'এমন একটা খবরের অপেক্ষায় ছিলাম'

বরগুনার যুবক রিফাত শরীফকে প্রকাশ্যে দিবালোকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় প্রধান আসামি নয়ন বন্ড পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হওয়ার খবর শুনে মহান আল্লাহতায়ালার কাছে শুকরিয়া আদায় করেছেন রিফাতের স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নি। এমন একটি খবরের অপেক্ষায় ছিলেন বলেও জানান তিনি।

মঙ্গলবার ভোররাতে বরগুনার বুড়িরচর ইউনিয়নের পূর্ব বুড়িরচর গ্রামের পুরাকাটা এলাকায় পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুক যুদ্ধে নিহত হয়েছেন রিফাত হত্যা মামলার প্রধান আসামী সাব্বির আহম্মেদ ওরফে নয়ন বন্ড (২৫)।

মিন্নি বলেন, মঙ্গলবার সকালে তিনি প্রথম তার বাবার কাছ থেকে নয়ন বন্ড 'বন্দুকযুদ্ধে' নিহত হওয়ার খবর জানতে পারেন। এরপর তাৎক্ষণিক মহান আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করেন এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

তিনি আরও বলেন, স্বামী রিফাত শরীফকে চোখের সামনে কুপিয়ে হত্যার দৃশ্য দেখার পর এতদিন তিনি শোকে স্তব্ধ ছিলেন। নয়ন বন্ডের নিহত হওয়ার খবরে এখন তিনি স্বস্তি বোধ করছেন। ঠিক এমনই একটি খবরের অপেক্ষায় ছিলেন মিন্নি।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ দিয়ে মিন্নি বলেন, প্রধানমন্ত্রী তাদের ডাকে দ্রুত সময়ের মধ্যে সাড়া দিয়েছেন। রিফাত হত্যায় জড়িত আসামীরা আদৌ ধরা পড়বে কিনা তা নিয়ে এতোদিন শঙ্কা এবং আতঙ্কে ছিলেন তিনি এবং তার পরিবার। কিন্তু 'বন্দুকযুদ্ধে' নয়ন নিহত হওয়ায় সব শঙ্কা এবং আতঙ্ক দূর হয়ে গেছে। পাশাপাশি স্বামীর হত্যাকাণ্ডে জড়িত অন্যান্য আসামীদের কঠোর শাস্তির প্রার্থনা করেন তিনি।

মিন্নির বাবা মোজাম্মেল বলেন, তার আজকের (মঙ্গলবার) দিনটি শুরু হলো একটি খুশির সংবাদ দিয়ে। নয়ন বন্ড 'বন্দুকযুদ্ধে' মারা যাওয়ায় তার গোটা পরিবার খুশি হয়েছে। সকালে তিনি বাজারে গিয়ে শুনেন নয়ন বন্ড 'বন্দুকযুদ্ধে' মারা গেছে। তারপর দ্রুত বাড়িতে এসে মিন্নিকে খবরটি জানান। গত কয়েকদিন ধরে তার মেয়েটি বিধ্বস্ত ছিল। কিন্তু নয়নের মারা যাওয়ার খবর শুনে খুব খুশি হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, নয়ন বন্ড ও ফরাজী ধরা না পড়ায় তার এতদিন পরিবার আতঙ্কে ছিল। এখন সে আতঙ্ক কেটে গেছে। বিচারের জন্যও বেশি দৌড়াতে হলো না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দ্রুত বিচার পাইয়ে দিয়েছেন। তাই প্রধানমন্ত্রীর কাছে কৃতজ্ঞ তিনি। এখন বাকি আসামীদের শাস্তি হলেই মৃত রিফাতের আত্মা শান্তি পাবে বলে জানান তিনি।

উল্লেখ্য, বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্যে রামদা দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে রিফাতকে। তার স্ত্রী আয়েশা আক্তার মিন্নি হামলাকারীদের প্রাণপণ বাধা দিয়েও স্বামীকে বাঁচাতে পারেননি। একাধারে রিফাতকে কুপিয়ে বীরদর্পে অস্ত্র উঁচিয়ে এলাকা ত্যাগ করে দুর্বৃত্তরা। এরপর গুরুতর আহত রিফাতকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে বিকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।