ভাগ্যিস ‘হোয়াইটওয়াশ’ হয়েছিল পাকিস্তান

গত মার্চে সংযুক্ত আরব আমিরাতে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে পাঁচ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হয়েছিল পাকিস্তান। বিশ্বকাপকে সামনে রেখে দলের সেরা পাঁচ ক্রিকেটারকে বিশ্রাম দিয়েছিল বলে সেটা নিয়ে খুব বেশি কথা উঠেনি। কিন্তু পূর্ণ শক্তির দল নিয়ে বিশ্বকাপের ঠিক আগ মুহূর্তে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে নাকানি-চুবানি কিছুতেই মানতে পারছিল না পাকিস্তানি সমর্থকরা।

বিশ্বকাপের প্রস্তুতি হিসেবে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে পাঁচ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ খেলতে গিয়েছিল পাকিস্তান। কিন্তু পুরো সিরিজে পাত্তাই পায়নি সরফরাজ আহমেদের দল। দলের ব্যাটসম্যানরা তাও একটু দাঁড়াতে পেরেছিলেন কিন্তু বোলাররা একেবারেই না।

সিনিয়রদের বাইরে রেখে মোহাম্মদ হাসনাইন, শাহিদ শাহ আফ্রিদি, ফাহিম আশরাফদের খেলিয়েছে পাকিস্তান। কিন্তু সম্ভাবনাময় তরুণরা আন্তর্জাতিক ম্যাচের চাপে পুরা চ্যাপ্টা হয়ে পড়েছিলেন। পাকিস্তানি পেস আক্রমণের কঙ্কাল বেরিয়ে পড়েছিল ওই সিরিজে। পাঁচ ম্যাচের মধ্যে একটি বৃষ্টিতে ভেসে যায়। অন্য চারটিতে বাজেভাবে হারে পাকিস্তান। মোহাম্মদ আমিরকে নেওয়ার দাবি জোরালো হয় সেই কারণেই।

বিশ্বকাপের আগের সময়টা মোটেও ভালো কাটছিল না আমিরের। না উইকেট পাচ্ছিলেন, না রান চেক দিতে পারছিলেন। পাকিস্তান দল থেকে বাদ পড়েছিলেন সেই এশিয়া কাপের পরই। তারপরে অবশ্য দলে ফিরেছিলেন। তবে বিশ্বকাপ দলে আমিরকে রাখেনি পাকিস্তানি নির্বচকরা।

ইংল্যান্ড সিরিজের দলে রাখলেও জলবসন্তে আক্রান্ত হলে খেলা হয়ে উঠেনি। বলা হচ্ছিল, ইংল্যান্ড সিরিজে ভালো করলে বিশ্বকাপ দলে বিবেচনা করা হতে পারে আমিরকে। কিন্তু অসুস্থতার কারণে খেলতেই পারলেন না তারকা পেসার। তারপরও তাকে বিশ্বকাপ দলে ফেরায় পাকিস্তান।

কারণ ইংল্যান্ড সিরিজে তরুণ পেসারদের ভয়াবহ পারফরম্যান্স। সাথে সমালোচকদের ভয়ও ছিল। আমিরের সঙ্গে আরেক অভিজ্ঞ পেসার ওয়াহাব রিয়াজকে ধরে নিয়ে আসে পাকিস্তান। যিনি কিনা বিশ্বকাপের প্রাথমিক দলেও ছিলেন না! দুই বছর ধরে দলের বাইরে ছিলেন ওয়াহাব!

এখন মনে হচ্ছে ভাগ্যিস এই দুজনকে দলে টেনেছিল পাকিস্তান। কী দুর্দান্ত বোলিংটাই না করছেন আমির। চলতি বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত নিঃসন্দেহে আমিরই পাকিস্তানের সেরা পারফরমার। আজ একাই কাঁপিয়ে দিলেন অস্ট্রেলিয়াকে। দশ ওভার বোলিং করে মাত্র ৩০ রান খরচায় পাঁচ উইকেট তুলে নিয়েছেন তারকা পেসার। সব মিলিয়ে তিন ম্যাচে আমিরের উইকেট ১০টি। এখন পর্যন্ত চলতি বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ উইকেটশিকারী তিনি।

ওয়াহাব রিয়াজ বেশি উইকেট পাননি, তিন ম্যাচে চারটি। তবে তার গতিতে কাঁপছে প্রতিপক্ষরা। কদিন আগে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে দুর্দান্ত যে জয়টা পেল পাকিস্তান তাতে বড় অবদান ওয়াহাবের। তিনটি উইকেট নিয়েছিলেন তিনি। পাকিস্তানি সমর্থকরা অবশ্যই চাইবেন এভাবে খেলে যাক আমির-ওয়াহাব।