নামাজের জায়গা দখল করে দোকান করার অভিযোগ

জুরাইন বাজার সংলগ্ন রাজউক জামে মসজিদটি সংস্কারের সময় বাজারের পাশের রাস্তায় স্থানীয় কাউন্সিলর এবং সাংসদের মৌখিক অনুমতি নিয়ে নামাজ আদায় করেন মুসল্লিরা। নামাজের জন্য জায়গাটি ইটবালু দিয়ে ঢালাই করে উঁচু করা হয়। এখন ওই জায়গা দখল করে দোকান বসিয়ে চাঁদাবাজি করছেন স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাকর্মীরা। 

ব্যবসায়ীরা বলেন, এটি আসলে বাজারে প্রবেশের রাস্তা। মসজিদ সংস্কারের সময় এখানে অস্থায়ীভাবে নামাজ আদায় করা হতো। মসজিদের কাজ শেষ হলে জায়গাটি খালি পড়ে থাকে। পরবর্তীতে কোরবানির ঈদের সময় ওই জায়গায় গরু বেচাকেনা হয়। ঈদের পরে পদ্মাসেতুর রেললাইনের জন্য সরকারি আদেশ মতে বাজার ভেঙে ফেলা হয়। তখন স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাকর্মীরা এই জায়গায় জনপ্রতি দশ থেকে পনের হাজার টাকা নিয়ে দোকান বসায়।

সরেজমিন দেখা যায়, জুরাইন বাজারের পশ্চিম গেটে অস্থায়ী নামাজের জায়গায় ১৭টি নানা ধরনের দোকান বসেছে। এর মধ্যে মশলার আইটেম এবং মুদি দোকান বেশি। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক ব্যবসায়ী টুয়েন্টিফোর লাইভ নিউজ পেপারকে বলেন, শ্যামপুর থানা জাতীয় পার্টির সেক্রেটারী মো.আসাদ মিয়া আমাদেরকে টাকার বিনিময়ে এখানে দোকান বসাতে বলেন। বাজার ভেঙে ফেলায় আমরাও অসহায় হয়ে পেটের দায়ে এখানে দোকান নিয়ে বসে পড়ি। কিন্তু রাজউকের জায়গায় রাস্তার ওপরে এভাবে দোকান বসানো মোটেও উচিত হয়নি।

অনুসন্ধানে জানা যায়, জুরাইন বাজার ভেঙে ফেলার পর ব্যবসায়ীদের অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে নানানভাবে তাদের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাকর্মীরা। এর মধ্যে জাতীয় পার্টির থানা সেক্রেটারী আসাদ মিয়ার নাম উল্লেখযোগ্য। শুধু এখানেই নয়, আশেপাশেও তিনি রাস্তায়-ফুটপাথে টাকার বিনিময়ে দোকান বাসিয়ে চাঁদাবাজি করছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এ বিষয়ে জাতীয় পার্টির থানা সেক্রেটারি মো. আসাদ মিয়া টুয়েন্টিফোর লাইভ নিউজ পেপারকে বলেন, আমার নামে চাঁদাবাজির অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন এবং মিথ্যা। ধারণা করছি, আমার প্রতিপক্ষরা আমার সুন্দর ইমেজকে নষ্ট করার জন্য এমন মিথ্যা অভিযোগ করতে পারে। তবে এটা সত্যি কথা, অস্থায়ী নামাজের জায়গায় ব্যবসায়ীদের আমিই দোকান বসাতে বলেছি।

এর কারণ ব্যখ্যা করে তিনি বলেন, বাজার ভেঙে দেয়ার পরপর ব্যবসায়ীরা আমাকে ধরে কিছু একটা করার জন্য। তখন আমি তাৎক্ষনিক তাদেরকে এখানে ওখানে দোকান বসাতে বলেছি। তবে এ জন্য একটি পয়সাও ব্যবসায়ীদের থেকে আমি নেইনি।

এ প্রসঙ্গে রাজউক মসজিদের ইমাম মো. নাসির আহমদ টুয়েন্টিফোর লাইভ নিউজ পেপারকে বলেন, আমাদের মসজিদের সংস্কারের সময় আমরা অস্থায়ীভাবে নামাজ আদায় করতাম। এখন আমাদের মসজিদের কাজ শেষ হয়েছে। রাস্তার জায়গা রাস্তাতেই রয়েছে। এর সাথে মসজিদের কোনো বিষয় এখন আর জড়িত নেই।

ডিএসসিরি ৫৪নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর এবং জুরাইন বাজারের সাবেক সভাপতি, রাজউক মসজিদ পোস্তগোলার সেক্রেটারি হাজী মো. মাসুদ টুয়েন্টিফোর লাইভ নিউজ পেপারকে বলেন, রাস্তা দখল করে দোকান বসানোর বিষয়টি এতদিন আমি জানতাম না। কয়েকদিন আগে বিষয়টি জানতে পেরেছি। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেবো।