ইসি রফিকুল: বুথ দখল করলে ইভিএমেও জাল ভোট দেয়া সম্ভব

নির্বাচনে ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) প্রোগ্রামিং এর মাধ্যমে কাউকে সাহায্য করা সম্ভব নয় জানিয়ে নির্বাচন কমিশনার (ইসি) রফিকুল ইসলাম বলেন, তবে ভোট কেন্দ্রের বুথ দখল করে ইভিএমও এ জাল ভোট দেয়া সম্ভব। শুক্রবার রাজধানীর আজিমপুর গভার্মেন্ট গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের (প্রিজাইডিং অফিসার, সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার) নিয়ে আয়োজিত এক প্রশিক্ষণ কর্মশালায় তিনি এসব কথা বলেন।

রফিকুল ইসলাম বলেন, ভোটাররা কেন্দ্রে এসে ইভিএম এ আঙ্গুলের ছাপ দিয়ে ব্যালট পেপার নিলো, ভোটগ্রহণ কর্মকর্তারা সেটি ইস্যুও করলো। এমন সময় কেউ যদি দৌড়ে এসে তার ব্যালট পেপারটা ছিনিয়ে নিয়ে পছন্দমতো প্রার্থীকে ভোট দিয়ে দেয়, তাহলে কিন্তু জাল ভোট দেয়া সম্ভব।

ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের একদিনের জন্য 'রাজা' উল্লেখ করে ইসি আরো বলেন, নির্বাচনে ভোট গ্রহণের দিনের জন্য প্রিজাইডিং অফিসার ও সহকারী প্রিজাইডিং অফিসাররা হলেন নিজ নিজ কেন্দ্রের রাজা। যেহেতু একদিনের জন্য তারা রাজা হয়েছেন, সেহেতু তাদের প্রথম দায়িত্বটা হচ্ছে নিজেদের রাজত্বটা চিহ্নিত করা। যেসব কেন্দ্র বা স্কুলের কোন সীমান প্রাচীর নেই সেখানে অন্তত একটি বাঁশ দিয়ে হলেও তাদের সীমানা প্রাচীর নির্ধারণ করা উচিত।

তিনি আরো বলেন, নির্বাচনের দিন প্রতিটি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের সঙ্গে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা থাকবেন। ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের কাজ হলো এসব আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের দায়িত্ব দেয়া, যাতে কোন অবস্থাতেই বিনা অনুমতিতে কেউ তাদের সীমানার মধ্যে প্রবেশ না করতে পারে।

ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের হুঁশিয়ারি দিয়ে ইসি আরো বলেন, বিনা অনুমতিতে রাজত্বে প্রবেশকারীদের যদি ঠেকাতে ব্যর্থ হন, তাহলে তার জন্য ওই কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার ও সহকারী প্রিজাইডিং অফিসাররা দায়ী থাকবেন। রাজা হিসেবে প্রিজাইডিং অফিসারের দায়িত্ব হচ্ছে নিজের রাজত্ব রক্ষা করা। ঠিক একইভাবে ভোট গ্রহণের কক্ষটি হচ্ছে সহকারী প্রিজাইডিং অফিসারের তালুককেন্দ্র। তাকে তার তালুকটাকে রক্ষা করতে হবে।

বাঙালি জাতিকে 'অসহিষ্ণু' উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, লাইন দেখলেই বাঙালি জাতি তা ভাঙতে চাইবে। লাইন নিয়ে মারামারি করবে। আর তার দায়টা পড়বে আপনার ঘাড়ে।

সরস্বতী পূজার দিন ঢাকা দুই সিটির নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি আরো বলেন, কারোর ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করার জন্য নির্বাচনের ভোট গ্রহণের তারিখ নির্ধারণ করা হয়নি। নির্বাচন কমিশন এ নিয়ে বিপদের মধ্যে আছে। তারা একটি সুষ্ঠু, আইনানুগ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করতে চান।