বাংলাদেশের ইতিহাস গড়া জয়

জিততে হলে ইতিহাসই গড়তে হতো। টন্টনে আজ প্রথমে ব্যাটিং করতে নেমে ৩২১ রান তোলে উইন্ডিজ। বিশ্বকাপ ইতিহাসে অতীতে এতো রান তাড়া করে জিতেনি বাংলাদেশ। সাকিব আল হাসানের অসাধারণ এক সেঞ্চুরি ও লিটন কুমার দাস ও তামিম ইকবালের কার্যকারী দুটি হাফ সেঞ্চুরিতে আজ ইতিহাসই গড়ল বাংলাদেশ।

২০১৫ সালের বিশ্বকাপে স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে ৩১৮ রান তাড়া করে জিতেছিল বাংলাদেশ। বিশ্বকাপে সেটা ছিল বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রান তাড়া করে জয়ের রেকর্ড। সব দল মিলিয়ে হিসেবে করলে বাংলাদেশের ওই জয়টা বিশ্বকাপ ইতিহাসের দ্বিতীয় সেরা রান তাড়া করার রেকর্ড। আজ নিজেদের রেকর্ডটা কী দুর্দান্তভাবেই ভেঙে দিল বাংলাদেশ। ৫১ বল আর ৭ উইকেট হাতে রেখে উইন্ডিজের বিপক্ষে জয় নিশ্চিত করেছে মাশরাফি বিন মর্তুজা দল।

৩২১ রানের জবাব দিতে নেমে বাংলাদেশের শুরুটা বেশ আশানুরূপই হয়েছিল। সৌম্য সরকার শুরুতে দারুণ খেলেছেন। তামিম ইকবালও রানে ফিরেছেন। তবে অল্প সময়ের মধ্যে তামিম ও মুশফিকুর রহিম ফিরে গেলে ব্যাকফুটে পড়ে যায় বাংলাদেশ। ওদিকে চাপে পড়া বাংলাদেশের বিপক্ষে আরও চড়াও হচ্ছিলেন ক্যারিবীয়ান পেসাররা।

সেই অবস্থা থেকে একাই ম্যাচটা বাংলাদেশের মুঠোয় এনেছেন সাকিব। উইকেটে আসার পর থেকেই আক্রমণাত্মক খেলছিলেন। একটু সেট হওয়ার পর চলতি বিশ্বকাপে নিজের বিস্ফোরক ফর্ম দেখিয়েছেন দুর্দান্তভাবে। ক্যারিবীয়ান পেসারদের রীতিমতো শাসন করেছেন সাকিব।

ওদিকে লিটন কুমার দাস চারে নেমে দুর্দান্তভাবে বুঝিয়েছেন তাকে একাদশে নেওয়াতে কী উপকারটাই না হয়েছে! প্রথমে সাকিবকে সঙ্গ দিতে একটু রয়ে-সয়ে খেলেছেন। কিন্তু চাপমুক্ত হওয়ার পর স্ট্রোকের ফুলঝুড়ি ছুটিয়েছেন তরুণ ব্যাটসম্যান। দুজন এতোটাই আক্রমণাত্মক ছিলেন যে মাত্র ৪১.৩ ওভারেই ৩২১ রান পেরিয়ে যাওয়ার অবিশ্বাস্য কাজটা দুর্দান্তভাবে সারতে পেরেছে বাংলাদেশ।

সাকিব-লিটন মিলে চতুর্ত উইকেটে অপরাজিত ১৮৯ রানের জুটি গড়েছেন। বিশ্বকাপ ইতিহাসে বাংলাদেশের পক্ষে সর্বোচ্চ রানের জুটি এটা। বাংলাদেশের ঐতিহাসিক জয় যখন নিশ্চিত হলো সাকিব ৯৯ বল খেলে ১৬টি চারের সাহায্যে তখন ১২৪ রানে অপরাজিত। লিটন কুমার দাস আফসোস করবেন হয়তো! অল্পের জন্য যে সেঞ্চুরি হলো না লিটনের। চারে নামার লিটন শেষ পর্যন্ত অপরাজিত ছিলেন ৬৯ বলে ৯৪ রান করে। লিটনের ইনিংসে চারের মার ছিল ৮টি, ছক্কা ৪টি।