আবরার হত্যা: ৫ দিনের রিমান্ডে অমিত সাহা-তোহা

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার আরো দুই আসামিকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। তারা হলো- হত্যার প্রধান অভিযুক্ত অমিত সাহা ও হোসেন মোহাম্মদ তোহা। এর আগেও কয়েকজনকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে।

আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) তাদেরকে আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করলে পাঁচ দিন রিমান্ডে নেওয়ার অনুমতি দেন ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালত।

এদিন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা আদালতকে বলেন, আবরার ফাহাদকে পূর্বপরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। শেরেবাংলা হলের যে কক্ষে আবরারকে নির্যাতন করা হয়, সেটি অমিত সাহার কক্ষ। অপর আসামি তোহা আবরারকে ডেকে ওই কক্ষে নিয়ে আসেন। হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত বাকিদের গ্রেপ্তার করার জন্য এই দুই আসামিকে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা জরুরি।

অপরদিকে, তোহার আইনজীবী আদালতের কাছে দাবি করেন, আবরার হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে তোহা জড়িত নন।

উভয় পক্ষের বক্তব্য শোনার পর আদালত অমিত ও তোহাকে পাঁচ দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেন।

এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর সবুজবাগ এলাকা থেকে অমিতকে গ্রেপ্তার করা হয়। আবরার হত্যায় অমিতকে প্রধান হিসেবে অভিযুক্ত করেছেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা। কিন্তু তার পরও তাকে গ্রেপ্তার এমনকি এজাহারে তার নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। পরে ব্যাপক সমালোচনা ও দাবির মুখে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

প্রসঙ্গত, আবরার হত্যার ঘটনায় আজ শুক্রবার ভোর ৪টার দিকে এজাহারভুক্ত আরেক আসামি মাজেদুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা ও অপরাধ তথ্য বিভাগ। সিলেটের শাহ কিরন এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

এখন পর্যন্ত আবরার হত্যায় ১৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর মধ্যে ১৪ জনের নাম মামলার এজাহারে রয়েছে। গ্রেপ্তার আসামিরা হলেন- বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান ওরফে রাসেল, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ফুয়াদ হোসেন, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক অনিক সরকার, ক্রীড়া সম্পাদক মেফতাহুল ইসলাম ওরফে জিয়ন, উপ-সমাজসেবা সম্পাদক ইফতি মোশাররফ, আইনবিষয়ক উপ-সম্পাদক অমিত সাহা, ছাত্রলীগের সদস্য মুনতাসির আল জেমি, খন্দকার তাবাখখারুল ইসলাম ওরফে তানভীর, মোহাজিদুর রহমান, শামসুল আরেফিন, মনিরুজ্জামান, আকাশ হোসেন, মিজানুর রহমান (আবরারের রুমমেট), হোসেন মোহাম্মদ তোহা ও মো. মাজেদুল ইসলাম।

উল্লেখ্য, আবরার ফাহাদ বুয়েটের তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক প্রকৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের (১৭তম ব্যাচ) ছাত্র ছিলেন। তিনি থাকতেন বুয়েটের শেরেবাংলা হলের নিচতলার ১০১১ নম্বর কক্ষে। গত রোববার রাত ৮টার দিকে তাকে ডেকে নিয়ে যাওয়া হয় একই হলের দোতলার ২০১১ নম্বর কক্ষে।

ওই কক্ষে তাকে অকথ্য নির্যাতন করে বুয়েট ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। রাত ৩টার দিকে হল থেকেই তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এর পর থেকে শিক্ষার্থীরা আবরার হত্যার ঘটনায় খুনিদের সর্বোচ্চ শাস্তি, বুয়েট ক্যাম্পাসে সাংগঠনিক ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করাসহ ১০ দফা দাবিতে আন্দোলন করছেন।