আপনি পড়ছেন

রমজান শব্দটি শুনলেই মুমিন হৃদয়ে প্রশান্তি বয়ে যায়। আসে নেক আমলের জোয়ার। রমজানের রহমত, বরকত লুফে নেয়ার জন্য চাই প্রস্তুতি। রাসুল (সা.) শাবান মাস আসলেই রমজানের জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত হয়ে যেতেন। বেশি বেশি নফল রোজা রাখতেন। সাহাবায়ে কেরাম (রা) প্রায় ছয় মাস আগে থেকেই রমজান যথাযথভাবে পালনের জন্য প্রস্তুতি নিতেন। আর পরবর্তী ছয় মাস রমজানের শুদ্ধ জীবনের চর্চা করতেন।

download free ramadan wallpapers backgrounds images free intros free models and png by mtc

হজরত আয়েশা (রা.) বলেন, আমি নবী করিম (সা.)কে শাবান মাসের মতো এত বেশি নফল রোজা রাখতে অন্য কোনো মাসে দেখিনি। এ মাসের অল্প কয়েকটি দিন ছাড়া বলতে গেলে পুরো মাসই তিনি (সা.) রোজা রাখতেন। জামে তিরমিজি, হাদিস ৭৩৭।

হজরত আনাস (রা.) বলেন, একবার রাসুল (সা.)কে জিজ্ঞেস করা হল, রমজানের পরে কোন মাসের রোজা সবচেয়ে বেশি মর্যাদাপূর্ণ? উত্তরে তিনি (সা.) বললেন, রমজানের প্রস্তুতিস্বরূপ শাবান মাসের রোজা। জামে তিরমিজি, হাদিস ৬৬৩।

মাহে রমজান উপলক্ষে একটি স্পেশাল রুটিন তৈরি করে নেক আমলের পরিমাণ বাড়াতে হবে। প্রতিদিন ইফতারের আগে বা সুবিধামত সময় ঘরোয়া তালিমের ব্যবস্থা রাখতে পারলে খুবই ভালো।

পরিবারসহ পাড়া-প্রতিবেশী সবাইকে কোরআনের প্রতি আগ্রহী করে তোলার চেষ্টা করতে হবে।

এ বছর যে সন্তানের উপর রোজা ফরজ হয়েছে তাকে রোজা রাখানোর ব্যবস্থা করা আর যার ওপর এখনো রোজা ফরজ হয়নি তাকে রোজা রাখার অভ্যেস করানো প্রতিটি বাবা মায়ের ইমানি দায়িত্ব।

যারা শুদ্ধভাবে কোরআন তেলাওয়াত করতে পারেন না, তারা এ রমজানে বিশুদ্ধ তেলাওয়া শিখে নিতে পারেন। নিয়মিত কিছু সময় কোরআন অধ্যয়নের পাশাপাশি বেশি বেশি দান-সদকা ও তাহাজ্জুদ নামাজের অভ্যাস করা যেতে পারে।

বছরের এগারোটি মাসের তুলনায় মাহে রমজানে নারীদের সাংসারিক কাজের চাপ বহুগুণ বেড়ে যায়। ফলে ঘর সামলিয়ে ইবাদত করা খুবই কষ্টসাধ্য হয়ে যায় মা-বোনদের। এ ক্ষেত্রে পুরুষের উচিত নারীদের কাজ এগিয়ে দেয়া। একদিন রাসুল (সা.) যুদ্ধ থেকে এসে দেখেন এখনো রান্না হয়নি। আমরা হলে বলতাম, একটু বিশ্রাম করে নিই। বদমেজাজি কেউ হলে বলত, এখনো কেন রান্না হয়নি। কিন্তু রাসুল (সা.) স্ত্রীকে কিছুই বললেন না। বরং যুদ্ধের পোষাক না খুলেই তরবারি দিয়ে তরকারি কুটে স্ত্রীকে সাহায্য করলেন।

ঘরের কাজে নারীকে সাহায্য করা নবীর সুন্নাত। আর রমজান মাসে সুন্নাত কাজের সওয়াব ফরজের সমান এটা যেন আমাদের মনে থাকে।

হালাল উপার্জন ইবাদত কবুলের পূর্বশর্ত। রমজানে সাহারি, ইফতারে যে খাবার খাবো তা যেন শতভাগ হালাল হয়। এ মাসে দৈহিক ইবাদতের মতো আর্থিক ইবাদতেও সওয়াব বেশি। আত্মীয়-স্বজনের কাছে ইফতারসহ নিত্যপণ্য উপহার দেয়ার মাধ্যমে আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টি অর্জনের চেষ্টা করতে হবে।

আমাদের সমাজে অসংখ্য দরিদ্র অসহায় মানুষ রয়েছেন। যাদের পক্ষে তিনবেলা খাবার জুটানোই অনেক কষ্টসাধ্য ব্যাপার। এ জন্য আমরা যদি শাবান মাসে এই নিয়তে যাকাত দেই যে- হাড়হাভাতে মানুষ রমজান মাসে ভালোভাবে সাহারি ইফতার করতে পারবে, তাহলে আশা করা যায়, আল্লাহর কাছে আমরা এর উত্তম প্রতিদান পাবো। যাকাত আদায়ের সওয়াব তো পাওয়া যাবেই সাথে দুর্যোগ-মহামারির সময় অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর অফুরন্ত সওয়াব পাওয়া যাবে।

শাবান মাসে যাকাত আদায়ের ব্যাপারে শরিয়তে কোনো নিষেধ নেই। বরং এ মুহূর্তে বিত্তশালীরা যদি মানুষের পাশে না দাঁড়িয়ে রমজান পর্যন্ত অপেক্ষা করতে থাকে, আর এর মধ্যে মানুষ না খেয়ে মারা যায়, তাহলে হাশরের দিন খোদার কাঠগড়ায় অবশ্যই তাদেরকে আসামি হয়ে দাঁড়াতে হবে।

গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...

খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর