আপনি পড়ছেন

আজ আমরা মাহে রমজানের প্রথম দশকের শেষ দিনের রোজা শেষ করলাম। অঝোর ধারায় রহমত বর্ষণ হয়েছে এ দশ দিন। জানি না আমাদের ভাগ্যে কয় ফোটা রহমত জুটেছে। পৃথিবী এখন করোনা ভাইরাসের আঘাতে ক্ষতবিক্ষত। স্বাভাবিক জীবনযাত্রা বিপর্যস্ত। এমন অস্থায় আমাদের কর্তব্য হলো মহান প্রভুর কদমে সেজদায় পড়ে কান্নাকাটি করা। আফসোস! এ সময় বেশিরভাগ মানুষই অনলাইনে অযথা সময় নষ্ট করছে।

wallpaper2you 31978

বিশেষ করে তরুণ-তরুণীরা দিনের পর দিন অনলাইনে ভালোমন্দ সাইটে পড়ে রয়েছে। বৃদ্ধরাও এখন অনলাইন ফেসবুক ইউটিউবের নেশায় ডুবে আছে। নারীরা তো সিরিয়ালের জগতে ডুবে আছেন অনেক আগে থেকেই।

আল্লাহ পাক আজাব দেন মানুষ যেন তার পথে ফিরে আসে এ জন্য। কিন্তু যে জাতির কপাল পোড়ে, তারা আজাব দেখেও সতর্ক হয় না। নিজেদের মতো করে বিপথে-কুপথে চলতেই থাকে। তখন আল্লাহর পক্ষ থেকে চূড়ান্ত আজাব আসে। আর তারা চিরতরে ধ্বংস হয়ে যায়।

আল্লাহ বলেন,

وَكَمْ مِنْ قَرْيَةٍ أَهْلَكْنَاهَا فَجَاءَهَا بَأْسُنَا بَيَاتًا أَوْ هُمْ قَائِلُونَ

অর্থ: আমি কত জনপদকেই না আজাব দিয়ে ধ্বংস করে ফেলেছি। তাদেরকে বহুবার সতর্ক করেছি। কিন্তু তারা ছিলো গাফেল। যখন আমার আজাব তাদেরকে পাকড়াও করেছে, তারা গভীর রাতে ঘুমে আচ্ছন্ন ছিলো কিংবা বিশ্রামরত ছিলো। সূরা আরাফ, আয়াত ৪।

যখন ছোট ছোট আজাবেও মানুষ বেহুশ থাকে, প্রভুর পথে ফিরে আসে না, তখনই আল্লাহ বড় আজাব দেন। আর যখন বড় আজাব আসে তখন মানুষের কী অবস্থা হয় শুনুন। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ বলেন,

فَمَا كَانَ دَعْوَاهُمْ إِذْ جَاءَهُمْ بَأْسُنَا إِلَّا أَنْ قَالُوا إِنَّا كُنَّا ظَالِمِينَ

অর্থ: যখন প্রভুর শাস্তি মানুষকে ঘিরে ফেলে তখন মানুষের মুখ শুধু একটি কথাই বের হয়, হে আল্লাহ! আমরা সত্যিই জালেম ছিলাম। সূরা আরাফ, আয়াত ৫।

আল্লাহ তায়ালা রমজান দিয়েছেন আমরা যেন ক্ষমা অর্জন করতে পারি। আমরা যেন রহমতের বৃষ্টিতে ভিজতে পারি। কিন্তু আমরা না ক্ষমার কাজ করছি, না রহমত ভিক্ষা করছি। বরং আমরা প্রভুকে ভুলে অযথা অনর্থক কাজে সময় নষ্ট করছি। এতে করে আমরা ধীরে ধীরে প্রভুর চূড়ান্ত আজাবের দিকেই এগিয়ে যাচ্ছি। এখন যদি আমরা সতর্ক না হই, সচেতন না হই তাহলে আমাদের বাঁচার আর কোনো উপায় থাকবে না।

রহমতের বৃষ্টি শেষ হয়ে আজ সন্ধ্যা থেকে মাগফিরাতের বৃষ্টি ঝরতে শুরু করেছে। যারা এখনো প্রভুর রহমত কামাই করতে পারেনি, ভাগ্যের ঝুলিতে এক-দুই ফোটা রহমত লুফে নিতে পারেনি, তাদের জন্য হতশা হওয়ার কিছু নেই।

মাহে রমজানের আরো দুটি মূল্যবান দশক আমাদের জন্য রয়ে গেছে। আমরা যদি মাগফিরাতের দশক কাজে লাগিয়ে প্রভুর ক্ষমা পেতে পারি, তারপর নাজাতের দশকে প্রভুর সন্তুষ্টি অর্জন করে জাহান্নাম থেকে মুক্তি অর্জন করতে পারি, তাহলে আশা করা যায়, দুনিয়ার আজাব থেকেও আল্লাহ পাক আমাদের রেহাই দেবেন।

হে আল্লাহ! আপনি আমাদের রমজানের বরকত ও রুহানিয়াত অর্জনের তাওফিক দিন।

গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...

খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর