ক্রিকেটে খুলছে নতুন দুয়ার

বিশ্বের সবচেয়ে বড় ক্রীড়াযজ্ঞের নাম অলিম্পিক। গোটা বিশ্বকে এক সুতোয় গাঁথার সবচেয়ে বড় প্রয়াস 'দ্য গ্রেটেস্ট শো অন আর্থ' খ্যাত অলিম্পিক গেমস। বিশ্বব্যাপী কয়েক ডজন ডিসিপ্লিনে হাজার হাজার ক্রীড়াবিদকে নিয়ে চার বছর অন্তর অন্তর অনুষ্ঠিত হয়ে আসছি আসরটি। অথচ বিশ্বের সবচেয়ে বড় ক্রীড়াযজ্ঞের অংশ নয় ক্রিকেট।

অলিম্পিকে ক্রিকেটের অন্তর্ভূক্তি করতে বহু বছর ধরে চেষ্টা করছে এমসিসি ও আইসিসি। কেন ক্রিকেট অলিম্পিকের টিকিট পাচ্ছে না এনিয়ে বিতর্কের শেষ নেই। কারোর দাবি আইসিসির কারণেই অলিম্পিক থেকে বাইরে আছে ক্রিকেট। আবার অনেকের ধারণা অলিম্পিক কমিটিই ক্রিকেটের সময়সীমার কারণে এটা অন্তর্ভূক্তি চায় না।

কেউ বলে আইসিসির কারণেই অলিম্পিকে ক্রিকেট অন্তর্ভূক্ত নয়, কেউ বলে অলিম্পিক কমিটিই চায় না সময়সাপেক্ষ এই খেলাটিকে অন্তর্ভূক্ত করতে। কিন্তু টি-টোয়েন্টির এই যুগে ক্রিকেটের সময়টাও অনেক কমে এসেছে। সে কারণেই বেশ কয়েক বছর ধরে জোরালো দাবি উঠছে, অলিম্পিকে ক্রিকেটকে অন্তর্ভূক্ত করার।

বিশ্বের এক তৃতীংশেরও বেশি মানুষ ক্রিকেট খেলা দেখে থাকেন। অথচ বিশ্বের সবচেয়ে বড় ক্রীড়া আসরেই নেই ক্রিকেট। কিন্তু দিন বদলাচ্ছে। পাঁচদিনের ক্রিকেট এখন ২০ ওভারে নেমে এসেছে। ফ্যাঞ্জাইজি ক্রিকটে টি-টেন ফরমেটও চালু হয়েছে। তাই ক্রিকেটকে অলিম্পিকে অন্তর্ভূক্ত করার দাবিটা ক্রমেই জোরাল হয়ে উঠেছে।

সেই দাবি নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে আইসিসি ও এমসিসি। অবশেষে এর সুফল পেতে যাচ্ছে ক্রিকেট। আগামী ২০২৮ লস অ্যাঞ্জেলস অলিম্পিক আসর দিয়েই ক্রিকেটে খুলছে সম্ভাবনার নতুন দুয়ার। সোমবার বিশ্ববাসীকে এমনই আশার কথা শোনালেন এমসিসি ক্রিকেট কমিটির চেয়ারম্যান মাইক গ্যাটিং।

সোমবার আইসিসির ওয়েবসাইটে তিনি বলেছেন, 'আমরা মানু সানের (আইসিসির নতুন প্রধান নির্বাহী) সঙ্গে কথা বলছি। তারা এটা নিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন। আমরা আশাবাদী ২০২৮ অলিম্পিকেই আমরা ক্রিকেটকে নিয়ে যেতে পারব।' গ্যাটিং এবং সানুর সঙ্গে সম্প্রতি বৈঠক হয়েছে এনিয়ে।

বিশ্বের প্রায়সব ক্রীড়াবিদকে এক ছাতার নিচে আনার পদ্ধতিই হলো অলিম্পিক। সেখানে আসরের পর আসর ধরে উপেক্ষিত হয়ে আসছে ক্রিকেট। অথচ বিশ্বের বেশ কয়েকটা দেশেই ক্রিকেট খেলা দেখা হয়। যদিও ক্রিকেটের জনপ্রিয়তা শুধু উপমহাদেশেই। বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তানকে ক্রিকেটপ্রেমী দেশ হিসেবেই চিহ্নিত করা হয়।

উপ-মহাদেশের বাইরে নির্দিষ্ট কয়েকটা দেশের মধ্যে সীমাবদ্ধ রয়েছে ক্রিকেট। তবে ব্যাট-বলের এই যুদ্ধের বিশ্বায়ন ঘটাতে আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছে ক্রিকেটের সর্বোচ্চ সংস্থা আইসিসি। এই পরিকল্পনার বড় একটা অংশজুড়ে আছে অলিম্পিকে অন্তর্ভূক্তি। এনিয়ে আইসিসি, এমসিসি কর্তাদের সঙ্গে কয়েকদফা বৈঠকও হয়েছে বিশ্ব অলিম্পিক কমিটির সঙ্গে।

সেই আলোচনা এবার অনেকটাই গতি পেয়েছে। এতটাই যে, গ্যাটিং আত্মবিশ্বাসী, লস অ্যাঞ্জেলস অলিম্পিকের টিকিট পেয়ে যাবে ক্রিকেট। সেই রোমাঞ্চ এখনই তাড়া করে বেরাচ্ছে। গ্যাটিং বলেছেন, 'আমরা এটা নিয়ে কাজ করছি। তারাও ইতিবাচক এই বিষয়ে। এটা হবে বিশ্বব্যাপী ক্রিকেটের জন্য বিশাল একটা পাওয়া। এটা হবে দুর্দান্ত একটা ব্যাপার।'

অবশ্য নারী ক্রিকেট থেকে ইতোমধ্যে একটা সুখবর আসছে। দীর্ঘ ২৪ বছর পর কমনওয়েলথ গেমসে ফিরছে ক্রিকেট। ২০২২ সালে বার্মিংহামে অনুষ্ঠিতব্য আসরে অংশ নিচ্ছে নারী ক্রিকেট।