আপনি পড়ছেন

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন বিষয়ে বাংলাদেশ জোর করে কিছু করতে চায় না বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন। সেই সাথে তিনি মাতৃভূমিতে ফিরতে না চাওয়া রোহিঙ্গাদের মাঝে আস্থার ঘাটতি দূর করার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন।

a k abdul momen 1

বৃহস্পতিবার রোহিঙ্গাদের অনিচ্ছার কারণে আবারও প্রত্যাবাসন আটকে যাওয়ার মাঝে বিকালে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের ছোট একটি দলের সাথে আলাপকালে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘এটা দুঃখজনক....আপনি আর কী করতে পারেন!’

ড. মোমেন বলেন, রোহিঙ্গাদের মাঝে আস্থার ঘাটতি রয়েছে। রোহিঙ্গারা নিরাপত্তা ও সুরক্ষার যে ভয়ে আছে তা দূর করতে ১০০ মাঝি বা রোহিঙ্গা নেতাকে রাখাইন রাজ্যে নিয়ে যাওয়ার এবং তাদের সেখানে নিজ গৃহে স্বাগত জানাতে কী পদক্ষেপ ও ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে তা দেখাতে বাংলাদেশের আহ্বান পুনরায় তুলে ধরেন তিনি।

মন্ত্রী জানান, রাখাইনের উন্নতি দেখতে এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপসহ সেখানে শান্তি ও স্থিতিশিলতা বিরাজ করছে কি না তা পরিদর্শনে বিভিন্ন দেশের মানুষদের নিয়ে একটি কমিশন গঠনের কথা ভাবছেন তিনি।

‘মিয়ানমারের প্রমাণ করা উচিত যে সেখানে উন্নয়ন হয়েছে এবং শান্তি বিরাজ করছে,’ উল্লেখ করে তিনি বলেন যে মাঠ পর্যায়ে পরিস্থিতি দেখতে সাংবাদিকদেরও নিয়ে যেতে পারে মিয়ানমার।

ড. মোমেন বলেন, মিয়ানমার যদি সৎ হয়ে থাকে তাহলে তাদের এগিয়ে আসা এবং রাখাইনে পরিস্থিতি দেখার জন্য প্রবেশাধিকার দেয়া উচিত।

রোহিঙ্গাদের দাবির বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তারা তাদের দাবি নিয়ে জিম্মি করতে পারেন না। ‘তাদের (রোহিঙ্গা) নিজ দেশে ফিরে গিয়ে দাবি আদায় করা দরকার।’

বৃহস্পতিবার স্বল্প পরিসরে হলেও প্রত্যাবাসন শুরুর আশা করা হয়েছিল জানিয়ে ড. মোমেন বলেন, ‘আমরা এখনো উচ্চ আশা নিয়ে অপেক্ষা করছি। মিয়ানমার এ সমস্যা সৃষ্টি করেছে এবং এর সমাধানও সেখানে রয়েছে। আমরা জোর করে কিছু করতে চাই না।’

আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, মিয়ানমারে না ফিরতে রোহিঙ্গাদের উৎসাহ দিয়ে কারা লিফলেট বিতরণ, ইংরেজিতে লেখা সাইনবোর্ড সরবরাহ ও প্রচারণা চালিয়েছেন তা চিহ্নিত করা এবং ব্যবস্থা নেয়া হবে।

স্থানীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে তহবিলের সরবরাহ কমে আসার প্রতি ইঙ্গিত করেন মন্ত্রী। এর ফলে এখন আরামে থাকা রোহিঙ্গাদের জন্য হয়তো সামনে সমস্যা হবে। ‘নিজেদের ভালো ভবিষ্যতের জন্য তাদের ফিরে যাওয়া উচিত,’ বলেন তিনি।

রোহিঙ্গাদের স্বেচ্ছায় ও নিরাপদে নিজ দেশে ফেরত পাঠাতে সরকারের চেষ্টা অব্যাহত থাকবে বলে জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মিয়ানমার কখনো বলেনি যে তারা তাদের নাগরিকদের ফিরিয়ে নেবে না।

ব্যাপক প্রস্তুতির পরও রোহিঙ্গাদের অনিচ্ছার কারণে বৃহস্পতিবার আবারও আটকে যায় প্রত্যাবাসন শুরুর কার্যক্রম। শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনের (আরআরআরসি) কমিশনার মোহাম্মদ আবুল কালাম সাংবাদিকদের বলেন, ‘রোহিঙ্গারা রাজি না হওয়ায় আজ প্রত্যাবাসন সম্ভব হচ্ছে না।’

এর আগে মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের জন্য ব্যাপক প্রস্তুতি নেয় বাংলাদেশ। ঘুমধুম ট্রানজিট পয়েন্ট প্রস্তুত রাখার পাশাপাশি জোরদার করা হয় সীমান্ত এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা। সেই সাথে পাঁচটি বাস ও দুটি ট্রাক সকাল থেকে টেকনাফের শালবন ক্যাম্পে ছিল। কিন্তু কোনো রোহিঙ্গা ফিরতে হাজির হননি।

প্রত্যাবাসনের জন্য ৩ হাজার ৫৪০ জন রোহিঙ্গাকে ছাড়পত্র দেয়া হয় এবং প্রত্যাবাসনের জন্য তালিকায় থাকা ২৩৫ রোহিঙ্গা পরিবারের সাক্ষাৎকারও নেয়া হয়। ইউএনএইচসিআর এবং শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনারের প্রতিনিধিরা ক্যাম্পে গিয়ে রোহিঙ্গাদের সাক্ষাৎকার নেন।

বাংলাদেশে বর্তমানে ১১ লাখের অধিক রোহিঙ্গা আশ্রয় নিয়ে আছেন। তাদের বেশির ভাগই মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীগুলোর বর্বর অভিযান থেকে জীবন বাঁচাতে ২০১৭ সালের ২৫ আগস্টের পর বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে।

রাখাইন রাজ্যে প্রত্যাবাসনের আগে যাচাইয়ের জন্য ২৯ জুলাই ছয় হাজার পরিবারের ২৫ হাজার রোহিঙ্গার নতুন একটি তালিকা মিয়ানমারের কাছে হস্তান্তর করে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের কাছ থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় ৫৫ হাজার রোহিঙ্গার তালিকা পেয়েছে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ।

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে বাংলাদেশ ও মিয়ানমার ২০১৭ সালের ২৩ নভেম্বর চুক্তি সই করে। পরে দুই দেশ ২০১৮ সালের ১৬ জানুয়ারি মাঠপর্যায়ে কার্যক্রম এগিয়ে নিতে ‘ফিজিক্যাল অ্যারেঞ্জমেন্ট’ নামে চুক্তি করে।

‘ফিজিক্যাল অ্যারেঞ্জমেন্ট’ অনুযায়ী, প্রত্যাবাসন শুরুর দুই বছরের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা ছিল।

রোহিঙ্গাদের প্রথম দলের ফেরার কথা ছিল গত বছরের ১৫ নভেম্বর। কিন্তু রাখাইনে অনুকূল পরিবেশ না থাকায় রোহিঙ্গারা ফিরতে রাজি না হওয়ায় এ কার্যক্রম স্থগিত করা হয়। ইউএনবি।

Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.

Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.