‘সন্তানরা আরেকবার রাস্তায় নামলে কারও পিঠের চামড়া থাকবে না’

সন্তানরা আরেকবার রাস্তায় নামলে কারো পিঠের চামড়া থাকবে না বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার মো. শফিকুল ইসলাম। বৃহস্পতিবার রাজধানীর রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সে আয়োজিত ট্রাফিক সচেতনতামূলক পক্ষ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন।

রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সে ট্রাফিক সচেতনতামূলক পক্ষ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার মো. শফিকুল ইসলাম

শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘সড়কে শৃঙ্খলা আনার এটাই শেষ সুযোগ। আরেকবার যদি আমাদের সন্তানরা রাস্তায় নামে, তাহলে কারো পিঠের চামড়া থাকবে না। সেটা আমি পুলিশ কমিশনারই হই, আর আপনি পরিবহন মালিক সমিতির বড় নেতাই হোন।'

তিনি আরো বলেন, নতুন 'সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮' কার্যকর হওয়ার পরও যদি পরিবহন মালিক-শ্রমিক ও পুলিশ মিলে সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে ব্যর্থ হয়, তাহলে সন্তানরা সবাইকে রাস্তা থেকে তুলে দেবে। তখন রাস্তায় মালিক-শ্রমিক-পুলিশ কেউই নামতে পারবেন না। এমনকি তিনিও ডিউটি করতে পারবেন না।

সহ্যের একটা সীমা থাকে উল্লেখ করে ডিএমপি কমিশনার বলেন, ধরুন পরিবহন মালিক-শ্রমিকের একটি ভুলে বা পুলিশের একটি ত্রুটির কারণে এমন একজন মানুষ সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেল, যার ছোট দুটি সন্তান রয়েছে এবং তাদের ভরণ-পোষণের দায়িত্ব নেয়ার মতো পরিবারে আর কোন কর্মক্ষম ব্যক্তি নেই। দুর্ঘটনার শিকার সেই মানুটির কথা, তার সন্তানদের কথা কি কেউ চিন্তা করে? সড়কে সন্তানরা রক্তাক্ত হবে আর পরিবহন মালিকরা বছরের পর বছর আনফিট গাড়ি এবং অদক্ষ চালক দিয়ে রাস্তায় গাড়ি পরিচালনা করবে, এটা জনগণ বেশিদিন সহ্য করবে না।

পুলিশ লাইন্স মাঠে বেলুন উড়িয়ে ট্রাফিক সচেতনতামূলক পক্ষ উদ্বোধন করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল

নতুন আইন সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার উদ্দেশে কার্যকর করা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, জরিমানা আদায়ের উদ্দেশে এই আইন কার্যকর করা হয়নি। রাজধানীতে প্রতিমাসে ৬-৭ কোটি টাকা জরিমানা করা হয়। যা সরকারের কাছে একেবারেই নস্যি। সরকারে জরিমানার উদ্দেশে এই আইন কার্যকর করেনি।

শফিকুল ইসলাম আরো বলেন, ডিএমপি কমিশনার হিসেবে যোগদানের পর তিনি ট্রাফিক পুলিশে দায়িত্বরতদের বলেছেন, মামলার কোন টার্গেট নেই। সড়কে যদি সকলে শৃঙ্খলা বজায় রাখে তাহলে মামলার কোন প্রয়োজন নেই। সড়ক আইন মেনে চলাটাই মূখ্য বিষয়।

রেকারিং প্রসঙ্গে তিনি বলেন, অচল গাড়ি বা গাড়ি রেখে চালক দীর্ঘ সময় লাপাত্তা এমন গাড়িকে রেকারিংয়ে দেয়া হবে। এর বাহিরে যেসব গাড়ির কাগজপত্র ঠিক নেই সেসব গাড়িকে রেকারিংয়ে দেয়া হবে।

এর আগে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল পুলিশ লাইন্স মাঠে বেলুন উড়িয়ে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন। ডিএমপিতে আগামী ৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলবে এ ট্রাফিক সচেতনতামূলক পক্ষ।