ক্যাসিনো নিয়ে পাল্টা প্রশ্ন যুবলীগ চেয়ারম্যানের

রাজধানীর ফকিরাপুলে ইয়ংমেনস ক্লাবে অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ অর্থসহ ১৪২ জনকে আটক করেছে র‌্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত। সেইসঙ্গে অবৈধ জুয়া ও ক্যাসিনো চালানোর অভিযোগে ক্লাবটির মালিক ঢাকা দক্ষিণ মহানগর যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়াকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, রাজধানীতে অন্তত ৬০ জায়গায় এ ধরনের ক্যাসিনো বা জুয়ার আসর বসে। যার সঙ্গে পাঁচ শতাধিক ব্যক্তি জড়িত বলে গণমাধ্যমে খবর বেরিয়েছে।

বিষয়টি নিয়ে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেছেন যুবলীগ চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরী। তিনি বলেন, এতদিন ধরে এই ক্যাসিনো বা জুয়ার আসর চলতো, তাহলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা কি আঙুল চুষেছে। তারা এতদিন কী করছে?

তিনি বলেন, ‘আমাকে অ্যারেস্ট করতে চান, আমি রাজনীতি করি, এক শ বার অ্যারেস্ট হব। আমাকে অ্যারেস্ট করবেন, আমি বসে থাকব না। তার আগে আপনাকেও (আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য) অ্যারেস্ট হতে হবে। কারণ আপনি এর প্রশ্রয়দাতা।’

যুবলীগ চেয়ারম্যান বলেন, রাজধানীর ৬০ জায়গায় যদি ক্যাসিনো থাকে তাহলে ওই ৬০ জায়গায় দায়িত্বপ্রাপ্ত র‌্যাব-পুলিশকেও গ্রেপ্তার করতে হবে। কারণ তারা এতোদিন জেনেও কী করছিল। হঠাৎ করে কেন জেগে উঠলেন? দলের শৃঙ্খলা ভাঙতে চান? না কি দলের বিরুদ্ধে বড় কোনো ষড়যন্ত্র।

তিনি বলেন, আমি বা আমরা ভুলের ঊর্দ্ধে নই। আমার ভুল আছে সেটা সংশোধন করতে হবে, সংশোধন করাতে হবে। যুবলীগ এবং বিশেষ করে ঢাকা দক্ষিণ যুবলীগ একটি অত্যন্ত শৃঙ্খলিত সংগঠন বলেও উল্লেখ করেন তিনি। বলেন, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার জনসভা সফল করে সেটা দেখিয়েছে যুবলীগ।

প্রসঙ্গত, এর আগে বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় গুলশান-২–এর নিজ বাসা থেকে খালেদ মাহমুদকে গ্রেপ্তার করা হয়। আর ইয়ংমেনস ক্লাবে অভিযান শুরু হয় বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে।

খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়াকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করে র‌্যাবের মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট কর্নেল সারওয়ার বিন কাশেম গণমাধ্যমকে বলেন, অবৈধ জুয়া ও ক্যাসিনো চালানোর অভিযোগে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

র‌্যাবের অপর এক কর্মকর্তা জানান, গ্রেপ্তারের সময় খালেদ মাহমুদের কাছে তিনটি আগ্নেয়াস্ত্র ছিল। এর একটির লাইসেন্স নেই। অপর দুটির লাইসেন্সের মেয়াদ নেই।

ইয়ংমেনস ক্লাবে অভিযান চালান র‌্যাব সদর দপ্তরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. সারওয়ার আলম ও র‌্যাব-৩ এর একটি দল। র‌্যাবের অভিযানে ইয়ংমেনস ক্লাব থেকে ১৪২ জনকে আটক করা হয়েছে। আটক এসব ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারা সেখানে অবৈধ জুয়া ও মদ পানের আসর জমিয়েছিলেন।

নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারওয়ার আলম বলেন, র‌্যাবের কাছে অভিযোগ আছে, এই ক্লাবে আট মাস ধরে অবৈধ আসর বসতো। অভিযানের সময় তারা দেখতে পান, ক্লাবের নিচ তলায় যন্ত্রের মাধ্যমে জুয়া খেলা (ক্যাসিনো) চলছে। এ ছাড়া জুয়া খেলার ফাঁকে ফাঁকে মদ পান করা হচ্ছে।

ওমর ফারুক চৌধুরী আরো বলেন, আমি ক্যাসিনো চালাই না। আমার সখ জাগছে ক্যাসিনো দেখার। আমাকে কেউ নিয়ে যাবেন ক্যাসিনোতে?

তিনি আরো বলেন, পাঁচ শ জায়গায় ক্যাসিনো আছে, যুবলীগ চালায়। আপনি সাংবাদিক বলতে হবে কোথায় কোথায় ক্যাসিনো আসে এবং কারা কারা চালায়?