন ও রাব্বানী।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রাতেই আহতদের দেখতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে যান ছাত্রলীগ সভাপতি শোভন ও সাধারণ সম্পাদক রাব্বানী। এ সময় আহতদের সঙ্গে থাকা পদবঞ্চিত শতাধিক নেতাকর্মী তাদের ভেতরে ঢুকতে বাধা দেন ৷ পরে উভয় পক্ষের নেতাকর্মীদের পাল্টাপাল্টি স্লোগানে সেখানে উত্তেজনা দেখা দেয়।

পদবঞ্চিতদের স্লোগানের মধ্যে ছিল ‘বোনদের ওপর হামলা কেন, বিচার চাই বিচার চাই’, ‘বিবাহিতরা কমিটিতে কেন, মানি না মানব না’, ‘রাজাকারপুত্র কমিটিতে কেন, মানি না মানব না’, ‘সন্ত্রাসীদের কালো হাত, ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও’ ইত্যাদি। অন্যদিকে শোভন ও রাব্বানীর সমর্থকদের মুখে ছিল ‘বিদ্রোহীদের কালো হাত, ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও’।

এর মধ্যেই শোভন-রাব্বানীর উদ্দেশে রোকেয়া হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ও ডাকসুর কমনরুম ও ক্যাফেটেরিয়া সম্পাদক লিপি আক্তার বলতে থাকেন, ‘রাজাকার পুত্র, বিবাহিত, অছাত্ররা কমিটিতে পদ পেলো, কিন্তু আমাদের মতো ত্যাগীদের অবমূল্যায়ন করলেন কেন?’

এর জবাবে রাব্বানী বলেন, ‘সামনে তোমাদের মূল্যায়ন করা হবে।’

একই ধরনের প্রশ্ন তোলেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আল আমিন রহমান। কোন যোগ্যতার বিবেচনায় এ কমিটি দেয়া হয়েছে, জানতে চাইলে শোভন বলেন, ‘সবকিছু বিবেচনা করা হবে।’

এ সময় আরো বেশ কয়েকজন পদবঞ্চিত নেতা সোমবার বিকালে ঘোষিত ৩০১ সদস্যের ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। এতে শোভনের সঙ্গে সহ-সভাপতি করা হয়েছে ৬১ জনকে, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন ১১ জন, সাংগঠনিক সম্পাদক হয়েছে ১১ জন। সংগঠনটির জাতীয় সম্মেলনের এক বছরের মাথায় এ কমিটি পূর্ণাঙ্গ করা হলো।