কবুতর দিয়ে অভিনব কায়দায় ইয়াবা পাচার

বিভিন্ন সময় নানা অভিনব পদ্ধতি ব্যবহার করে ইয়াবা পাচার করে মাদকব্যবসায়ীরা। তবে এবার কবুতর ব্যবহার করে অভিনব কায়দায় মাদক ব্যবসায়ীরা ইয়াবা পাচার শুরু করেছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্সের মধ্যেই প্রশিক্ষিত কবুতর ব্যবহার করে নির্বিঘ্নে এসব ইয়াবা ট্যাবলেট এক স্থান থেকে অন্যস্থানে পৌঁছে দেয়ার কাজটি করছে ব্যবসায়ীরা।

অনুসন্ধানে দেখা যায়, প্রথমে মাদক কারবারিরা কবুতরকে প্রশিক্ষণ দেয়। পরবর্তীতে ওই প্রশিক্ষিত কবুতরের পিঠে বা পায়ে ইয়াবার পুটলি বেঁধে কক্সবাজারের বিভিন্ন স্থান থেকে উড়িয়ে দেয়া হয়। পরে এসব কবুতরের ঢাকায় পৌঁছাতে তিন থেকে চার দিন সময় লাগে। পাচারে জড়িত একজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানায়, একেকটি কবুতর ২৫০ থেকে ৫০০টি ইয়াবা ট্যাবলেট বহন করতে পারে।

জানা যায়, এসব ইয়াবা মূলত মিয়ানমার থেকে কক্সবাজারে আসে। পরে সেগুলো সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে। তবে সমসাময়িক সময়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কড়া নজরদারির কারণে এই অভিনব পদ্ধতি অবলম্বন করেছে ইয়াবা ব্যবসায়ীরা। শুধু ঢাকায় নয়, অনুসন্ধানে দেখা গেছে- কক্সবাজার থেকে এসব ইয়াবা প্রশিক্ষিত কবুতরের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন বিভাগীয় শহরে পাঠানো হয়। পরে সেগুলো জেলা শহরে সরবারহ করা হয়।

অনুসন্ধান বলছে, ইয়াবা পাচারে গিরিবাজ নামে এক জাতের কবুতর ব্যবহার করা হয়। দীর্ঘদিন প্রশিক্ষণের মাধ্যমে এই পাখিকে রেসার কবুতরে রূপ দেয়া হয়। থাইল্যান্ড ও পাকিস্তানের হুমা জাতের কবুতর এ কাজে ব্যবহার করা হয়। মাত্র ছয় মাস প্রশিক্ষণে এসব কবুতর এক থেকে দেড়শো কিলোমিটার দূর থেকে লক্ষ্যে পৌঁছাতে সক্ষম হয়। তবে দূরত্ব বেশি হলে প্রশিক্ষণের সময় বেশি প্রয়োজন হয়।

তথ্য বলছে, দেশে মাদকাসক্তদের মধ্যে ৭০ শতাংশই ইয়াবা সেবন করে। বিষয়টি নজরে আসলে সাড়াশি অভিযানে নামে পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বেশ কয়েকটি সংস্থা। এই অভিযানে ইতোমধ্যেই তিন শতাধিক মাদক কারবারি নিহত হয়েছে। তবে এত এত প্রাণহানির পরেও ইয়াবা কারবারিদের সংখ্যা সহনীয় পর্যায়ে নিয়ে আসা সম্ভব হয়নি। কিন্তু এত সব নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করার পরেও মাদক কারবারিরা তাদের ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন নতুন নতুন অভিনব কায়দায়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর পুলিশের গণমাধ্যম শাখার সহকারী মহাপরিদর্শক সোহেল রানা বলেন, বিষয়টি আমাদের নজরে আছে। তবে কবুতরের মাধ্যমে ইয়াবা পাচারের অভিজ্ঞতাটি আমদের কাছে একেবারেই নতুন। তবে এ ঘটনা নিয়ে আমরা কাজ করছি। আশা করছি খুব শীঘ্রই এসব অপরাধিদের আইনের আওতায় নিয়ে আসতে পারবো।