আপনি পড়ছেন

ইরানের সঙ্গে পশ্চিমা দেশগুলোর সর্ম্পকের অবনতি ঘটে মূলত ১৯৭৯ সালের ইসলামিক বিপ্লবের পর থেকেই। যার প্রভাব পড়ে বাকি দেশগুলোর সঙ্গে যোগাযোগেও। ইরানের সেনা প্রধান নিহত হওয়ার পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যুদ্ধ বেঁধে যাওয়ায় মত অবস্থা তৈরি হয়েছে। এই সময় আলোচিত প্রশ্ন হলো ইরান কী পারবে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে? ইরানের শত্রু এবং বন্ধু সম্পর্কে ধারণা থাকলেই আঁচ করা যাবে এ প্রশ্নের উত্তর। আসুন জেনে নিই, ইরানের বন্ধু ও শত্রু দেশগুলো সম্পর্কে।

usa iran flag

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দা-কুমড়ার সম্পর্ক

১৯৫৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতায় মোসাদ্দেক সরকার উৎখাত হওয়ার পর ইরানের ক্ষমতায় আসেন রেজা শাহ পাহলভি। পরর্বতী ২৬ বছর ইরান-যুক্তরাষ্ট্র ছিল একে অপরের বন্ধু। ১৯৭৯ সালের ইসলামিক বিপ্লবে শাহ ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর এই সম্পর্ক শত্রুতায় রূপ নেয়। ১৯৮০ সাল থেকে দুই দেশের মধ্যে কোনও কূটনৈতিক সম্পর্ক নেই। একে অপরকে তারা সন্ত্রাসী রাষ্ট্র হিসেবেও অ্যাখ্যায়িত করেছে।

বিশ্বাসঘাতক ইসরায়েল

ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দেওয়া দ্বিতীয় মুসলিম দেশ ইরান (১৯৫০ সাল)। রেজা শাহের শাসনকালে দুই দেশের মধ্যে আন্তরিক সম্পর্ক ছিল। ১৯৭৯ সালে খোমেনি ক্ষমতায় এসে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে ইসরায়েলকেও শত্রু হিসেবে চিহ্নিত করেন। তেহরান পরমাণু অস্ত্র বানাচ্ছে, ১৯৯০ সালের পর থেকে এমন অভিযোগ করে আসছে ইসরায়েল। দেশটির বিরুদ্ধে হামাস ও হেজবোল্লাহকে মদদ দেয় ইরান। অন্যদিকে ইরানের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রেকে সমর্থন দেয় ইসরায়েল।

চিরশত্রু সৌদি আরব

মধ্যপ্রাচ্যে ক্ষমতা বিস্তারের লড়াইয়ে ইরানের চিরশত্রু সৌদি আরব। ১৯৭৯ সালে তেহরানের ক্ষমতায় পরিবর্তন আসার পর থেকেই তা প্রকট আকার ধারণ করেছে। দুই দেশ কখনও সরাসরি যুদ্ধে না জড়ালেও চলছে তাদের ছায়াযুদ্ধ। মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে তারা একে অপরের বিরুদ্ধে বিবদমান গোষ্ঠীগুলোকে সহায়তা দেয়। গত বছরের সেপ্টেম্বরে সৌদির দুইটি তেলক্ষেত্রে হামলার পেছনে ইরান রয়েছে বলে দাবি করেছে রিয়াদ।

শত্রু  থেকে বন্ধু বনে যায় রাশিয়া

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ইরানে আস্তানা গাড়ে সোভিয়েত ইউনিয়ন। যুদ্ধ শেষ হওয়ার পরও কয়েকবছর দখলদারি বজায় রাখে তারা। শাহের শাসনামলেও সম্পর্ক ভাল ছিল না। এমনকি ইরাক-ইরান যুদ্ধে সাদ্দামকে সহায়তা দিয়েছিল সোভিয়েত ইউনিয়ন। তবে ১৯৯১ সালের পর থেকে ধীরে ধীরে ইরান হয়ে ওঠে মধ্যপ্রাচ্যে রাশিয়ার কৌশলগত অংশীদার।

শীতল সম্পর্ক ইউরোপের সঙ্গে

ইরানের ইসলামিক বিপ্লবের পর ইউরোপের সঙ্গেও তেহরানের সম্পর্ক শীতল হয়ে ওঠে। তবে প্রেসিডেন্ট আলী আকবর রাফসানজানির সময়ে এই সম্পর্ক পুনঃস্থাপিত হয়। পরমাণুসহ বিভিন্ন ইস্যুতে ইইউ বরাবরই ইরানের সঙ্গে আলোচনার উপর জোর দিয়ে আসছে। ২০১৮ সালে যুক্তরাষ্ট্র ইরানের সঙ্গে পরমাণু কার্যক্রম স্থগিতকরণ চুক্তি বাতিল করলেও ইউরোপের দেশগুলো তা এখনও বজায় রেখেছে।

বাণিজ্যিক বন্ধু  চীন

১৯৮০ সালে ইরান-ইরাক যুদ্ধে তেহরানকে অস্ত্র সরবরাহ করেছিল চীন। বেইজিংয়ের শীর্ষ তিনটি অস্ত্র ক্রেতা দেশের একটি ইরান। অন্যদিকে ইরানের সবচেয়ে বড় বাণিজ্য অংশীদার চীন। যদিও যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার পর সেখান থেকে তেল আমদানি ব্যাপকভাবে কমিয়ে দিতে হয়েছে চীনকে। কাসেম সোলায়মানিকে হত্যাকাণ্ডের পর চীন জানিয়েছে তেহরানের সঙ্গে বেইজিংয়ে সম্পর্ক অটুট থাকবে।

বন্ধু এখন ইরাকও

সাদ্দাম হোসেনের চালানো হামলা থেকে শুরু হওয়া ইরাক-ইরান যুদ্ধ অব্যাহত ছিল আট বছর। তবে বর্তমানে বাগদাদের শিয়া নেতৃত্বাধীন সরকারের সাথে সুসম্পর্ক রয়েছে তেহরানের। দেশটির একাধিক সশস্ত্র গোষ্ঠীকেও সামরিক সহযোগিতা দিয়ে আসছে ইরান। এইসব গোষ্ঠী বিভিন্ন সময়ে ইরাকে অবস্থানরত মার্কিন বাহিনীর ওপর হামলা চালানোর অভিযোগ রয়েছে।

সহযোগী হিজবুল্লাহ, হামাস, হুতি

কথিত আছে লেবাননের হেজবোল্লাহ গোষ্ঠীর উত্থান ইরানের মাধ্যমেই। তাদের মূল টার্গেট মধ্যপ্রাচ্যে ইরানের শত্রু ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের আস্তানাগুলো। ২০১৮ সালে হেজবোল্লাহ ও তাদের জোট দেশটির নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে। যার মধ্য দিয়ে লেবাননের সরকারে ইরানের প্রভাব আরো বেড়েছে। এছাড়াও ইয়েমেনে হুতি বিদ্রোহী আর ফিলিস্তিনের হামাস ইরানের মিত্রশক্তি।

পাশে আছে বাংলাদেশ

১৯৭১ সালের পর থেকে ইরানের সঙ্গে বাংলাদেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক। বিভিন্ন সময়ে দুই দেশের রাষ্ট্রীয় সফর অনুষ্ঠিত হয়েছে৷ ১৯৯৫ সালে প্রেসিডেন্ট রাফসানজানি ঢাকা এসেছিলেন। গত বছরের সেপ্টেম্বরে আসেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাভেদ জারিফ। অক্টোবরে বাকুতে ন্যাম সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসার রুহানি ‘সাইডলাইন বৈঠক’ করেন। গত অর্থবছরে বাংলাদেশ ১.৭৭ কোটি ডলারেরর পণ্য রপ্তানি করেছে দেশটিতে।

গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...

খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর

Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.

Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.