আপনি পড়ছেন

রোজার উদ্দেশ্য সম্পর্কে পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, ‘তোমাদের ওপর রোজা ফরজ করা হয়েছে যেন তোমরা তাকওয়া অর্জন করতে পারো।’ আরবি তাকওয়া অর্থ বেঁচে থাকা, মুক্তি পাওয়া, নিরাপদ হওয়া, বেছে চলা। সহজ কথায় জীবনের প্রতি মুহূর্তে আল্লাহর অসন্তুষ্টি থেকে বেঁচে থাকার আপ্রাণ প্রচেষ্টাকে তাকওয়া বলে। শেষ বিচারের দিন আল্লাহর আজাব থেকে মুক্তি পেয়ে নিরাপদে জান্নাতে বসবাস করার জন্য যিনি চেষ্টা-সাধনা করেন তাকে বলে মুত্তাকি।

d2d9bec2 927c 478a 9195 e428a49ad6cf

পবিত্র কোরআনে মুত্তাকির পচিয় সম্পর্কে সূরা বাকারায় আল্লাহ বলেন, ‘মুত্তাকি হলো তারা যারা গায়েবের প্রতি বিশ্বাস রাখে, সালাত প্রতিষ্ঠা করে এবং আল্লাহ পাক তাদের যে রিজিক দিয়েছেন তা থেকে ব্যয় করে।’

সিয়াম সাধনার মাধ্যমে একজন বিশ্বাসী (ঈমানদার) বান্দা মুত্তাকির স্তরে ওঠে যায়। আপনি যখন রুহের জগতে প্রভুকে প্রভু বলে স্বীকার করেছেন, আবার এ জগতেও প্রভুর প্রভুত্ব মেনে নিয়েছেন তখন আপনি ঈমানদার হলেন। এখন আর আপনার নিজের ইচ্ছামতো চলার কোনো সুযোগ নেই। চলতে হবে প্রভুর ইচ্ছামতো।

কিন্তু আপনার ভেতর যে নফস নামে আরেক প্রভু আছে, আছে শয়তানের প্ররোচনা, যা আপনাকে আল্লাহর ইচ্ছামতো চলতে দিচ্ছে না। তখন আপনি হয়ে যান শয়তানের অনুসারী। নফসের গোলাম। শয়তানের অনুসারী থেকে, নফসের গোলাম থেকে একজন মানুষ কীভাবে আল্লাহর গোলাম হতে পারবে সে জন্য এক মাসের সিয়াম সাধনার ট্রেনিং দেয়া হয় মুমিন বান্দাকে।

বান্দা যখন সিয়াম সাধনা শুরু করে, তখন নফস বলে, খুব পিপাসা পেয়েছে। একটু পানি খেয়ে নাও। বান্দা বলে, সাবধান! সমুদ্রের গভীর অন্ধকারের নিচেও আল্লাহ পাক স্পষ্ট দেখতে পান। তাই লুকিয়ে আড়ালে-আবডালে পানি খাওয়া সম্ভব যাবে না। এভাবেই শুরু হয়ে যায় তাকওয়ার প্রশিক্ষণ।

নফস বলে, হারাম উপার্জন করো। বান্দা বলে, না। আল্লাহ দেখছেন, এর জবাবদিহি করতে হবে। এমনিভাবে এক মাসের বিশেষ কোর্স যখন বান্দা সফলভাবে শেষ করে, তখন তার চেতনায় গেঁথে যায়, আমি যাই করছি, আল্লাহ পাক সব দেখছেন।

এক মাসের ট্রেনিং শেষে বান্দা এমন রুহানি শক্তি অর্জন করে যে, তখন আর নফস তাকে পরাজিত করতে পারে না। নফসই তার কাছে পরাজিত হয়।

এ জন্যই এত দৃঢ়তার সঙ্গে আল্লাহ পাক বলেছেন, তোমাদের এবং পূর্ববর্তীদের ওপর সিয়াম ফরজ করে দিয়েছি, এতে করে তোমরা মুত্তাকি হতে পারবে।

মুত্তাকিরাই দুনিয়া ও আখেরাতের ফার্স্টক্লাস মানুষ। তাদের জন্য বিশেষ বিশেষ সুবিধা আল্লাহ পাক রেখেছেন।

এক. যারা মুত্তাকি হতে চায়, আল্লাহ তাদের মুত্তাকি হওয়ার কঠিন সাধনাকে সহজ করে দেন। তাদের জন্য এমন জায়গা থেকে রিজিকের ব্যবস্থা করেন, যা মানুষের কল্পনা করাও সম্ভব নয়। সূরা তালাক, আয়াত : ২-৩।

দুই. আল্লাহ বলেন, হে ঈমানদাররা, যদি তোমরা মুত্তাকি হও, তাহলে তোমাদের প্রজ্ঞা দান করা হবে। তোমরা বুঝতে পারবে দুনিয়া ও আখেরাতের জন্য কোনটি আসলেই ভালো আর কোনটি ভালো নয়। তোমাদের গোনাহগুলো মাফ করে দেবো। ক্ষমার চাদরে তোমাদের জড়িয়ে নেবো। সূরা আনফাল, আয়াত : ২৯।

তিন. যদি তোমরা ধৈর্য ধরো এবং মুত্তাকি হও, তাহলে দুনিয়া-আখেরাতে কেউই তোমাদের কোনো ধরনের ক্ষতি করতে পারবে না। সূরা আলে ইমরান, আয়াত : ১২০।

হে আল্লাহ! তাকওয়ার প্রশিক্ষণে সফল হওয়ার তাওফিক আপনি আমাদের দিন।

গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...

খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর