১৩ ও ১৪ তা‌রিখ স্থ‌গিত থাকবে বুয়েটের আন্দোলন

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) স্নাতক প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষার জন্য আগামী রোববার ও সোমবার চলমান আন্দোলন স্থগিত রাখার ঘোষণা দিয়েছেন বুয়েটের আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। শনিবার বিকালে বুয়েটের শহীদ মিনার চত্ত্বরে এ ঘোষণা দেয়া হয়।

১৩ ও ১৪ তা‌রিখ স্থ‌গিত থাকবে বুয়েটের আ‌ন্দোলন

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানান, বুয়েটের তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক প্রকৌশল (ইইই) বিভাগের ১৭তম ব্যাচের শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে ক্যাম্পাসে নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করাসহ পাঁচ দফা দাবি জানানো হয়। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সেই দাবি পূরণের আশ্বাস দেয়ায় এবং তাদের পদক্ষেপের কথা নোটিশ আকারে জানানোয় আগামী ১৩ ও ১৪ অক্টোবর আন্দোলন স্থগিত রাখান ঘোষণা দেয়া হয়েছে।

তারা আরো জানান, আগামী ১৩ ও ১৪ তারিখ বুয়েটে স্নাতক প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। ভর্তি পরীক্ষা উপলক্ষ্যে সারাদেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ১২ হাজারের অধিক শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবক ঢাকায় এসেছেন। তাই আগামী রোববার ও সোমবার বুয়েটের বর্তমান শিক্ষার্থীরা যে যার সাধ্যমতো তাদের প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দিয়ে যাবেন।

শিক্ষার্থীরা আরো জানান, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে পাঁচ দফা দাবির মধ্যে আবরার হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের স্থায়ীভাবে বহিষ্কারের দাবি জানানো হয়েছে। প্রশাসন ইতোমধ্যে তাদের সাময়িকভাবে বহিষ্কার করে নোটিশ দিয়েছে। পাশাপাশি আবরারের পরিবারকে পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ ও মামলার খরচ বহনের জন্য প্রশাসনকে বলা হয়েছে। তারা সে দাবিও মেনে নিয়েছেন।

তাছাড়া বুয়েটে ছাত্র রাজনীতি বন্ধসহ অবৈধ ও অছাত্রদের হল থেকে উৎখাত ও বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছাত্রসংগঠনগুলোর কার্যালয় সিলগালা করার দাবি জানানো হয়। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ইতোমধ্যে আহসান উল্লাহ হল ও তিতুমীল হলসহ অন্যান্য হলে উৎখাত অভিযান শুরু করেছে। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ে আগে ঘটে যাওয়া সব শিক্ষার্থী নির্যাতন, হয়রানি ও ভবিষ্যতে এ ধরনের যেকোনো ঘটনা প্রকাশের জন্য বিআইআইএস অ্যাকাউন্টে একটি কমন প্ল্যাটফর্ম যুক্ত করা এবং এর পূর্ণ মনিটরিংয়ের ব্যবস্থা করে অভিযুক্তদের শাস্তি দিতে একটি কমিটি গঠন করা, প্রত্যেক হলের সকল তলায় সিসিটিভি ক্যামেরা যুক্ত করা ও সার্বক্ষণিক মনিটরিংয়ের ব্যবস্থা করার কথা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে জানানো হয়।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ইতোমধ্যে নজরুল হলে সিসিটিভি ক্যামেরা লাগানোর কাজ শুরু করেছে। পাশাপাশি অন্যান্য হলগুলোতে সিসিটিভি ক্যামেরা লাগানোসহ বিকল ক্যামেরাগুলো পরিবর্তনের আশ্বাস দিয়েছে। এছাড়া শিক্ষার্থীদের অভিযোগ জানানোর জন্য একটি কমন প্লাটফর্মের ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে বিআইআইএস বিভাগ জানায় এটি সময় সাপেক্ষ ব্যাপার। তবে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে এর সমাধান হয়ে যাবে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানিয়ে শিক্ষার্থীরা বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সহযোগিতার ফলে আবরার হত্যার সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনা সম্ভব হয়েছে। পাশাপাশি গতকাল শুক্রবার সময় দেয়ার জন্য বুয়েট ভিসি অধ্যাপক ড. সাইফুল ইসলামকেও ধন্যবাদ জানান তারা। বুয়েটে ভর্তি পরীক্ষার কথা মাথায় রেখে আগামী দুই দিন আন্দোলন শিথিল করা হয়েছে। ১০ দফা দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত এ আন্দোলন চলতে থাকবে বলে জানান তারা।