দুপুরে নিয়োগ, রাতেই এমপি’র অফিসে আইনজীবী আসলাম

বরগুনার আলোচিত রিফাত হত্যার ঘটনায় তার স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নি সাক্ষী থেকে আসামি হয়েছেন। তার পক্ষে আইনি লড়াইয়ের জন্য গতকাল শনিবার দুপুরে নিয়োগ পান আইনজীবী মাহবুবুল বারী আসলাম। নিয়োগ পাওয়ার পরই রাতে তিনি স্থানীয় সরকার দলীয় সংসদ সদস্য ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুর সঙ্গে একান্ত বৈঠক করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

শম্ভু-মিন্নি-আসলাম

এ হত্যাকাণ্ডের পর থেকেই এমপি শম্ভু এবং তার ছেলে সুনাম দেবনাথের বিরুদ্ধে মামলায় প্রভাব খাটানোর অভিযোগ করে আসছেন মিন্নির বাবা মোজাম্মেল হোসেন। 

জানা গেছে, শনিবার দুপুরে মিন্নির আইনজীবী হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার পর রাতেই বরগুনা সদর রোডে এমপি শম্ভুর ব্যক্তিগত ল’ চেম্বারের পেছনের একটি কক্ষে আসলামকে দেখা যায়। এ সময় তার সঙ্গে বরগুনা বারের সভাপতি আবদুর রহমান নান্টুও ছিলেন। সেখানে এমপিপুত্র সুনাম দেবনাথ ও বরগুনার অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর আক্তারুজ্জামান বাহাদুরও উপস্থিত ছিলেন। 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে আসলাম বলেন, আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক তো সংসদ সদস্যের কাছে আসতেই পারেন, এটা সৌজন্য সাক্ষাৎ ছিল।

এমপির অফিসে ডেকে নেয়া হয়েছে নাকি জানতে চাইলে তিনি বলেন, বারের সভাপতিকে এমপি ফোন করেছিলেন। তিনি আমাকে জানালে সভাপতির সঙ্গে আমিও এসেছি।

বিষয়টি নিয়ে সংসদ সদস্য ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুর কাছে জানতে চাইলে বলেন, তারা চা খেতে এসেছিলেন।

এ ঘটনার প্রেক্ষিতে মিন্নির বাবা মোজাম্মেল হোসেন বলেন, আপনারা তো সবই বুঝতে পারছেন, বুঝতে আর কিছু বাকি আছে কী? অন্য আইনজীবীদের সঙ্গে পরামর্শ করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

এর আগে শনিবার মিন্নির বাবা অভিযোগ করে বলেছিলেন, ‘এসব সবই শম্ভু (বরগুনা-১ আসনের বর্তমান সাংসদ ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু) আর শম্ভুর ছেলে...। আর এই খুনের (রিফাত শরীফ) সঙ্গে যারা জড়িত তারা একত্রিত হয়ে এসব করছে (মিন্নিকে ফাঁসানো)। আমি বিশ্বের মানুষ, সারা বাংলার মানুষকে জানাতে চাই আমার মেয়েকে নির্মমভাবে নির্যাতন করে পাঁচ দিনের রিমান্ডে রেখে শেষ করে তারা মনে হয় কোর্টে সোপর্দ করেছে।’

প্রসঙ্গত, গত ২৬ জুন সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্যে রামদা দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে রিফাতকে। তার স্ত্রী আয়েশা আক্তার মিন্নি হামলাকারীদের প্রাণপণ বাধা দিয়েও স্বামীকে বাঁচাতে পারেননি। একাধারে রিফাতকে কুপিয়ে বীরদর্পে অস্ত্র উঁচিয়ে এলাকা ত্যাগ করে দুর্বৃত্তরা। তারা চেহারা আড়াল করারও কোনো চেষ্টা করেনি।

গুরুতর আহত রিফাতকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে বিকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। এর পরদিন রিফাতের বাবা আবদুল হালিম শরীফ ১২ জনের বিরুদ্ধে এবং অজ্ঞাত ৪-৫ জনের নামে বরগুনা থানায় মামলা দায়ের করেন।