লক্ষ্যমাত্রা ৩৩৮ রানের। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে এই পাহাড়সম লক্ষ্যে পৌঁছানোর মতো সামর্থ্য ছিল ভারতের। কিন্তু গভীর ব্যাটিং লাইন আপ নিয়েও ইংলিশদের কাছে ৩১ রানে হেরে গেছেন কোহলি অ্যান্ড কোং। ভারত আসলেই জয়ের জন্য মাঠে নেমেছিল কিনা সেটা বোঝাতে কয়েকটা তথ্যই উপস্থাপন করা যেতে পারে।

woakes shakes hands with dhoni after englands victory

রোহিত শর্মা, কোহলি, ঋষভ প্যান্ট, লোকেশ রাহুল, হার্দিক পান্ডিয়া, মহেন্দ্র সিং ধোনির মতো ব্যাটসম্যান থাকা স্বত্ত্বেও পুরো ইনিংসে মাত্র একটি ছক্কা হাঁকাতে পেরেছে ভারত। তাও আবার ম্যাচের শেষ বলে! অন্যদিকে পুরো ইনিংসে ১২টি ছক্কা মেরেছেন স্বাগতিক ইংল্যান্ডের ব্যাটসম্যানরা।

এই ম্যাচে ভারতের জয় প্রার্থনা করেছিল উপমহাদেশের প্রায় পৌনে দুশো কোটি মানুষ। সম্ভবত ইতিহাসে এবারই প্রথম কোনো খেলায় ভারতের জয় প্রত্যাশা করেছে উপমহাদেশের সবকটি দেশ। বিশেষ করে বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কা ভারতীয়দের জয়টা খুব করেই চেয়েছিল। কারণ ইংল্যান্ড-ভারত ম্যাচে যে এই তিনটি দলের সেমিফাইনাল ভাগ্য জড়িয়ে ছিল!

হিমালয়তুল্য লক্ষ্যে ব্যাট করতে নামা ভারতের ইনিংসের আগা-গোড়া ছিল ঘুমপাড়ানি ব্যাটিং। মাঝের সময়টুকু পরিস্থিতির দাবি মিটিয়ে ব্যাট করেছে ভারতীয়রা। কোহলিদের ব্যাটিংয়ের ধরন দেখে কে বলবে এই দলটা ৩৩৮ রানের টার্গেটের পথে হাঁটছে! ভারতের বোলিংও হয়েছে যাচ্ছে তা।

স্লগওভারের কার্যকর দুই বোলার যুজভেন্দ্র চাহাল ও কুলদ্বীপ যাদবের বোলিংয়ে কোনো নিয়ন্ত্রণই ছিল না। মোহাম্মদ শামি পাঁচ উইকেট পেলেও বল হাতে ছিলেন বেশ উদার। একমাত্র জাস্প্রিত বুমরাহ-ই ইংলিশদের বিরুদ্ধে প্রত্যাশিত পারফর্মটা করতে পেরেছেন। সবমিলিয়ে ম্যাচ শেষে ক্রিকেটপ্রেমীদের কাছে বড় একটা প্রশ্নবোধক রাখল বার্মিংহামের মহারণটা?

ভারত হারায় ক্ষতি হয়েছে উপমহাদেশের তিনটি দলেরই। ইংল্যান্ড জেতায় শ্রীলঙ্কার সেমিফাইনালে ওঠার ক্ষীণ সম্ভাবনাটুকুও শেষ হয়ে গেছে। চাপ বেড়ে গেছে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের। তাই পরের দুই ম্যাচে দল দুটিকে শুধু জিতলেই চলবে না, অমঙ্গল কামনা করতে হবে ইংল্যান্ডের জন্য। যাতে নিউজিল্যান্ড ইংলিশদের হারাতে পারে।

৩১ রানের জয়ের পর আট ম্যাচে ১০ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের চারে উঠে এসেছে ইংল্যান্ড। সমান ম্যাচে এক পয়েন্ট কম নিয়ে পাঁচে নেমে গেছে পাকিস্তান। সাত ম্যাচে সাত পয়েন্ট পাওয়া বাংলাদেশ আছে ছয় নম্বরে। ইংল্যান্ড পরের ম্যাচে জিতলে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের বিশ্বকাপ শেষ হয়ে যাচ্ছে। বাকি ম্যাচগুলোতে দুই দল জিতলেও বিদায় ঠেকাতে পারবে না।

পাকিস্তানি ও বাংলাদেশি সমর্থকদের আশঙ্কা- ম্যাচটায় ফিক্সিং হয়নি তো? ভারতের যে জয়ের তাড়না ছিল না সেটা কোহলিদের খেলার ধরনেই অনেকটা পরিষ্কার। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোতে ম্যাচটা নিয়ে ভালোই চর্চা শুরু হয়েছে। পাকিস্তানি সমর্থকদের মতে ভারত ইচ্ছে করেই ম্যাচটা হেরেছে।

যাতে সরফরাজদের শেষ চারে যাওয়ার সম্ভাবনা শেষ হয়ে যায়। কথা উঠেছে ইংরেজদের সাথে আতাত করে কি বাংলাদেশের ক্ষতিও ইচ্ছেকৃতভাবে করেছেন কোহলিরা। শুধু বাংলাদেশি এবং পাকিস্তানি সমর্থকরাই নয়, ম্যাচটাতে যে ফিক্সিং হতে পারে সেটা বলছেন ভারত দলের অনুসারিরাও।

ম্যাচ শেষে টুইটারে রবিপ্রকাশ পুনিয়া টুইট করেছেন, 'ধোনি। চমৎকারভাবে শেষ করেছেন ম্যাচটা। একই সঙ্গে পাকিস্তানের বিশ্বকাপে টিকে থাকার সম্ভাবনাও শেষ করে দিয়েছেন। কিংবদন্তি।' পুনিয়ার টুইটের জবাবে বাংলাদেশি, পাকিস্তানি সমর্থকরাও ক্ষোভ ঝেরেছেন কোহলি-ধোনিদের ওপর।

শেষ দিকে ধোনি ও কেদার যাদবের ব্যাটিং দেখে অবাক হয়েছেন ইংল্যান্ডের সাবেক অধিনায়ক ও ধারাভাষ্য নাসের হুসাইন। তিনি লিখেছেন, 'আমি এটা (ভারতের জেতার তাড়না না থাকা) দেখে সত্যিই অবাক হয়েছি।' পাকিস্তানের সাংবাদিক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক আনোয়ার লোধি এই ম্যাচটার সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করেছেন।

এক টুইটে আনোয়ার লিখেছেন, 'আইসিসি মোহাম্মদ আমিরকে নিষিদ্ধ করেছিল। আইসিসির কর্তারা বলেছিলেন আমির ক্রিকেটপ্রেমীদের বিশ্বাস ভেঙেছেন। আজ ভারতের খেলা দেখে ধারাভাষ্যকাররা পর্যন্ত অবাক হয়েছেন। ইংল্যান্ড-ভারত ম্যাচে ফিক্সিং হয়েছে কিনা ওই ঘটনার (আমির প্রসঙ্গ) মতো করে আইসিসি এর তদন্ত করে কিনা সেটাই দেখব।'

বাংলাদেশি ক্রিকেট ভক্ত, সাবেক সাংবাদিক ও ক্রিকেট বিশ্লেষক ফরহাদ টিটো ভারতের খেলার ধরন দেখে ফেসবুকে লিখেছেন, 'ইন্ডিয়া জিতার জন্য এত্ত চেষ্টা করতেছে...চিন্তাই করা যায় না! এই রকম রকিং ব্যাটিং লাইন আপ নিয়ে ইন্ডিয়া প্রথম ছক্কা মেরেছে শেষ ওভারে এসে! ৩৩৮ রানের লক্ষ্যে নামা কোনো দল যখন এমনটা করে...সেই দল জেতার জন্য নেমেছিলো- তা বিশ্বাস করা যায়?'

আসলেই, ভারতের এভাবে হারাটা অবিশ্বাস্য মনে হয়েছে ক্রিকেটপ্রেমী ও বিশ্লেষকদের কাছে। অথচ ভারতের জয়ের জন্য গলা ফাটিয়েছেন পাকিস্তানিরা। বাংলাদেশও কোহলিদের জন্য সমর্থন দিয়েছে। সেই দলটাই হতাশ করেছে উপমহাদেশের সবাইকে। আক্ষরিক অর্থে তাই, এই ম্যাচে ভারত হারেনি; হেরেছে পুরো উপমহাদেশ!

Stay on top of the latest sports news, including cricket and football, from around the world. Get comprehensive coverage of matches, tournaments, and leagues— along with expert analysis and commentary from our team of sports journalists. Whether you're a die-hard fan or a casual observer, you'll find everything you need to know about your favorite sports here.

Sports, cricket, and football are popular topics in the world of sports. Cricket is a bat-and-ball game played between two teams of eleven players and is particularly popular in South Asian countries. Football, also known as soccer, is a team sport played with a spherical ball between two teams of eleven players and is widely popular worldwide. Sports enthusiasts follow the latest news, matches, tournaments, and leagues in these sports and analyze and comment on the performances of players and teams.