যে শর্তে কাশ্মিরি নেতাদের মুক্তি দিতে চায় ভারত

ভারত অধিকৃত কাশ্মিরের বিশেষ মর্যাদা কেড়ে নেওয়ার আড়াই মাস হচ্ছে। গত ৫ আগস্ট ভারতের হিন্দুত্ববাদী বিজেপি সরকার দেশটির সংবিধানের ৩৭০ ধারা বাতিল করে জম্মু-কাশ্মির রাজ্যের মর্যাদা কেড়ে নেয়। সেইসঙ্গে রাজ্যটিকে ভেঙে কেন্দ্রশাসিত দুটি অঞ্চলে পরিণত করে।

ওই ঘটনার আগেই লাখ লাখ সেনা মোতায়েন করে অবরুদ্ধ করে ফেলা হয় কাশ্মিরিদের। মোবাইল, ফোন, ইন্টারনেটসহ সকল যোগাযোগ বন্ধের পাশাপাশি চলাফেরায় কড়াকড়ি আরোপ করা হয়। ফলে গোটা বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় কাশ্মির। সেইসঙ্গে আটক করা হয় স্থানীয় সব রাজনীতিবিদদের। আজও তারা বন্দিই আছেন।

ভারত সরকারের এই উদ্যোগের সমালোচনা চলছে বিশ্বমহলে। চাপের মুখে পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক করতে রাজনীতিবিদদের মুক্তি দেওয়ার পদক্ষেপ নিয়েছে মোদি সরকার। কিন্তু মুক্তির জন্য যে শর্তারোপ করা হয়েছে তা নিয়েই সমালোচনা চলছে বলে স্থানীয় গণমাধ্যমে বলা হচ্ছে।

ভারতীয় গণমাধ্যমে বলা হয়েছে, রীতিমতো বন্ড সই করে কাশ্মিরি নেতাদের মুক্তি দিতে চায় সরকার। যা প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।

কারণ বন্ডের শর্তে বলা হয়েছে, ‘এক বছরের মধ্যে জম্মু-কাশ্মিরের সাম্প্রতিক বিষয় নিয়ে আমি (যাকে মুক্তি দেওয়া হবে) কোনো বিবৃতি প্রকাশ করব না, কোনো সভা-জমায়েতে বক্তব্য পেশ করব না এবং কোনো র্যা লি-মিছিল-মিটিংয়ে অংশগ্রহণ করব না। কারণ তা শান্তি ও স্থিতিশীলতার পক্ষে বিপজ্জনক হতে পারে।’

বন্ডের দ্বিতীয় শর্ত হলো- ১০ হাজার টাকা অগ্রিম হিসেবে জমা দিতে হবে এবং বন্ডের কোনো শর্ত ভঙ্গ হলে আরও ৪০ হাজার টাকা দিতে হবে।

এই দুই শর্ত লেখা বন্ডে কেউ সই করলেই কেবল তাকে ছাড়া হবে। স্বাভাবিকভাবেই এ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। বাক স্বাধীনতা ও ব্যক্তি স্বাধীনতার অধিকার খর্ব করা হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছেন বিরোধী দলগুলি। সরব হয়েছে কাশ্মিরের বেশ কিছু সংগঠনও।

প্রসঙ্গত, গত সপ্তাহেই জম্মু-কাশ্মিরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ফারুক আবদুল্লাহর মেয়েসহ কয়েকজন নারী একটি শান্তিপূর্ণ র্যা লিতে অংশ নেন। এ সময় তাদের হাতে থাকা ব্যানার-ফেস্টুনে সরকারের সমালোচনামূলক স্লোগান লেখা ছিল। এর পরই তাদের মধ্যে ১১ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। সেইদিন থেকে শান্তিপূর্ণ জমায়েতের ওপরও নিষেধাজ্ঞা জারি করে কাশ্মির প্রশাসন।

তবে আটক কাশ্মিরি রাজনীতিবিদরা ভারত সরকারের এই শর্তে রাজি হয়ে মুক্ত হতে চান কি না তা উল্লেখ করা হয়নি প্রতিবেদনে।