প্রাণের এমডির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা

নিম্নমানের পণ্য উৎপাদনের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় প্রাণের এমডি আহসান খান চৌধুরীর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন বিশুদ্ধ খাদ্য আদালত। রবিবার দুপুরে বিশেষ মহানগর হাকিম মেহেদী পাভেল সুইট এ পরোয়ানা জারি করেন। মামলার বাদী ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের নিরাপদ খাদ্য পরিদর্শক মো. কামরুল হাসান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

প্রাণের এমডি আহসান খান চৌধুরী।

কামরুল ইসলাম জানান, মামলার শুনানিতে পূর্বনির্ধারিত সময় অনুযায়ী প্রাণের এমডি উপস্থিত না থাকায় আদালত এ গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।

তিনি বলেন, হাইকোর্ট থেকে ৫২টি নিম্নমানের পণ্যের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনা পাওয়ার পরেও বাজার থেকে নিম্নমানের পণ্য অপসারণ না করায় ২২ মে প্রাণ কোম্পানির বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করা হয়। গত ১৮ জুন আরো ২১টি মানহীন পণ্যের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়। সবমিলিয়ে মোট ৭৩টি পণ্যের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলার শুনানি কার্যক্রম আদালতে চলমান আছে।

আজ মামলার শুনানির সময় এমডি আহসান খান উপস্থিত ছিলেন না। এ বিষয়ে তার আইনজীবী আদালতকে জানান, তিনি শারীরিকভাবে অসুস্থ। তাই আদালতে হাজির হতে পারেননি। তবে এ বক্তব্য আমলে না নিয়ে আহসান খান চৌধুরীর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত।

প্রসঙ্গত, উচ্চ আদালতের নির্দেশের পরও বাজার থেকে পণ্য সরিয়ে না নেওয়ায় গত ২২ মে প্রাণসহ মানহীন ৫২টি পণ্যের উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলা করে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ।

মানহীন ৫২টি পণ্যের মধ্যে আছে- প্রাণের হলুদ গুঁড়া, প্রাণের লাচ্ছা সেমাই, মোল্লা সল্টের আয়োডিন যুক্ত লবণ, প্রাণের কারি পাউডার, ড্যানিশের কারি পাউডার, গ্রিন ব্লিচিংয়ের সরিষার তেল, কাশেম ফুডের চিপস, শবনমের সরিষার তেল, সিটি ওয়েলের সরিষার তেল, আরা ফুডের ড্রিংকিং ওয়াটার, ফ্রেশের হলুদগুঁড়া, আল সাফির ড্রিংকিং ওয়াটার, বাংলাদেশ এডিবল ওয়েলের সরিষার তেল। মর্ণ ডিউয়ের ড্রিংকিং ওয়াটার, শান্ত ফুডের সফট ড্রিংক পাউডার, মধুবনের লাচ্ছা সেমাই, মিজানের ড্রিংকিং ওয়াটার, জাহাঙ্গীর ফুড সফট ড্রিংক পাউডার, ডুডলি নুডলস, এসিআইয়ের ধনিয়ার গুঁড়া, বনলতার ঘি, পিওর হাটহাজারী মরিচগুঁড়া, ড্যানিশের হলুদের গুঁড়া, মিস্টিমেলার লাচ্ছা সেমাই, মিঠাইয়ের লাচ্ছা সেমাই, ওয়েল ফুডের লাচ্ছা সেমাই।

কিংয়ের ময়দা, রূপসার দই, এসিআইয়ের আয়োডিনযুক্ত লবণ, মক্কার চানাচুর, বাঘাবাড়ীর স্পেশাল ঘি, নিশিতা ফুডসের সুজি, মেহেদীর বিস্কুট, মধুবনের লাচ্ছা সেমাই, মধুমতির আয়োডিনযুক্ত লবণ, সান ফুডের হলুদ গুঁড়া, মঞ্জিলের হলুদ গুঁড়া, গ্রিন লেনের মধু।

ডলফিনের হলুদের গুঁড়া, সূর্যের মরিচের গুঁড়া, কিরণের লাচ্ছা সেমাই, ডলফিনের মরিচের গুঁড়া, জেদ্দার লাচ্ছা সেমাই, দাদা সুপারের আয়োডিনযুক্ত লবণ, মদিনার আয়োডিনযু্ক্ত লবণ, অমৃতের লাচ্ছা সেমাই, নুরের আয়োডিনযুক্ত লবণ ডানকানের ন্যাচারাল মিনারেল ওয়াটার, আরার ডিউ ড্রিংকিং ওয়াটার, দীঘির ড্রিংকিং ওয়াটার।

বিশুদ্ধ খাদ্য আদালতে করা মামলায় ২১টি পণ্যের মধ্যে রয়েছে- বিসমিল্লা সল্টের আয়োডিনযুক্ত লবণ ‘উট’, কনফিডেন্ট সল্টের আয়োডিনযুক্ত লবণ ‘কনফিডেন্স’, জনতা সল্টের আয়োডিনযুক্ত লবণ ‘নজরুল’, এসএ সল্টের আয়োডিনযুক্ত লবণ ‘মুসকান’, জেকে ফুডের লাচ্ছা সেমাই ‘মদিনা’, হাসেম ফুডের লাচ্ছা সেমাই ‘কুলসন’, জে কেমিক্যাল ওয়ার্কসের ঘি ‘এ-৭’, প্রাণ ডেইরির ঘি ‘প্রাণ প্রিমিয়াম’, ফেমাস ফুড অ্যান্ড বেভারেজের ঘি ‘ফেমাস’, ফস্টার ক্লার্কের সফট ড্রিংক পাউডার ‘ফস্টার ক্লার্ক’, এগ্রো অর্গানিকের ঘি ‘খুশবু’, কুইন কাউ ফুডের বাটার অয়েল ‘গ্রিন মাউন্টেন’, স্কয়ার ফুড অ্যান্ড বেভারেজের জিরা ও ধনিয়ার গুঁড়া ‘রাধুনী’, থ্রি স্টার ফ্লাওয়ার মিলের ধনিয়া ও হলুদের গুঁড়া ‘থ্রি স্টার’, এসএ সল্টের আয়োডিন যুক্ত লবণ ‘প্রাণ’, সামগ্রী কনজুমারসের কারি পাউডার ও জিরার গুঁড়া ‘সামগ্রী’, এসবি এন্টারপ্রাইজের ঘি ‘এসবি’, খাজা তৈয়ারিয়ার ফ্লাওয়ার মিলের ধনিয়ার গুঁড়া ‘ফাস্টার ক্লার্ক।