নিরুত্তাপ হরতালে যান চলাচল স্বাভাবিক

ঢাকার দুই সিটি নির্বাচনের ফল প্রত্যাখ্যান করে রাজধানীতে সকাল-সন্ধ্যা হরতালের ডাক দিয়েছে বিএনপি। এতে সমর্থন দিয়েছে জাতীয় জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। তবে হরতালে কোনো উত্তাপ নেই, আর যানবাহন চলাচলও স্বাভাবিক। যদিও অন্যদিনের তুলনায় যানবাহনের সংখ্যা কম।

বিএনপির ঘোষণা অনুযায়ী, রোববার সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত হরতাল চলবে। কিন্তু হরতাল উপলক্ষে দলটির নেতাকর্মীদের রাজপথে নামার তেমন কোনো সংবাদ পাওয়া যায়নি। শুধু বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে দলের সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর নেতৃত্বে মিছিল করার খবর পাওয়া গেছে।

এ ছাড়া সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।

রাজধানীর বিজয় সরণি, পান্থপথ, গুলশান, মালিবাগ, খিলগাঁও, মিরপুর, ধানমন্ডি ও কাওরান বাজারসহ বিভিন্ন এলাকায় রাস্তায় বাস, ট্রাক, রিকশা, প্রাইভেট কারসহ সব ধরনের যানবাহন চলাচল করতে দেখা গেছে। তবে অন্য দিনের তুলনায় সকালে রাস্তা কিছুটা ফাঁকা ছিল। যানজট খুব বেশি ছিল না।

মিরপুর থেকে বাসে ধানমন্ডিতে কর্মস্থলে এসেছেন জামিল। তিনি জানান, রাস্তায় সব ধরনের যানবাহন চলতে দেখেছেন। তবে অন্য দিনের মতো যানজট পাননি। অল্প সময়েই তিনি কর্মস্থলে চলে আসতে পেরেছেন।

তানভীর রায়হান খিলগাঁও থেকে এসেছেন ধানমন্ডিতে। তিনি জানান, রাস্তায় সব ধরনের যানবাহন দেখেছেন। তবে রাস্তা ফাঁকা ছিল।

এদিকে, হরতাল উপলক্ষে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। সেইসঙ্গে নগরের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে অতিরিক্ত পুলিশ সদস্যের উপস্থিতি লক্ষ করা গেছে।

প্রসঙ্গত, গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এই হরতালের কর্মসূচি ঘোষণা করেন।

এর পর বিএনপির হরতালে সমর্থন জানায় জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। ঐক্যফ্রন্টের দপ্তর প্রধান জাহাঙ্গীর আলম রাতে সাংবাদিকদের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

তার আগে সিটি নির্বাচন প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘নির্বাচনের নামে আরেকটা তামাশা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আমরা মনে করি, এটা (নির্বাচন) এতটুকু অবাধ ও সুষ্ঠু হয়নি। এই নির্বাচনেও সরকার আগের নির্বাচনের মতোই রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করেছে। নির্বাচন কমিশনকে ব্যবহার করে তাদের মতো করে দখল করেছে।’

হরতালের ঘোষণা দিয়ে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘আমরা আশা করব, ঢাকাবাসী তাদের অধিকার রক্ষার জন্য এবং গণতন্ত্রকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য সহযোগিতা করবে। আমরা এই নির্বাচন সম্পূর্ণভাবে প্রত্যাখ্যান করছি।’

অন্যদিকে, হরতাল ঘোষণার পর তা কঠোরভাবে প্রতিহত করার ঘোষণা দেয় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। দলের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ সাংবাদিকদের এ কথা জানান।

পাশাপাশি পরিবহন মালিক সমিতির পক্ষ থেকে হরতালে গাড়ি চালানোর ঘোষণা দিয়েছেন।

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন সমিতির সভাপতি মসিউর রহমান ও মহাসচিব খোন্দকার এনায়েত উল্লাহ শনিবার দিনগত রাতে এক বিবৃতিতে বলেন, হরতালে বাস চলাচল স্বাভাবিক থাকবে। বাস ভাঙচুর ও আগুন দেওয়া হলে দায়দায়িত্ব বিএনপিকে নিতে হবে।

উল্লেখ্য, শনিবার ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এতে উভয় সিটিতে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী আতিকুল ইসলাম ও শেখ ফজলে নূর তাপস বিপুল ভোটের ব্যবধানে জয় পান।