লবণ নিয়ে বিভ্রান্তি, কোনো সংকট নেই

এবার লবণের দাম নিয়ে বিভ্রান্ত্রিতে পড়েছেন দেশবাসী। লবণের দাম ১০০ টাকা ছাড়িয়ে যাবে এমন খবরে রাজধানীতে লবণ কেনার হিড়িক পড়েছে। তবে এক বিজ্ঞপ্তিতে শিল্প মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, দেশে বর্তমানে সাড়ে ৬ লাখ মেট্রিক টনের বেশি ভোজ্যলবণ মজুত আছে। এ নিয়ে বিভ্রান্ত হবার কোনো কারণই নেই।

দেশে লবণের যথেষ্ট মজুদ রয়েছে

আজ মঙ্গলবার রাজধানীর কারওয়ান বাজারে সাপ্তাহিক ছুটি থাকা সত্ত্বেও দোকানগুলোতে লবণ কিনতে ভিড় জমিয়েছেন অনেকে। দুই কেজি, পাঁচ কেজি করে লবণ কিনে নিয়ে যাচ্ছেন অনেকে। অনেক ব্যবসায়ীকে বন্ধ দোকান খুলেও লবণ বিক্রি করতে দেখা গেছে। সেখানের বিক্রেতারা প্যাকেটের গায়ে লেখা সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য (এমআরপি) অনুযায়ী ৩৫ টাকা দরেই লবণ বিক্রি করছিলেন।

বাজারে বর্তমানে সবচেয়ে ভালো মানের লবণের সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য ৩৫ টাকা। আর সাধারণ লবণের সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য ২৫ টাকা। খুচরা বিক্রেতা প্রতি কেজি লবণ ক্রয় করেন ২৫ থেকে ২৬ টাকা দরে। এত দিন কারওয়ান বাজারের মতো বড় দোকানে এসব লবণ ৩০ টাকা কেজি দরে পাওয়া যেত।

আজ সকালে ক্রেতাদের বাড়তি চাপ দেখে ছাড় দিচ্ছেন না খুচরা বিক্রেতারা। আবার দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে চড়া দামে লবণ বিক্রির খবর শোনা গেছে। গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় লবণের দাম বাড়ছে এমন গুজবে সিলেটের কমলগঞ্জের বিভিন্ন হাট বাজারের দোকানে হুমড়ি খেয়ে পড়েন ক্রেতারা। এর সুবিধা নিয়ে ব্যবসায়ীরা কেজি প্রতি ৮০-১০০ টাকায় লবণ বিক্রি করেন বলে অভিযোগ ওঠে। পরে এ অভিযোগে সেখানে এক ব্যবসায়ীকে জরিমানাও করে পুলিশ।

এছাড়া রাজধানীর তেজগাঁও, আগারগাঁও, কাজীপাড়া ও বেগুনবাড়ি এলাকার বিভিন্ন বাজার ও মুদি দোকানেও লবণ কিনতে ক্রেতাদের বাড়তি ভিড় দেখা গেছে।

পেঁয়াজের মতো আকাশচুম্বী দাম হয় কি না, একথা চিন্তা করে অনেক ক্রেতাই লবণ কিনে রাখছেন।

বর্তমান লবণের বাজারের অন্যতম শীর্ষ প্রতিষ্ঠান এসিআই সল্টের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, লবণের কোনো প্রকার ঘাটতি নেই। লবণের দাম বাড়ানো হয়নি এবং আপাতত বাড়ানোর কোনো সম্ভাবনাও নেই। বরং নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বেশি দামে তাদের লবণ কেউ বিক্রি করছেন কি না, সে ব্যাপারে নজর রাখার আশ্বাস দিয়েছেন তারা।

এদিকে শিল্প মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, দেশে বর্তমানে ৬.৫ লাখ মেট্রিক টনের বেশি লবণের মজুত রয়েছে। এর মধ্যে কক্সবাজার ও চট্টগ্রামের লবণ চাষিদের কাছে ৪.৫ লাখ মেট্রিক টন এবং বিভিন্ন লবণ মিলের গুদামে ২.৪৫ লাখ মেট্রিক টন লবণ মজুত রয়েছে। চলতি মাস থেকে লবণের উৎপাদন মৌসুম শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যে কক্সবাজার জেলার কুতুবদিয়া ও মহেশখালী উপজেলায় উৎপাদিত নতুন লবণও বাজারে আসতে শুরু করেছে।

সারাদেশে বিভিন্ন লবণ কোম্পানির ডিলার, পাইকারি ও খুচরা বিক্রেতাদের কাছে পর্যাপ্ত পরিমাণে লবণ মজুত রয়েছে বলেও জানিয়েছে সরকার।

লবণের কোনো ধরনের ঘাটতি বা সংকট হবার প্রশ্নই ওঠে না উল্লেখ করে সরকার দাবি করেছে, একটি স্বার্থান্বেষী মহল লবণের সংকট রয়েছে এমন গুজব রটনা করে অধিক মুনাফা লাভের আশায় লবণের দাম অস্থিতিশীল করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে বলে প্রতীয়মান হচ্ছে।

এ ধরনের গুজবে বিভ্রান্ত না হতে সকলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে শিল্প মন্ত্রণালয়। তাছাড়া লবণ সংক্রান্ত বিষয়ে তদারকির জন্য শিল্প মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে বিসিকের প্রধান কার্যালয়ে ইতিমধ্যে একটি কন্ট্রোল রুম (০২-৯৫৭৩৫০৫, ০১৭১৫-২২৩৯৪৯) খোলা হয়েছে।