ইনিংস হারই যেন বাংলাদেশের নিয়তি

টেস্টখেলুড়ে দেশের মর্যাদা বাংলাদেশ পেয়েছে প্রায় দুই দশক হবে। কিন্তু কুড়ি বছর ধরে খেলেও দীর্ঘ পরিসরের ক্রিকেটে মাথা তুলে দাঁড়াতে পারছে না টাইগাররা। ঘরের মাঠে কন্ডিশনের সুবিধা নিয়ে কয়েকটা ম্যাচ জিতলেও বিদেশের মাটিতে টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশ দলের হতাশা যেন কৃষ্ণ গহ্বরে। ইনিংস হারই যেন নিয়তি।

সবশেষ আজ সোমবার আরো একটা টেস্টে ইনিংস ব্যবধানে হারল টাইগাররা। পাকিস্তানের বিপক্ষে দুই ম্যাচের সিরিজের প্রথম টেস্টে ইনিংস ও ৪৪ রানে হেরেছেন মুমিনুল-মাহমুদুল্লাহরা। অথচ ১৭ বছর আগে শেষবার পাকিস্তানে খেলতে এসে মহানাটকীয় ম্যাচে এক উইকেটে হেরেছিল বাংলাদেশ।

দেড় দশকেরও বেশি লম্বা এই সময়ে বদলেছে অনেককিছুই। কিন্তু বিদেশের মাটিতে টেস্টে বাংলাদেশের পারফরম্যান্স বদলাল না। ইনিংস হার যেন টাইগারদের জন্য অবধারিত হয়ে উঠছে। সম্ভ্রম বাঁচাতে আজ চতু্র্থ দিন করতে হতো অন্তত ৮৭ রান। আগের দিন মুমিনুল হক অজেয় ছিলেন ৩৭ রানে। মান বাঁচানোর দায়িত্বটা ছিল অধিনায়কের ছোট্ট কাঁধে।

কিন্তু পারলেন না তিনি। আজ সবার আগে ফিরলেন অধিনায়ক। ৪১ রানে সাজঘরে ফেরেন মুমিনুল। আটে নেমে ২৬ রান করেছেন লিটন দাস। শেষ সাত ব্যাটসম্যানের ছয় জনই যেতে পারলেন না দুই অংকে। আজ দেড় ঘণ্টার মধ্যেই থেমে গেল বাংলাদেশের দ্বিতীয় ইনিংসের রানের চাকা। ১৬৮ রানে গুটিয়ে যাওয়া টাইগাররা প্রথম ইনিংসে করেছিল ২৩৩ রানে। ‍ওদিকে প্রথম ইনিংসে পাকিস্তান করে ৪৪৫ রান।

হ্যাটট্রিকসহ দুই ইনিংসে পাঁচ উইকেট পাওয়ায় ম্যাচ সেরা হয়েছেন নাসিম শাহ। কারণ অতিথিদের দ্বিতীয় ইনিংসে ধস নামিয়েছেন এই পেসারই। তৃতীয় দিনের শেষ বিকেলে হ্যাটট্রিক করে গুঁড়িয়ে দিয়েছেন বাংলাদেশের টপ অর্ডার। দুই উইকেটে ১২৪ রান থাকা টাইগাররা সেই ধস আর সামলে উঠতে পারেনি। রাওয়ালপিন্ডি টেস্টে ৪৩ রান যোগ করতে গিয়ে শেষ আট উইকেট হারাল বাংলাদেশ।

এনিয়ে টানা ছয় টেস্টে হারল বাংলাদেশ। তন্মধ্যে একটিতেই কেবল খেলা পঞ্চম দিনে নিতে পেরেছিল টাইগাররা। সেটাও ঘরের মাঠে। কিন্তু সেই টেস্টেও নাজেহাল অবস্থা হয়েছিল বাংলাদেশের। বৃষ্টি আর হোম কন্ডিশনের সুবিধা নিয়েও আফগানিস্তানের সঙ্গে ড্র করতে পারেনি টাইগাররা।

তবে দেশের বাইরে এনিয়ে টানা পাঁচ টেস্ট হারল বাংলাদেশ। আগামী এপ্রিলে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট করাচিতে খেলবে বাংলাদেশ। তার আগে ঘরের মাঠে জিম্বাবুয়ের সঙ্গে খেলে নিজেদের পারফরম্যান্স ঝালিয়ে নেওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন মুমিনুল-মাহমুদুল্লাহরা।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

বাংলাদেশ: ২৩৩ ও ১৬৮

পাকিস্তান ১ম ইনিংস: ৪৪৫

ফল: পাকিস্তান ইনিংস ও ৪৪ রানে জয়ী

ম্যাচ সেরা: নাসিম শাহ