এবার ভারত হয়ে বাংলাদেশে আসছে মিয়ানমারের ইয়াবা

বেশ কয়েকটি ভারতীয় সিন্ডিকেট মিয়ানমার থেকে মরণ নেশা ইয়াবা পাচার করে তা বাহকের মাধ্যমে বাংলাদেশে পাঠাচ্ছে। সম্প্রতি এক ভারতীয় নাগরিককে ইয়াবাসহ গ্রেপ্তারের পর ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) কর্মকর্তারা প্রথমবারের মতো এমন তথ্য পেয়েছেন। খবর দ্য ডেইলি স্টার।

ডিবি কর্মকর্তারা জানান, ভারতীয় নাগরিকরা বাংলাদেশে প্রবেশ করে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের কাছে ইয়াবা বিক্রি করছে এ সংক্রান্ত অন্তত দুটি মামলা খুঁজে পেয়েছেন তারা। ওইসব মামলায় দেখা যায়, দুই ভারতীয় নাগরিক সীমান্ত পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের কাছে পাগলা বড়ি বিক্রি করছে।

ডিবির (উত্তর) জেলা প্রশাসক মশিউর রহমান জানান, ডিবির একটি দল গত ৯ আগস্ট রাজধানীর রামপুরা এলাকার একটি বাড়িতে অভিযান চালিয়ে মো. আব্দুস সবুর (৩৪) নামের এক ভারতীয় নাগরিককে ইয়াবাসহ আটক করে। অভিযানে শামসুল আলম (২৮) ও জাকির হোসেন (৪০) নামের দুই বাংলাদেশি ইয়াবা ব্যবসায়ীকেও আটক করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে মোট ১০ হাজার পিস ইয়াবা উদ্ধার করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

তিনি আরও জানান, এক সময় মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে ইয়াবা পাচার করা হতো কক্সবাজারের টেকনাফ সীমান্ত দিয়ে। কিন্তু ওই সীমান্তে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজরদারির কারণে পাচারকারীরা রুট পরিবর্তন করে বর্তমানে কুড়িগ্রামের রৌমারী সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে ইয়াবা পাচার করছে। বেশ কয়েকটি ভারতীয় সিন্ডিকেট মিয়ানমার থেকে ইয়াবা সংগ্রহ করে ভারতের ত্রিপুরা ও আসামে নিয়ে আসে। তার পর বাহকের মাধ্যমে তা বাংলাদেশে পাঠায়। 

ডিবির অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (এডিসি) জুনায়েদ আলম সরকার জানান, ইয়াবা পাচারকারী ওই ভারতীয় নাগরিক আব্দুর সবুর মিয়ানমার থেকে ৪৫-৫০ টাকায় ইয়াবা কিনে তা ৬৫ টাকায় বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করতো। এর আগেও সে একবার ১০ হাজার পিস ইয়াবা নিজে বহন করে আনে। গত ২ জুলাই বাজার পর্যবেক্ষণ ও স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সঙ্গে নেটওয়ার্ক স্থাপন করার জন্য প্রথমবার বাংলাদেশ আসে ওই ইয়াবা কারবারী।

এডিসি আরও জানান, বর্তমানে ইয়াবা পাচারকারীরা মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে এই মরণ নেশা আনতে ভারতের মিজোরাম, মেঘালয় এবং আসামকে ব্যবহার করে। মিয়ানমার থেকে প্রথমে পাহাড়ী রাস্তা দিয়ে ভারতের উত্তর-পূর্ব রাজ্য মিজোরামে প্রবেশ করে এই ইয়াবা। তার পর গাড়ি, বাস বা মোটরবাইকে করে আসাম ও মেঘালয় রাজ্য পাড়ি দিয়ে বাহকের মাধ্যমে বাংলাদেশে প্রবেশ করে।