আখাউড়ায় করোনাভাইরাসের পরীক্ষা হচ্ছে থার্মোমিটারে!

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় আন্তর্জাতিক ইমিগ্রেশন চেকপোস্টে করোনাভাইরাস পরীক্ষার জন্য স্থাপন করা হয়েছে একটি হেলথ ডেক্স। কিন্তু সেখানে পর্যাপ্ত যন্ত্রপাতি নেই। হেলথ ডেক্সের কর্মীদের কাছে করোনাভাইরাস সনাক্তের জন্য আছে মাত্র একটি থার্মোমিটার ও স্টেথিস্কোপ।

চীনে করোনাভাইরাস দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। আজ বৃহস্পতিবার পর্যন্ত দেশটিতে ১৭০ জন এ ভাইরাসে সংক্রমিত হয়ে মারা গেছেন। ভাইরাসটি ইতোমধ্যে আরো কয়েকটি দেশেও ছড়িয়ে পড়েছে। এমন বাস্তবতায় বাংলাদেশের প্রতিটি ইমিগ্রেশনে স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে বসানো হয়েছে হেলথ ডেক্স। প্রতিটি ডেক্সে ধারাবাহিকভাবে একজন করে মেডিকেল টেকনোলজিস্ট এবং কমিউনিটি হেলথ প্রোপাইটর থাকার নির্দেশনা রয়েছে। সে মোতাবেক গত রোববার সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার হেলথ ডেক্সটি স্থাপন করা হয়।

কিন্তু ব্রাহ্মণবাড়িয়ার হেলথ ডেক্সে একরকম যন্ত্রপাতিহীন অবস্থায় কার্যক্রম পরিচালিত হওয়ায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন দুই দেশে চলাচলরত যাত্রীরা।

এক বাংলাদেশি যাত্রী জানান, বাংলাদেশের এই প্রান্ত দিয়ে অনেকেই ভারত হয়ে চীনে যাতায়াত করে থাকেন। যার ফলে সেখান থেকে যারা প্রবেশ করছেন তাদের পর্যাপ্ত পরীক্ষা করার প্রয়োজন অনেক বেশি। কিন্তু আখাউড়া আন্তর্জাতিক ইমিগ্রেশন চেকপোস্টের হেলথ ডেক্সে আধুনিক কোনো যন্ত্রপাতি নেই। করোনাভাইরাসের পরীক্ষা তারা করছেন একটি থার্মোমিটার ও স্টেথিস্কোপ দিয়ে।

ভারত থেকে আসা আরেকজন বলেন, যেসব মানুষ এক দেশ থেকে অন্য দেশে যাতায়াত করছেন তাদের সতর্কতার সাথে পরীক্ষা করতে হবে। যারা ইমিগ্রেশন চেকপোস্টে আসছেন তাদের শুধু জিজ্ঞাসাবাদ করেই ছাড়া যাবে না। পর্যাপ্ত পরীক্ষা-নিরীক্ষারও প্রয়োজন আছে।

এ বিষয়ে হেলথ ডেক্সের দায়িত্বে থাকা আখাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল টেকনোলজিস্ট গোকুল চন্দ্র মণ্ডল, নাজমুল আলম ও মাহাবুবুল জানান, তারা নিয়ম করে দায়িত্ব পালন করছেন। করোনাভাইরাস নিরীক্ষণের জন্য তাদের কাছে কোনো অত্যাধুনিক যন্ত্র নেই। তাই থার্মোমিটার ও স্টেথিস্কোপ দিয়েই যাত্রীদের পরীক্ষা করতে হচ্ছে। তবে চীন থেকে ফেরত কোনো যাত্রীর যদি ঠাণ্ডা-কাশি থাকে তাহলে তাকে আখাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে পরীক্ষা করানো হবে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সিভিল সার্জন ডা. মো. শাহ আলম হেলথ ডেক্সে পর্যাপ্ত যন্ত্রপাতির অভাবের তথ্যটি স্বীকার করেছেন। থার্মোমিটারের ব্যবহার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সব জায়গায় থার্মাল স্ক্যানার মেশিন স্থাপন করা সম্ভব নয়। তাই সন্দেহভাজনদের জিজ্ঞাসা করা হচ্ছে। যারা চীন থেকে এসে বাংলাদেশে প্রবেশ করছেন এবং যাদের শরীরে জ্বর-সর্দি, কাশি আছে তাদের পরীক্ষার আওতায় আনা হচ্ছে।

উল্লেখ্য, আখাউড়া স্থলবন্দরের আন্তর্জাতিক ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট দিয়ে প্রতিদিন এক থেকে দেড় হাজার যাত্রী ভারত-বাংলাদেশে যাতায়াত করে থাকেন।