ভাইরাস এবার টিভিতেও!

ইন্টারনেট সংযোগ সুবিধাসম্পন্ন স্মার্ট টেলিভিশনগুলোতে আক্রমণ করতে পারে ভয়াবহ ভাইরাস। এমনকি টেলিভিশন সেটের সামনে বসে গুরুত্বপূর্ণ কথাবার্তা বললে, তা দূরে বসে অন্য কেউ শুনতেও পারে। সুতরাং এ ব্যাপারে ব্যবহারকারীকে সাবধান থাকতে হবে।

এসব স্মার্ট টিভির বিষয়ে দীর্ঘদিন থেকেই সতর্ক করে আসছে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতিষ্ঠান স্যামসাং। এবার স্মার্ট টেলিভিশনে ম্যালওয়্যার আক্রমণের বিষয়ে সতর্ক করেছে তারা।

বিবিসি অনলাইনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, স্যামসাং সাপোর্ট ইউএসএ টুইটার অ্যাকাউন্ট থেকে দক্ষিণ কোরিয়ার এই প্রতিষ্ঠানটি তাদের টিভিতে ভাইরাস দূর করতে নিয়মিত স্ক্যান করতে হবে বলে ইন্টারনেট সুবিধাসম্পন্ন কিউ এলইডি ব্র্যান্ডেড টিভির মালিকদের নিরাপত্তা বিষয়ক পরামর্শ দিয়েছে। কেমন করে টিভিতে স্ক্যান করতে হবে, সে বিষয়ক একটি ভিডিও পোস্ট করা হয় সেখানে।

এছাড়া স্মার্ট টেলিভিশনগুলোতে ক্ষতিকর ভাইরাস সফটওয়্যার আক্রমণ ঠেকাতে কয়েক সপ্তাহ পর পর এই স্ক্যান করার পরামর্শ দেওয়া হয়। এর পর থেকেই বেশ বিপত্তিতে পড়েছে প্রতিষ্ঠানটি।

বিবিসির পক্ষ থেকে স্যামসাংয়ের স্মার্ট টেলিভিশনগুলোতে ভাইরাস আক্রমণের ঝুঁকি রয়েছে কি না জানতে চাইলে স্যামসাং কর্তৃপক্ষ জানায়, গ্রাহকদের জন্য শিক্ষামূলক প্রচারের অংশ হিসেবেই, ১৯ সেকেন্ডের ওই ভিডিওটি পোস্ট করা হয়েছে। তবে এর পরপরই সেটি মুছে ফেলেন তারা। যদিও এর ভিতরেই ভিডিওটি দেখা হয় দুই লাখেরও বেশিবার।

সাম্প্রতিক সময়ে বাজারে আসা স্যামসাংয়ের টেলিভিশনগুলো তাদের নিজস্ব টাইজেন অপারেটিং সিস্টেমভিত্তিক। আর এসব অপারেটিং সিস্টেমের টেলিভিশনগুলোতে আগে থেকেই দেওয়া থাকে ম্যাকফি অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যার।

পেন টেস্ট পার্টনার্স নামের একটি প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তা পরামর্শক কেন মুনরো বলেন, স্যামসাংয়ের দেওয়া ওই পরামর্শের কোন ভিত্তি নেই। তাদের দেওয়া ভিডিও অনুসরণ করা মানে নিজের সময় নষ্ট করা। স্মার্ট টিভিগুলোতে আক্রমণ করতে পারে এই ধরনের ম্যালওয়্যারের সংখ্যা খুবই সীমিত। এখন পর্যন্ত তিনি টিভিতে র‍্যানস্যামওয়্যার আক্রমণের ঘটনা দেখেছেন মাত্র একটি। তবে বেশিরভাগ ব্যবহারকারীর ক্ষেত্রেই এই ধরণের ভাইরাস আক্রমণের ঘটনা ঘটার আশঙ্কা কম। এই সমস্যার সবচেয়ে ভালো সমাধান হচ্ছে স্যামসাং স্বয়ংক্রিয়ভাবে তাদের অপারেটিং সিস্টেম আপডেট করা।

সিকিউরিটি হেডারস নামের আরেকটি সাইবার নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠানের বিশেষজ্ঞ স্কট হেম বলেন, খুব কম ব্যবহারকারী স্যামসাংয়ের এই ধরণের নিরাপত্তা পরামর্শ শুনবে। এটির যদি খুব প্রয়োজন হয়, তাহলে স্যামসাং তা টিভির স্ক্রিনের ওপর দেখাতে পারে।

প্রসঙ্গত, এর আগে ২০১৫ সালে স্যামসাং স্মার্টটিভির নিরাপত্তার বিষয়ে প্রশ্ন তুলেছিলো। তখন প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে সতর্ক করা হয়েছিল যে, টেলিভিশন চালু থাকা অবস্থায় ব্যাক্তিগত গুরুত্বপূর্ণ কথা বললে তা দূরে বসে অন্য কেউ শুনতে পারে।