আপনি পড়ছেন

যদি কোনো ব্যক্তি ফরজ হজ আদায় করতে অক্ষম হয়, তবে তার পক্ষ থেকে অন্য কেউ হজ আদায় করে দেয়াকে বদলি হজ বলা হয়ে থাকে। আলেমরা ব্যাখ্যা করেছেন এভাবে, ‘অক্ষমতা হবে শারীরিকভাবে, আর্থিকভাবে নয়। আর পুরুষ এবং নারী পরস্পর পরস্পরের বদলি হজ করাতে কোন নিষেধ নেই। ইমাম নববী, শরহে মুসলিম, (৮ম খন্ড, ২৭ পৃষ্ঠা)। এবার চলুন বদলি হজের ৬টি জরুরি মাসআলা সম্পর্কে জেনে নিই।

bodi hajj

১. যাকে দিয়ে বদলি হজ করাবেন অথবা যিনি বদলি হজ করবেন তাকে অবশ্যই আগে নিজের হজ আদায় করতে হবে। ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) এক ব্যক্তিকে বলতে শুনলেন, ‘শুবরুমার পক্ষ থেকে লাব্বাইক’। তিনি (সা.) জিজ্ঞেস করলেন, কে এই শুবরুমা? সে বলল, আমার ভাই অথবা বন্ধু। রাসুল (সা.) বললেন, তুমি কি নিজে হজ করেছে? সে বলল, না। রাসুল (সা.) বললেন, আগে নিজের হজ কর, তারপর শুবরুমার হজ করবে। সুনানে আবু দাউদ, হাদিস নম্বর ৩০৩৯।

২. সামর্থ্যবান ব্যক্তি নিজে ফরজ হজ আদায় না করে অন্য কারো পক্ষ থেকে বদলি হজ করলে তা শুদ্ধ হবে না। ইমাম ইবনে মুনযির বলেন, এ ব্যাপারে সব আলেম একমত। ইবনে কুদামা, আল মুগনি, (৩য় খন্ড, ১৮৩ পৃষ্ঠা)।

৩. যিনি বদলি-হজ করাচ্ছেন তিনি যদি শুধু হজ বা ওমরাহ করার নির্দেশ দেন, আর বদলি-হজকারী হজ এবং ওমরাহ একসঙ্গে করে, তবে বদলি-হজকারীকে ইমাম আবু হানিফা (রহ.) এর মতে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। বাদায়েউস সানায়ে, ২য় খন্ড, (২১৩ ও ২১৪ পৃষ্ঠা)।

৪. যে ব্যক্তি নিজের ফরজ হজ আদায় করে ফেলেছেন তার জন্য নফল হজ করার চেয়ে উত্তম হল, অন্য কারো ফরজ হজের বদলি করা। হযরত আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘যে ব্যক্তি কোনো মৃতের পক্ষ থেকে বদলি হজ করবে সেও তার সমপরিমাণ সওয়াব পাবে।’ মাজমাউয যাওয়াইদ, (৩য় খন্ড, ৬১৪ পৃষ্ঠা)।

৫. হজের ন্যায় ওমরাহও বদলি করা যায়। হযরত আবু রাযীন আল উকায়লী (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি রাসুল (সা.) এর নিকট এসে বললেন, ‘আমার বাবা অতিশয় বৃদ্ধ। তিনি হজ ও ওমরাহ করতে সক্ষম নয়।’ রাসুল (সা.) বললেন, ‘তোমার বাবার পক্ষ থেকে তুমি হজ ও ওমরাহ আদায় কর।’ জামে তিরমিজি, ১খন্ড, ১১২ পৃষ্ঠা।

৬. একইভাবে মান্নতকৃত হজেরও বদলি করা বৈধ। হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, ‘জুহাইনা গোত্রের এক নারী রাসুল (সা.) এর নিকট এসে বলল, ‘আমার মা হজের মান্নত করেছিলেন। কিন্তু হজ আদায়ের আগেই তিনি মারা গেছেন। এখন আমি কি তার পক্ষ থেকে হজ করতে পারব?’ রাসুল (সা.) বললেন, ‘তুমি তার পক্ষ থেকে হজ কর। যদি তোমার মায়ের কোনো অনাদায়ী ঋণ থাকত তাহলে তুমি কি তা পরিশোধ করতে না? আল্লাহর ঋণ তার চেয়ে বেশি আদায় যোগ্য।’ সহি বুখারি, (১ম খণ্ড, ২৫০ পৃষ্ঠা)।

গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...

খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর