আপনি পড়ছেন

রমজানের প্রথম দশক হলো রহমতের দশক। দুনিয়াজুড়ে আরশের মালিক এখন পৃথবীবাসীর ওপর রহমত বর্ষণ করছেন। অতি সৌভাগ্যবান বান্দা সে, যে আল্লাহ তায়ালার রহমত লাভ করতে পারলো। আর যে অবহেলা-অযত্নে প্রভুর রহমত থেকে দূরে থেকেছে, তার ব্যাপারে নবীজি (সা.) নিজেই বলেছেন- এমন হতভাগ্য বান্দা আরশের নিচে জমিনের ওপরে আর কেউ নেই।

fasting came to create enlightened people

অন্য যেকোনো সময়ের চেয়ে আজ পৃথবীবাসী সবচেয়ে বেশি রহমতকাতর হয়ে পড়েছে। নিজেদের সব প্রযুক্তি, সব টেকনিক যে কত ব্যর্থ, কত অযথা তা আজ টের পাচ্ছে তারা। তাইতো এখন আকাশের মালিকের রহমত ছাড়া বাঁচার আর কোনো উপায় নেই পৃথিবীর মানুষের।

করোনাভাইরাসের এই মহামারিতে আল্লাহর পাকের দয়ায় আমরা প্রথম রোজা সম্পন্ন করেছি। ঘরোয়া পরিবেশে তারাবি পড়েছি। তাহাজ্জুদ পড়েছি। আজ দ্বিতীয় রোজা চলছে। সবকিছুর জন্য শুকরিয়া একমাত্র মহান আল্লাহর।

বৃষ্টি যখন হয়, তখন সব জায়গাতেই ঝরে। যে ভূমিটা উঁচু, বাকা, সেখানে বৃষ্টি ঝরলেও পানি জমে না। তেমনি আল্লাহর রহমত সব বান্দার ওপর সমানভাবে ঝরছে, ঝরবে। কিন্তু যে বান্দার কলবের জমিনটা অহংকারে উঁচু হয়ে আছে, নাফরমানিতে বেঁকে গেছে, সে বান্দা খোদার রহমত ধারণ করার যোগ্যতা রাখে না।

কালামে পাক এবং হাদিসে নববি সা. থেকে জানা যায়, অহংকারে ভরপুর আত্মার মানুষটিকে আল্লাহতায়ালা যতটা অপছন্দ করেন, আর কাউকে এতবেশি অপছন্দ করেন না।

মাহে রমজান হলো উঁচু কলবকে নিচু বানানোর মাস। অহংকারী মনকে বিনয়ী করার মাস। বান্দা যখন সিয়াম সাধনা শুরু করে, আস্তে আস্তে কোরআনের সঙ্গে, সালাতের সঙ্গে ভাব জমিয়ে ফেলে, তখন স্বয়ংক্রিয়ভাবে হৃদয় নরম হয়ে আসে। চোখ ভিজে ওঠে। দুনিয়ার মায়ামোহ তুচ্ছ মনে হয়। কবরের জীবনের জন্য এক ধরনের পেরেশানি, টান অনুভব করে।

রমজানের এসব বরকত-রহমত হাসিল করার জন্য চাই খাঁটি নিয়ত। শুরুতেই নিয়ত করতে হবে- এবারের রমজান হবে আমার প্রভুকের খুশি করার, আত্মাকে নিয়ন্ত্রণ করার এবং প্রবৃত্তিকে সংযত করার মাস।

বান্দা যদি নিজেকে বদলানোর জন্য প্রস্তুত না করে, নিজের ভেতরে যদি রহমত ধারণের জন্য বিনয়ী না হয়, তাহলে আল্লাহ নিজ থেকে কাউকে পরিবর্তন করেন না।

পবিত্র কোরআনের অনেক আয়াতে আল্লাহ বলেছেন, ‘নিশ্চয় আল্লাহ তায়ালা জালেমদের হেদায়াত করেন না। পথ দেখান না।’ অন্য আয়াতে আল্লাহ বলেছেন, ‘মানুষ যতক্ষণ পর্যন্ত নিজ থেকে পরিবর্তন হতে না চাইবে, ততক্ষণ পর্যন্ত আল্লাহ তায়ালা তাদের পরিবর্তন করেন না।

তাই আসুন, এই রমজানে প্রতিদিন এবং বেশি বেশি বুঝে বুঝে কুরআন ও হাদিস অধ্যয়ন (শুধু পড়া নয়) করি। সেখান থেকে যে শিক্ষা পাওয়া যাবে তা নিজের মধ্যে ধারণ করি। অর্থাৎ ভালো কাজের সংখ্যা বাড়াই এবং খারাপ কাজগুলো ছেড়ে দেই। নিজের পাশাপাশি পরিবার, আত্মীয়-স্বজন ও অন্যদের সংশোধনে সচেষ্ট হই।

এই রমজানের রহমতের বৃষ্টিতে যে ভিজলো না, রহমতের প্রতিটি ফোঁটা যে যত্নের সঙ্গে আগলে রাখে না, তার চেয়ে পোড়া কপাল আর কে আছে? আল্লাহ তায়ালা আমাদের সবাইকে রহমতের বর্ষণে সিক্ত হওয়ার তাওফিক দিন।

গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...

খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর