আপনি পড়ছেন

সূরা ফাতেহা পবিত্র কোরআনুল কারিমের প্রথম সূরা। কোরআনের নির্যাস। কুরআনের বাকি ১১৩টি সূরা আসলে সূরা ফাতেহারই বিস্তৃত ব্যাখ্যা। পুরো কোরআনে মূলত তিনটি বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। এক) আল্লাহ তায়ালার পরিচয়, দুই) আল্লাহপাকের সঙ্গে মানুষের সম্পর্ক এবং তিন) আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের সন্তুষ্টি লাভের জন্য মানুষের করণীয় ও বর্জনীয় কী তা নিয়ে। সূরা ফাতেহায় এ তিনটি বিষয়ই সংক্ষেপে চমৎকারভাবে উল্লেখ রয়েছে।

surah al fatiha

হযরত আবু হুরাইরা (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) একদিন উবাই ইবনে কাবকে (রা.) জিজ্ঞেস করলেন, তুমি কীভাবে নামাজে কোরআন পড়ো? তিনি সূরা ফাতেহা পড়ে শুনালেন। তখন রাসুল (সা.) বললেন, কসম সেই আল্লাহর, যার হাতে আমার জীবন সূরা ফাতেহার মত কোনো সূরা না তওরাতে, না ইঞ্জিলে, না জাবুরে, না কোরআনে নাজিল হয়েছে।’ সুনানে তিরমিজি, হাদিস ২৮৭৫; মিশকাত, হাদিস ২১৪২।

হযরত আবদুল মালেক ইবনে ওমায়ের (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, সূরা ফাতেহা সব রোগের মহাওষুধ।’ সুনানে দারেমি, হাদিস ৩৪১৩; মিশকাত, হাদিস ২১৭০।

মিশকাত শরিফের ব্যাখ্যাকার হানাফি মাজহাবের প্রাজ্ঞ আলেম মোল্লা আলী কারী (রহ.) মিরকাতুল মাফাতিহে বলেন, ‘সূরা ফাতেহার অক্ষর, শব্দ পড়াতে যেমন উপকার আছে। তেমনি লেখাতেও উপকার আছে। যে কোনো ধরনের রোগ চাই দ্বীনী হোক কিংবা পার্থিব, অনুভবযোগ্য হোক বা না হোক সব কিছু এ সূরার বরকতে আল্লাহর ইচ্ছায় আরোগ্য হয়ে যাবে।’

হযরত আবু সাঈদ ইবনে মুআল্লা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী (সা.)-এর সাহাবিদের মধ্যে কয়েকজন সাহাবি আরবের এক গোত্রে আসলেন। গোত্রের লোকেরা তাদের কোনো মেহমানদারি করলো না। হঠাৎ ওই গোত্রের নেতাকে সাপে কাটে। তখন তারা এসে বললো, আপনাদের কাছে কি কোনো ওষুধ আছে? তাঁরা উত্তর দিলেন, হাঁ। তবে আমাদের মেহমানদারি করতে হবে। আমরা প্রচণ্ড ক্ষুধার্ত। তারা মেহমানদারি করতে রাজি হলো। এছাড়াও আমরা তাদের কাছে একপাল বকরি চাইলাম। তখন একজন সাহাবি উম্মুল কুরআন অর্থাৎ সূরা ফাতেহা পড়তে লাগলেন এবং মুখে থুথু জমা করে সে ব্যক্তির ক্ষতে ছিঁটিয়ে দিলেন। ফলে বিশ নেমে গেলো এবং সে সুস্থ হয়ে গেলো।

সাহাবিরা খাওয়া দাওয়া করে নবী করিম (সা.) এর কাছে বকরিসহ ফিরে এসে রাসুল (সা.) কাছে জানতে চাইলেন তাদের এ ধরনের কাজ ঠিক হলো কি না। নবী (সা.) শুনে হেসে দিলেন এবং বললেন, তোমরা কিভাবে জানলে যে, সূরা ফাতেহা রোগ নিরাময়কারী? ঠিক আছে বকরিগুলো নিয়ে যাও এবং তাতে আমার জন্যও একটি অংশ রেখে দিও। বুখারি, হাদিস ৫০০৬।

গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...

খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর