সরকারি প্রকল্প: অফিস সাজাতে ব্যয় ৪২ কোটি টাকা!
- Details
- by জাতীয় ডেস্ক
ঢাকা-মাওয়া-যশোর রেলপথ নির্মাণ প্রকল্পে প্রকল্প পরিচালকের অফিসসজ্জার ব্যয় ধরা হয়েছে ৪২ কোটি টাকা। অস্বাভাবিক এই অঙ্কটি চলমান যে কোনো প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালকের অফিসসজ্জার ব্যয়ের চেয়ে কয়েকগুণ বেশি।
চলমান পদ্মা সেতু প্রকল্প পরিচালকের অফিসসজ্জায় ২ কোটি ৬০ লাখ টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে। বর্তমানে কাজ চলছে এমন কোনো প্রকল্পেরই পরিচালকের অফিসসজ্জার ব্যয় ৫ কোটি টাকার বেশি নয়। কিন্তু ঢাকা-মাওয়া-যশোর রেলপথ নির্মাণ প্রকল্পে প্রকল্প পরিচালকের অফিসসজ্জার ব্যয় একেবারে অবিশ্বাস্য।
ঢাকা-মাওয়া-যশোর রেলপথ নির্মাণ প্রকল্পে প্রকল্প পরিচালকের অফিসসজ্জার ব্যয় বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, অফিসে পরিপাটি ফার্নিচার, কম্পিউটার, ল্যাপটপ, প্রিন্টার, ফটোকপি মেশিন, ফ্যাক্স, ইন্টারনেট মডেম, টেলিফোন ও সেলুলার ফোনসেট ইত্যাদি ক্রয় করতে ৪২ কোটি টাকার প্রয়োজন হবে।
এই ব্যয় বিশ্লেষণে শুধু ১৫ কোটি টাকার ফার্নিচার কেনার কথাই বলা হয়েছে। এছাড়া ফার্নিচার স্থাপন এবং প্রতিস্থাপনে ১০ কোটি টাকা খরচ দেখানো হয়েছে। অন্যান্য ‘সরঞ্জাম’ কিনতে ব্যয় ধরা হয়েছে ১০ কোটি টাকা। এইসব ফার্নিচার ও অফিসের গাড়ি রক্ষণাবেক্ষণে ব্যয় হবে ৫ কোটি টাকা। কখনো প্রয়োজনে গাড়ি ভাড়া করার হলে সে জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে ৩ কোটি ৫০ লাখ টাকা।
ইতোমধ্যেই অফিসসজ্জার এই অস্বাভাবিক অঙ্কটির যৌক্তিক ব্যাখ্যা চেয়েছে রেলপথ মন্ত্রণালয়।
পরিকল্পনা কমিশন জানায়, দেশে বর্তমানে চলমান বিভিন্ন প্রকল্পে পরিচালকের অফিসসজ্জায় সবচেয়ে বেশি ব্যয় হয়েছে পদ্মা সেতু নির্মাণ প্রকল্পে। এই প্রকল্পে ২ কোটি ৬০ লাখ টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে। কর্ণফুলী নদীর তলদেশ দিয়ে টানেল নির্মাণে প্রকল্প পরিচালকের কার্যালয় নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে ২ কোটি ৩৪ লাখ টাকা। একই উদ্দেশ্যে দ্বিতীয় কাঁচপুর, মেঘনা ও গোমতী সেতু নির্মাণ প্রকল্পে ব্যয় ১ কোটি ৩১ লাখ টাকা।
ঢাকায় মেট্রোরেল নির্মাণের ক্ষেত্রে অফিসসজ্জার ব্যয় মাত্র ৯৭ লাখ টাকা। ঢাকা-চট্টগ্রাম চার লেন প্রকল্পের অফিসসজ্জায় আরও কম খরচ হয়েছে। মাত্র ১৫ লাখ টাকা। এছাড়া রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুতকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পে এ খাতে ব্যয় ২ কোটি ১২ লাখ টাকা।
ঢাকা-মাওয়া-যশোর রেলপথ নির্মাণ প্রকল্পে মোট ৪০টি গাড়ি কেনা হবে এবং এই উদ্দেশ্যে ২৬ কোটি ২০ লাখ টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে। ক্রয়কৃত গাড়ি নিবন্ধনে ব্যয় হবে ৫ কোটি টাকা এবং গাড়িগুলোর জ্বালানি বাবদ খরচ হবে ২০ কোটি টাকা।
জানা গেছে, প্রকল্পে ১২টি জিপ, আটটি মাইক্রোবাস ও ২০টি ডাবল কেবিন পিকআপ কেনা হবে। এজন্য প্রতিটি জিপের দাম ধরা হয়েছে ৮৫ লাখ, প্রতিটি মাইক্রোবাসের দাম ৫০ লাখ এবং প্রতিটি ডাবল কেবিন পিকআপের দাম ৬০ লাখ টাকা।
এছাড়া প্রকল্প পরামর্শকদের জন্য কেনা হবে ১০৬ গাড়ি ও ৩০টি বাইক। ক্রয় করতে ব্যয় হবে ৯৬ কোটি টাকা।
তবে গাড়ির সংখ্যা নিয়ে প্রশ্ন তোলাসহ সাম্প্রতিক বৈঠকে গাড়ির সংখ্যা কমানোর প্রস্তাব করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়। এছাড়া গাড়ির মূল্য নিয়েও ব্যাখ্যা দাবি করেছে পরিকল্পনা কমিশন।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক মো. আমজাদ হোসেন বলেন, আমরা ইতোমধ্যেই রেলপথ ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের কাছে আমাদের ব্যাখ্যা পাঠিয়েছি। প্রকল্পটি পুনর্গঠন করা হচ্ছে।
আপনি আরও পড়তে পারেন
ইমরান: ওলামা লীগের বিরুদ্ধে বলায় নাজিমুদ্দিন খুন হয়েছে
ইমরান : দৃষ্টি ভিন্ন দিকে নিতেই নাজিমুদ্দিন হত্যাকাণ্ড
ওবায়দুল কাদের: তেলের দাম কমলে ভাড়াও কমবে
সরকারি ভবন নির্মাণে রডের পরিবর্তে বাঁশ!
খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর
Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.