আবরার হত্যা: ভারতে পালানোর প্রস্তুতিকালে গ্রেপ্তার শামীম

সাতক্ষীরা সীমান্ত দিয়ে ভারতে পালানোর সময় বুয়েটের ছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যা মামলার আসামি শামীম বিল্লাহকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার বিকেলে সাতক্ষীরার ভুরুলিয়া গ্রাম থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, শামীম বিল্লাহ আবরার হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত ১৪ নম্বর আসামি। তিনি সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার ইসাকুড় গ্রামের আমিনুর রহমানের ছেলে। বুয়েটের দ্বিতীয় বর্ষের ১৭তম ব্যাচের নেভাল আর্কিটেকচার অ্যান্ড মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ছাত্র শামীম শেরেবাংলা আবাসিক হলের ২০০৪ কক্ষে থাকতেন।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গণমাধ্যম শাখা থেকে জানানো হয়, শুক্রবার বিকেল ৪টার দিকে সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দর এলাকা থেকে শামীমকে গ্রেপ্তার করে ডিএমপির গোয়েন্দা ও অপরাধতথ্য বিভাগের একটি দল।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে শামীম জানিয়েছেন, তিনি আজ শুক্রবার সাতক্ষীরা হয়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতি নিয়েছিলেন।

শ্যামনগর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আনিসুজ্জামান জানান, ঢাকা থেকে আসা পুলিশের একটি দল একজনকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারের পরপরই তাকে নিয়ে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হয় দলটি। তার নাম শামীম বিল্লাহ।

প্রসঙ্গত, শামীম বিল্লাহকে নিয়ে আবরার হত্যার ঘটনায় এ পর্যন্ত মোট ১৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হলো। এর মধ্যে এজাহারভুক্ত আসামি ১৫ জন। এই আসামিদের মধ্যে ১২ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ডে নেওয়া হয়। ইতিমধ্যে দুই আসামি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

উল্লেখ্য, আবরার ফাহাদ বুয়েটের তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক প্রকৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের (১৭তম ব্যাচ) ছাত্র ছিলেন। তিনি থাকতেন বুয়েটের শেরেবাংলা হলের নিচতলার ১০১১ নম্বর কক্ষে। গত রোববার (৬ অক্টোবর) রাত ৮টার দিকে তাকে ডেকে নিয়ে যাওয়া হয় একই হলের দোতলার ২০১১ নম্বর কক্ষে।

ওই কক্ষে তাকে অকথ্য নির্যাতন করে বুয়েট ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। রাত ৩টার দিকে হল থেকেই তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এর পর থেকে শিক্ষার্থীরা আবরার হত্যার ঘটনায় খুনিদের সর্বোচ্চ শাস্তি, বুয়েট ক্যাম্পাসে সাংগঠনিক ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করাসহ ১০ দফা দাবিতে আন্দোলন করছেন।

হত্যাকাণ্ডের পর দিন চকবাজার থানায় মামলা করেন আবরারের বাবা বরকত উল্লাহ। এজাহারে ১৯ জনকে আসামি করে ওই মামলা করা হয়।

এ পর্যন্ত গ্রেপ্তার হওয়া আসামিরা হলেন- বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান ওরফে রাসেল, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ফুয়াদ হোসেন, অনীক সরকার, মেফতাহুল ইসলাম, ইফতি মোশারেফ, বুয়েট ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মেহেদী হাসান ওরফে রবিন, গ্রন্থ ও প্রকাশনা সম্পাদক ইশতিয়াক আহমেদ ওরফে মুন্না, ছাত্রলীগের সদস্য মুনতাসির আল জেমি, খন্দকার তাবাখখারুল ইসলাম ওরফে তানভীর, মোহাজিদুর রহমান, শামসুল আরেফিন, মনিরুজ্জামান, আকাশ হোসেন, মিজানুর রহমান (আবরারের রুমমেট), ছাত্রলীগ নেতা অমিত সাহা, হোসেন মোহাম্মদ তোহা, মাজেদুল ইসলাম ও শামীম বিল্লাহ।