এমপি বুবলির ৮ প্রক্সি পরীক্ষার্থী, শেষ দিনে ধরা

এমপি বলে কথা, সুতরাং যা খুশি তাই করা যায়! তেমনটাই করেছেন নরসিংদীর সংরক্ষিত মহিলা আসনের এমপি তামান্না নুসরাত বুবলি। উন্মুক্ত বিশ্বিবিদ্যালয়ের অধীনে বিএ পরীক্ষায় পাস করতে এক নয়, দুই নয়- আটজন তার পরিবর্তে পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে। অথচ তিনি ঢাকায় অবস্থান করছেন। অবশেষে গতকাল শুক্রবার বিষয়টি ধরা পড়ে। এরপর তার পরীক্ষা বাতিল করা হয়।

এমপি বুবলি (বামে) ও প্রক্সি পরীক্ষার্থী এষা

বুবলি সন্ত্রাসী হামলায় নিহত নরসিংদীর সাবেক পৌর মেয়র লোকমান হোসেনের স্ত্রী। ২০১১ সালের ১ নভেম্বর পৌর মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক লোকমান হোসেন জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে হামলাকারীর গুলিতে নিহত হন।

একটি বেসরকারি টেলিভিশনের অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে যে, বুবলির বিএ পরীক্ষায় পর পর আটটি বিষয়ে প্রক্সি দিয়েছেন অন্য শিক্ষার্থীরা। গতকাল শুক্রবার শেষ পরীক্ষা দিতে গিয়ে হলে হাতেনাতে ধরা পড়েছেন এক শিক্ষার্থী। এ ঘটনায় বুবলীকে বিএ পরীক্ষা থেকে বহিষ্কার করেছে কলেজ কর্তৃপক্ষ।

বিষয়টি অনুসন্ধানে কলেজের পক্ষ থেকে তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এমপি ববুলীর এই জালিয়াতির খবরে এলাকায় নিন্দা ও সমালোচনার ঝড় বইছে। সেইসঙ্গে টিভি চ্যানেলের অনুসন্ধানী প্রতিবেদনের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।

জানা গেছে, উচ্চতর ডিগ্রি অর্জনের লক্ষ্যে উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাউবি) অধীনে চলতি বিএ পরীক্ষায় অংশ নেন বুবলি। কিন্তু নিজে হলে না গিয়ে প্রক্সির মাধ্যমে পরীক্ষা দেওয়ান তিনি। তার হয়ে আটজন পরীক্ষায় অংশ নেন। শেষ পরীক্ষার দিন এ ঘটনা ধরা পড়ে। হাতেনাতে ধরা পড়েন এষা নামের এক তরুণী।

প্রসঙ্গত, একাদশ জাতীয় নির্বাচনের আগে জমা দেয়া হলফনামা অনুযায়ী মহিলা সংরক্ষিত সংসদ সদস্য বুবলী এইচএসসি পাস। তবে নিজের শিক্ষাগত যোগ্যতা বাড়িয়ে নিতে তিনি উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে বিএ কোর্সে ভর্তি হন। অথচ সেই বিএ পাস করার জন্য তিনি অনিয়মের আশ্রয় নেন।

জানা যায়, বাউবির অধীনে বিএ কোর্স এ পর্যন্ত চারটি সেমিস্টার ও ১৩টি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হলেও একটিতেও অংশগ্রহণ করেননি এমপি বুবলি। বিষয়টি সবাই জানলেও ভয়ে কেউ কিছু বলেনি।

জালিয়াতির ঘটনায় হাতেনাতে ধরা পড়ার খবর ছড়িয়ে পড়লে এমপির পক্ষ থেকে এক ব্যক্তি হলে এসে এষা নামের ওই মেয়ে ছাড়িয়ে নিয়ে যায়। এ সময় ওই পরীক্ষার্থীর কাছে আইডি কার্ডও ছিল না।

আইডি কার্ড ছাড়া কীভাবে একজন শিক্ষার্থীকে পরীক্ষায় বসতে দেওয়া হলো এমন প্রশ্নের জবাবে হল পরিদর্শক সাংবাদিকদের বলেন, আইডি কার্ড হারিয়ে গেছে বলে আমাদের জানিয়েছে ওই পরীক্ষার্থী। প্রমাণ হিসেবে সে জিডির কপি নিয়ে এসেছে। তাই তাকে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে দেয়া হয়।