যেসব কারণে ব্যালন ডি’অর পাবেন না মেসি

ভার্জিল ফন ডাইক ও ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোকে হারিয়ে ফিফা ‘দ্য বেস্ট’ অ্যাওয়ার্ড জিতে নিয়েছেন লিওনেল মেসি। বিশ্বজুড়ে কোচ, অধিনায়ক, ফিফা ডটকমের নিবন্ধিত সমর্থক এবং সাংবাদিকদের ভোটে ফিফা বর্ষসেরা নির্বাচিত হয়েছিলেন বার্সেলোনা অধিনায়ক। আর্জেন্টাইন সুপারস্টার শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট ফিরে পাওয়ায় অনেকেই বিস্মিত হয়েছিলেন। তবে ফিফা বর্ষসেরা হলেও এ বছরের ব্যালন ডি’অর নাও পেতে পারেন মেসি।

সাম্প্রতিককালে এমন খবরই বিশ্বজুড়ে চাউর হয়েছে। কারণ ফিফার পুরস্কার দেওয়া হয় সম্মিলিত সবার ভোটে। যার একটি অংশ সাংবাদিকদের ভোট। ক্রীড়া সাংবাদিকদের ভোটে ফিফার সেরার লড়াইয়ে ফন ডাইকের চেয়ে অনেক পিছিয়ে ছিলেন মেসি। তাই অনেকেরই ধারণা ব্যালন ডি’অরের শিরোপা পেতে পারেন লিভারপুলের ডাচ ডিফেন্ডার ভার্জিল ফন ডাইক। কারণ শ্রেষ্ঠত্বের এই পুরস্কারে ভোটার শুধু সাংবাদিকরাই। কয়েকটি কারণেই এ বছর মেসির ব্যালন ডি’অর জয়ের সম্ভাবনা কম। ‘টোয়েন্টিফোরলাইভ নিউজপেপার’ পাঠকদের জন্য নেপথ্য এসব কারণ তুলে ধরা হলো:

চ্যাম্পিয়নস লিগে ব্যর্থতা: সাধারণ বিশ্বকাপ না থাকলে উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগকে ব্যালন ডি’অরের মানদণ্ড ধরা হয়ে থাকে। এ বছর ইউরোপ সেরার লড়াই থেকে মেসির বার্সেলোনা ছিটকে গেছে সেমিফাইনাল থেকে। তাদের বিদায় করে ফাইনালে ওঠে লিভারপুল। পরে ‘অল ইংলিশ’ লড়াইয়ে টটেনহামকে হারিয়ে শিরোপাও জেতে অল রেডরা। ইংলিশ ক্লাবটির স্বপ্নপূরণে কার্যকর ভূমিকা রেখেছেন ফন ডাইক। যা তাকে এগিয়ে রাখছে ব্যালন ডি’অরের লড়াইয়ে। তবে আসরে সর্বোচ্চ গোল করায় মেসিকেও লড়াই থেকে ছিটকে দেওয়া যাচ্ছে না।

কোপা আমেরিকায় ব্যর্থতা: ক্লাব পর্যায়ের সর্বোচ্চ টুর্নামেন্ট চ্যাম্পিয়নস লিগে ব্যর্থ হওয়া মেসি হতাশ হয়েছেন জাতীয় দলের জার্সিতেও। গত মৌসুমের শেষ দিকে কোপা আমেরিকা টুর্নামেন্টে ব্রাজিলের কাছে হেরে স্বপ্নভঙ্গ হয়েছে টানা দুইবারের ফাইনালিস্টদের। তৃতীয়স্থান নির্ধারণী ম্যাচে অবশ্য চিলিকে হারিয়েছিল মেসির আর্জেন্টিনা। ওই ম্যাচে আবার লাল কার্ড দেখেছিলেন দলটির অধিনায়ক। সর্বোপরি ব্যালন ডি’অর লড়াইয়ে এগিয়ে থাকার জন্য কোপা আমেরিকার সাফল্য মেসির জন্য মোটেও যথেষ্ঠ নয়। অন্যদিকে উয়েফা নেশনস লিগে নেদারল্যান্ডসকে ফাইনালে উঠিয়ে ব্যালন ডি’অরের লড়াইয়ে নিজেকে এগিয়ে রেখেছেন ফন ডাইক।

বাজে মৌসুম শুরু: ফিফার বর্ষসেরা নির্বাচিত হয়েছেন মেসি। কিন্তু তার এই আনন্দ অনেকটাই মাটি করে দিয়েছে ইনজুরি। চোটের কারণে লা লিগায় বার্সার প্রথম চারটি ম্যাচ খেলতে পারেননি মেসি। ইনজুরি থেকে সেরে উঠে মাঠে ফিরলেও তা দীর্ঘায়িত হয়নি। আবারো ইনজুরির শিকার হয়ে ছিটকে গিয়েছিলেন তিনি। মাঠে যতটা সময় ছিলেন তখন নিজেকে হারিয়ে খুঁজেছেন বার্সেলোনা অধিনায়ক। এই মৌসুমে কাতালানদের হয়ে তিন ম্যাচ খেললেও কোনো গোল করতে পারেননি তিনি। সতীর্থদের গোলেও অবদান রাখতে পারেননি মেসি।

ফন ডাইক হুমকি: সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ব্যালন ডি’অর জয়ে মেসির সবচেয়ে বড় হুমকি ছিলেন চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো। সেরার লড়াইয়ে এবারো আছেন পর্তুগিজ যুবরাজ। কিন্তু জুভেন্টাস প্রাণভোমরা নন, মেসিকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছেন ফন ডাইক। গত মৌসুমটা স্বপ্নের মতো কেটেছে তার। ক্লাব লিভারপুলের জার্সিতে জিতেছেন চ্যাম্পিয়নস লিগের রুপালি ট্রফি। এ ছাড়া নেদারল্যান্ডসকে তিনি এনে দিয়েছেন ইউরো নেশনস লিগের ফাইনালের টিকিট। এই মৌসুমেও দারুণ ছন্দে আছেন ডাচ রক্ষণপ্রহরী। ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে লিভারপুলের টানা সাত ম্যাচ জয়ে তার অবদান অনস্বীকার্য। ফন ডাইক যদি ব্যালন ডি’অর না পান সেটাই বরং আশ্চর্যের হবে।