আপনি পড়ছেন

‘ঈদুল ফিতর’ শব্দ দুটি আরবি, যার অর্থ হচ্ছে উৎসব, আনন্দ, খুশি, রোজা ভেঙ্গে ফেলা ইত্যাদি। দীর্ঘ এক মাস সিয়াম সাধনা ও ইবাদত-বন্দেগীর পর বিশ্ব মুসলিম উম্মাহ শাওয়াল মাসের চাঁদের আগমনে রোজা ভেঙ্গে আল্লাহর বিশেষ শোকরিয়াস্বরূপ যে আনন্দ-উৎসব পালন করেন- শরিয়তের পরিভাষায় তাই ঈদুল ফিতর। তাহলে চলুন জেনে নিই, এই ঈদের দিন যে ৬টি কাজ করতেন নবীজি (সা.)।

eid ul fitr 2019

১. তাকবীর পাঠ করা: রামাযান মাসের শেষ দিন সূর্যাস্তের পর অর্থাৎ ঈদের রাত্রি থেকে শুরু করে ঈদের ছালাত আদায় পর্যন্ত তাকবীর পাঠ করা। তাকবীরের শব্দসমূহ হচ্ছে, আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকাবার লাইলাহা ইল্লাল্লাহু আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার ওয়ালিল্লাহিল হামদ। পুরুষের জন্য উচ্চঃস্বরে তাকবীর বলা সুন্নাত। মহিলারা নিঃশব্দে তাকবীর বলবেন। মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা ২য় খন্ড, পৃ. ১৬৫।

২. খেজুর খাওয়া: নামাজের জন্য ঈদগাহের দিকে রওয়ানা হওয়ার পূর্বে ৩টি, ৫টি এরকম বেজোড় সংখ্যক খেজুর খাওয়া সুন্নাত। হজরত আনাস ইবনে মালেক (রা.) বর্ণনা করেন, প্রিয় নবী (সা.) ঈদুল ফিতরের দিন সকালে বেজোড় সংখ্যক খেজুর খেতেন। আদ-দুরূসুর রামাদানিয়াহ, পৃ. ১৮৫।

৩. সাজগোজ করা: পুরুষের জন্য সুন্নাত হলো গোসল করে, সুন্দর পোশাক পরিধান করে, সুগন্ধি মেখে, সুসজ্জিত হয়ে ঈদগাহ অভিমুখে রওয়ানা হওয়া। মহিলারা নিজেদের মহলে সুসজ্জিত হয়ে, সুগন্ধি মেখে আনন্দ-উৎসব করবেন। সৌন্দর্য প্রদর্শণীর জন্য হওয়া হারাম। বরং তারা পর্দা করে বের হবেন। এ সম্পর্কে রাসুল (সা.) বলেন ‘কারো যদি নিজেকে ঢাকার চাদর না থাকে তার অন্য বোন যেন তাকে নিজের অতিরিক্ত চাদরটি দেয়’। মুখতার লিল হাদিস, পৃ. ৪৪১।

৪. ঈদগাহে গমন: ঈদের মাঠে পায়ে হেঁটে যাওয়া এবং ভিন্ন পথে ফিরে আসা সুন্নাত। হজরত জাবির (রা.) বর্ণনা করেন, মহানবী (সা.) ঈদের দিন এক পথে ঈদগাহে যেতেন, অন্য পথে বাড়ি ফিরতেন। ফিতনার আশঙ্কা না থাকলে মা-বোনদেরও ঈদগাহে যাওয়া উত্তম। ফিকহে মানহাজী, ১ম খন্ড, পৃ. ২২৮।

৫. সদকাতুল ফিতর আদায়: ঈদুল ফিতরের দিনে অন্যতম প্রধান করণীয় হচ্ছে, ফিতরা প্রদান করা। নর-নারী, ছোট-বড়, স্বাধীন-গোলাম সকলের ওপর ফিতরা আদায় করা ওয়াজিব। বুখারি ও মুসলিম।

৬. ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করা: এ দিন মেহমানদারী করা, দান সদাকা করা। সবার সাথে হাসিমুখে কথা বলা উত্তম। হজরত যুবায়ের ইবনে নুফায়র হতে বর্ণিত রাসুল (সা.) এর সাহাবীগণ যখন ঈদের দিনে দেখা করতেন তখন একে অপরকে বলতেন, ‘তাকাব্বাল্লাহু মিন্না ওয়া মিনকা।’ ফাতহুল বারী ২ য় খন্ড, পৃ. ৪৪৬।

পরিশেষে আমরা বলতে পারি, প্রত্যেক মুসলিমকে ঈদুল ফিতরের এই দিনটির মত বছরের প্রতিটি দিন নেক আমল এবং হাশি-খুশির মাধ্যমে অতিবাহিত করার চেষ্টা করা উচিত। আল্লাহ আমাদের সকলকে ঈদুল ফিতরের গুরুত্ব, তাৎপর্য, শিক্ষা অনুধাবন করে সে মোতাবেক আমল করার তাওফিক দান করুন।

গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...

খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর