মা-বোনদের ভেঙে যাওয়া রোজার কাজা আদায়ের নিয়ম
- Details
- by আল ফাতাহ মামুন
প্রাকৃতিক কারণে মা-বোনদের রোজা কাজা হয়ে যায়। তাছাড়া সন্তানসম্ভবা এবং সন্তানকে দুধ খাওয়াচ্ছেন এমন মায়ের জন্য রোজা কাজা করার অনুমতি শরিয়তে আছে। আসুন জেনে নিই ঋতুস্রাব-গর্ভধারণসহ অন্যান্য কারণে মা-বোনদের ভেঙে যাওয়া রোজার কাজা আদায়ের নিয়ম।
ঋতুস্রাবের কারণে কাজা রোজা :
ঋতুস্রাব থেকে পবিত্র হওয়ার পর রোজা ধারাবাহিকভাবে অথবা সুবিধামত সময়ে ভেঙ্গে ভেঙ্গে রাখা যাবে। রাসুল (সা.) বলছেন, ‘রমজানের কাজা রোজা বিরতিসহ রাখতে পার; ধারাবাহিকভাবেও রাখতে পার।’ কাজী সানাউল্লাহ, তাফসিরে মাজাহারি, ১ম খন্ড, ৩৬০ পৃষ্ঠা।
রমজানের রোজার কাজা তাৎক্ষনিকভাবে ওয়াজিব হয় না বরং সময়সাপেক্ষ ওয়াজিব হয়। হযরত আয়শা (রা.) বলেন, ‘রমজান মাসে আমার রোজা কাজা হত, রাসুল (সা.) এর উপস্থিতির কারণে শাবান পর্যন্ত তা কাজা করতে পারতাম না।’ সহি বুখারি, হাদিস নম্বর : ১৯৫০।
কাজা আদায়ে যদি এতটা বিলম্ব হয় যে, আরেক রমজান চলে এসেছে তবে রমজানের ফরজ রোজা রাখবে এবং পরে কাজা আদায় করে নেবে। এর জন্য ফিদইয়া কিংবা অন্য কিছুর প্রয়োজন নেই। সাইয়েদ সাবেক, ফিকহুস সুন্নাহ, ১ম খন্ড, ৩৮৬ পৃষ্ঠা।
গর্ভবতী ও সন্তানকে দুধ খাওয়ানোর কারণে কাজা রোজা:
গর্ভবতী এবং দুগ্ধদানকারীণী নারী সন্তানের ক্ষতির আশঙ্কায় ছেড়ে দেওয়া রোজার কাজা আদায়ের বিধান প্রসঙ্গে ইমাম জাসসাস ‘আহাকামুল কোরানে’ এবং সাইয়েদ সাবেক ‘ফিকহুস সুন্নায়’ সাহাবীদের ৩টি মত উল্লেখ করেছেন।
১. হযরত আলী (রা.) বলেন, উক্ত মহিলাকে শুধু কাজা আদায় করতে হবে, ফিদইয়া দিতে হবে না। এটি ইমাম আবু হানিফা এবং ইমাম মালেকের দুই মতের এক মত। ফতোয়ায়ে আলমগীরী, ২৭০ পৃষ্ঠা।
২. ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, এমন নারীদের জন্য রোজা নয় বরং কাফফারা আদায় করা ওয়াজিব। এটা ইবনে ওমরের দুই মতের এক মত। ইবনে কুদামা, আল মুগনী, তয় খন্ড, ৩৭ পৃষ্ঠা।
৩. ইবনে ওমর (রা.) বলেন, কাজা আদায় সঙ্গে ফিদয়া দেওয়াও ওয়াজিব। এটা ইমাম শাফেয়ী, আহমদ ইবনে হাম্বল এবং ইমাম মালেকের অপর মত। তবে গর্ভবতীর বেলায় ফিদইয়া না দিয়ে শুধু কাজা আদায়ের কথা বলেছে ইমাম মালেক (রহ.)। কাজী সানাউল্লাহ, তাফসীরে মাজাহারী, ১ম খন্ড, ৩৬১ পৃষ্ঠা।
এ ব্যাপারে সৌদিআরবের গ্রান্ড মুফতী শায়েখ আব্দুল্লাহ বিন বায (রহ.) বলেন, গর্ভবতী এবং দুগ্ধদানকারীণীর বিধান রোগীর বিধানের মতই। রোজা রাখতে সক্ষম হলে রোজা রাখবে, নতুবা ফিদইয়া দিবে। আব্দুল্লাহ বিন বায, মাজমূউল ফতোয়া, ১৫ খন্ড, ২২৫ পৃষ্ঠা।
গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...
খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর