সিইসি: নির্বাচন সমন্বয়কের দায়িত্বে থাকতে পারবেন না আমু-তোফায়েল

আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য আমির হোসেন আমু ও তোফায়েল আহমেদ আসন্ন ঢাকা দুই সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীদের পক্ষে সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করতে পারবেন না বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা।

শনিবার দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন ভবনে তোফায়েল আহমেদের নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগের একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক শেষে সিইসি কে এম নূরুল হুদা সাংবাদিকদের এ কথা জানান।

তিনি বলেন, নির্বাচনী আচরণ বিধি অনুযায়ী সংসদ সদস্যরা ঘরে বা বাইরে কোথাও নির্বাচন সংক্রান্ত কাজে অংশ নিতে পারবেন না। এমনকি দলীয় প্রার্থীর নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণায়ও অংশগ্রহণ করতে পারবেন না। 

সংসদ সদস্য আমির হোসেন আমু ও তোফায়েল আহমেদকে আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থীদের নির্বাচনী সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করতে পারেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, এটা মনে হয় তারা পারেন না। তাদের কি দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তা তিনি জানেন না। এ ব্যাপারে তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে কোন চিঠি পাননি। যদি পান তখন তাদের নিষেধ করবেন। 

তবে সংসদ সদস্যরা নির্বাচনের বাইরে যে কোন কাজ বা রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড চালিয়ে যেতে পারবেন উল্লেখ করে সিইসি আরো বলেন, নির্বাচনের বাইরের কাজ থেকে সংসদ সদস্যদের নিষ্ক্রিয় করার কোন সুযোগ নেই। তারা ঘরে বসে বা পাড়া-মহল্লায় মিটিং করতে পারবেন এতে কোন বাধা নেই।

আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি দল আজকে সিইসির সঙ্গে যে বৈঠক করেছে- তা তারা করতে পারেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে কেএম নূরুল হুদা বলেন, প্রতিনিধি দলের সদস্যরা তাদের দলীয় প্রার্থী বা দলের কোন কথা নিয়ে এখানে আসেনি। তারা এসেছে নির্বাচনী আচরণ বিধি সম্পর্কে জানতে। এ ব্যাপারে তারা বৈঠক করতে পারেন।

প্রসঙ্গত, সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের আচরণ বিধিমালার ২২ নম্বর ধারার ১ নম্বর উপধারা অনুযায়ী, ‘সরকারি সুবিধাভোগী অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি এবং কোনো সরকারি কর্মকর্তা বা কর্মচারী নির্বাচন পূর্ব সময়ে নির্বাচনী এলাকায় প্রচারণায় বা নির্বাচনী কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না।’

সরকারি সুবিধাভোগী অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা হলেন- প্রধানমন্ত্রী, জাতীয় সংসদের স্পিকার, ডেপুটি স্পিকার, মন্ত্রী, উপমন্ত্রী বা তাদের সমপদমর্যাদার কোন ব্যাক্তি, চিফ হুইপ, হুইপ, সংসদ উপনেতা, বিরোধী দলীয় নেতা, বিরোধী দলীয় উপনেতা, সংসদ সদস্য এবং সিটি কর্পোরেশনের মেয়র।

এসব সরকারি সুবিধাভোগী গুরুত্বপূর্ণ ব্যাক্তিদের নির্বাচনী আচরণ বিধিমালা সম্পর্কে বুঝিয়ে বলা হয়েছে উল্লেখ করে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, তারা কোন প্রার্থীদের পক্ষে বা বিপক্ষে কোন কথা বলতে পারবেন না। তবে নিজেদের রাজনৈতিক কর্মসূচি গ্রহণ করতে পারবেন।

অন্যদিকে সিইসির আগে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও সংসদ সদস্য তোফায়েল আহমেদ দাবি করেন, আসন্ন ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনে সংসদ সদস্যরা প্রার্থীদের পক্ষে ভোট চাইতে পারবেন না। তবে ঘরোয়াভাবে তারা নির্বাচন নিয়ে বৈঠক করতে পারবেন।

উল্লেখ্য, আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য আমির হোসেন আমু ও তোফায়েল আহমেদকে ঢাকা দুই সিটির নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীদের সমন্বয়কের দায়িত্ব দিয়েছে ক্ষমতাসীন দলটি। ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আতিকুল ইসলামের নির্বাচনী সমন্বয়কের দায়িত্ব পেয়েছেন তোফায়েল আহমেদ এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপসের নির্বাচনী সমন্বয়কের দায়িত্ব পেয়েছে আমির হোসেন আমু।

এদিকে ঢাকা সিটির নির্বাচন পরিচালনার জন্য বিএনপির পক্ষ থেকে দায়িত্ব পেয়েছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ ও ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন। এর মধ্যে ডিএনসিসির দায়িত্ব পেয়েছেন মওদুদ এবং ডিএসসিসির দায়িত্ব পয়েছেন মোশাররফ। দলীয় প্রতীকে উত্তরে বিএনপির প্রার্থী তাবিথ আওয়াল এবং দক্ষিণে ইশরাক হোসেন।