আপনি পড়ছেন

মুমিনের দিলের দুয়ারে কড়া নাড়ছে হজ। ইসলামের পাঁচ স্তম্ভের একটি হজ। তবে সব মুসলমানের ওপর হজ ফরজ নয়। হজ কার ওপর ফরজ এ সম্পর্কে পবিত্র কোরআনে আল্লাহ বলেন- ‘ওয়ালিল্লাহি আলান্নাসি হিজ্জুল বাইতি মানিস তাতাআ ইলাইহি সাবিলা। ওয়া মান কাফারা ফাইন্নাল্লাহা গানিউন আনিল আলামিন। 

web hajj flight file photo dhaka tribune 1531155114415

অর্থ: ‘মানুষের মধ্য থেকে যাদের সামর্থ্য আছে, তাদের জন্য আল্লাহর ঘরে হজ করা তাদের প্রভুর অধিকার। আর যে আল্লাহর অবাধ্য হবে, হজ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে, তার জেনে রাখা উচিত, আল্লাহ তায়ালা বিশ্বের কোনো কিছুরই মুখাপেক্ষী নন।’ সূরা আলে ইমরান, আয়াত ৯৭।

এ আয়াতে স্পষ্ট বলা হয়েছে, হজ হল সামর্থ্যবান মানুষের জন্য তার প্রভুর অধিকার। সামর্থ্য বলতে বোঝায়- ব্যক্তির দৈনিন্দিন খরচ মিটিয়ে এমন অর্থ উদ্বৃত্ত থাকা যা দিয়ে সে হজের রাহা খরচ বহন করতে পারে। এটা হল আর্থিক সামর্থ্য। একইভাবে ব্যক্তিকে শারীরীকভাবেও সক্ষম হতে হবে। শারীরীক ও আর্থিক সামর্থ্য থাকলেই একজন মানুষের ওপর হজ ফরজ হয়। 

আল্লাহর শোকর, এ বছর হজে যাওয়ার জন্য যারা বাইতুল্লাহর মুসাফিরের খাতায় নাম লিখিয়েছেন, তাদের সব প্রস্তুতি এরই মধ্যে শেষ হয়েছে। ৪ জুলাই বাংলাদেরশের প্রান্ত হতে সোনার মক্কা-মদিনার উদ্দেশ্যে হজের প্রথম ফ্লাইটটি উড়াল দিয়েছে। আহা! কী সৌভাগ্য তাদের, যারা আল্লাহর ঘরের মেহমান হতে পেরেছেন। কী খোশ নসীব তাদের, যারা স্বয়ং নবীর দেশের মুসাফির হিসেবে ঘর থেকে বের হয়েছেন।

হাজীদের চোখে-মুখে এখন একটিই স্বপ্ন। একটিই আশা। কখন পাবো মদিনার দেখা। কখন মক্কার অলিগলিতে হেঁটে বেড়াবো। কোরআনে শহরে বসে দু’দন্ড জিরিয়ে নেবো তৃষ্ণার্ত হৃদয়কে। বাইতুল্লাহর ছায়ায় নিজেকে মেলে ধরব কখন। এমন হাজারো সুন্দর স্বপ্ন আর কল্পনা ভেসে ওঠছে হাজীদের মনের আয়নায়।

আমরা আল্লাহর কাছে দোয়া করি, পৃথিবীর যে প্রান্ত থেকেই কাবাপ্রেমিক, নবীপ্রেমিক আল্লাহর বান্দারা বাইতুল্লাহর মুসাফির হয়েছেন, আল্লাহ যেন তাদের এ পবিত্র সফরকে কষ্ট মুক্ত, হয়রানি মুক্ত করে দেন।

এমনিতেই হজ একটি পরিশ্রমসাধ্য সফর। এর ওপর যদি পথের কষ্ট যোগ হয়, তবে তো দুর্ভাগ্যের শেষ নেই। বিশ্বের অন্য সব দেশের হাজীদের তুলনায় বাংলাদেশের হাজীদের ভাগ্য-নসীব তেমন একটা ভালো নয়। দিন যতই বাড়ছে, হজ প্রক্রিয়া সহজ থেকে আরো সহজ হচ্ছে। পথের কষ্ট, হয়রানি দিন দিন কমে আসছে। শুধু আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশের হাজীদের কষ্টই কেন যেন দিন দিন বেড়ে যাচ্ছে।

প্রতি বছরই একটা না একটা বিপর্যয় ঘটছেই। কখনো ফ্লাইট বিপর্যয়। কখনো ভিসা জটিলতা। আবার কখনো এজেন্সির সমস্যা। এক কথায় ঝামেলামুক্ত সুন্দর হজ এ দেশের মানুষের কপালে জুটেছে বলে শুনতে পাইনি আজো। আগে এজেন্সিগুলো হাজীদের কষ্ট দিতো। তাই হাজীদের সুবিধার জন্য অনলাইন সিস্টেমসহ আরো অনেক সুন্দর সুন্দর পদক্ষেপ নিয়েছে সৌদি কতৃপক্ষ। 

আমরা আশা করি, এ বছর হাজীদের কান্নায় ভারী হবে না টিভির পর্দা, খবরের কাগজের শিরোনাম। বরং হাজীদের সুখে হেসে ওঠবে প্রতিটি সংবাদ মাধ্যম। হে হজ কতৃপক্ষ! আপনারা আল্লাহর মেহামানদের খাদেম। কত বড় মর্যাদা আপনাদের। দয়া করে, কোনভাবেই যেন হাজীদের কষ্ট না হয়- এ বিষয়ে সজাগ-সতর্ক থাকবেন। মহান আল্লাহ হাজীদের যাত্রা শুভ করুন। সুন্দরভাবে হজ করিয়ে আবার আমাদের মাঝে তাদের ফিরিয়ে আননু। আমিন। 

লেখক: মুফাসসির এং গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব

গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...

খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর