আপনি পড়ছেন

আজ মাগফিরাতের দ্বিতীয় দিন। হাঁটি হাঁটি পায়ে আমরা এগারোটি সিয়াম পালন করেছি। যে করুণ পরিস্থিতিতে আমরা সিয়াম শুরু করেছিলাম, এখন বিশ্বপরিস্থিতি আরো ভয়াবহ থেকে ভয়াবহের দিকে যাচ্ছে। মানুষের সব গবেষণা মুখ থুবড়ে পড়েছে। বিশ্ব সাস্থ্য সংস্থা তো বলেই দিয়েছে, করোনা ভাইরাসের প্রতিষেধক আদৌ আবিষ্কার করা যাবে কি না সন্দেহ হচ্ছে।

prayer

হয়ত এ ভাইরাসের ভয় নিয়েই আগামীর পৃথিবীতে মানুষকে বাঁচতে হবে। আমরা জানি না, সামনের দিনগুলো পৃথিবীবাসীর জন্য কতটা কঠিন হবে।

সূরা আরাফে আল্লাহ বলেছেন, ‘অতীতে যখনই কোনো প্রজেন্মর ওপর আসমানি গজব নেমে এসেছে, তারা মুখ থুবড়ে পড়ার আগে শুধু একটি বাক্যই উচ্চারণ করেছে, কুন্না জালিমিনি। হে আল্লাহ! আমরা জালেমদের অন্তর্ভুক্ত ছিলাম।’

জীবনের সব ক্ষেত্রে যখন মানুষ জুলুমের সীমা ছাড়িয়ে যায়, যখন মানুষ পরিবেশ-প্রকৃতিকে মাত্রাতিরিক্ত বিষাক্ত করে ফেলে, তখনই গজব নেমে আসে। গজব মানে রাগ। প্রভু আমাদের ওপর রাগ হয়েছেন। তাই তিনি আমাদের জন্য শাস্তি নাজিল করেছেন।

প্রভুর মান ভাঙিয়ে দিতে পারলে আশা করা যায়, হতাশার কালো মেঘ কেটে যাবে। তাই আমাদের এখন একটিই করণীয়, খোদার কাছে কান্নাকাটি করে তার মান ভাঙানোর চেষ্টা করা।

খোদাকে রাজি খুশি করানোর জন্য যত ধরনের অসিলা দরকার, যত ধরনের নেক কাজ করা যায়, সব কিছুর বিনিময়ে হলেও প্রভুকে রাজি খুশি করাতে হবে। প্রভুর মান ভাঙানোর জন্য খুব বেশি কিছু করতে হবে না।

মাত্র একটি কাজ করতে পারলেই আমাদের প্রভু আবার আমাদের দিকে রহমতের নজরে তাকাবেন। সে কাজটি হলো ক্ষমা প্রার্থনা করা। পবিত্র কোরআনের একটি আয়াতে আল্লাহ বলেছেন, ‘কোনো প্রজন্ম ক্ষমা প্রার্থনা করতে থাকবে আর আল্লাহ তাদের শাস্তি দেবেন- এমনটি কখনোই হবে না।’

আল্লাহ তায়ালার শাস্তি থেকে বাঁচার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করাই একমাত্র দাওয়াই। আনন্দের কথা হলো, এখন চলছে মাগফিরাতের দশক। মাগফিরারেত বিশেষ বৃষ্টি ঝরে এ দশকে। এ সময় যদি পৃথিবীবাসী প্রভুর কদমে লুটিয়ে পড়ে, তাহলে আশা করা যায় প্রভু এ গ্রহবাসীকে রহম করবেন।

হজরত ইউনুস নবীর (আ.) উম্মতের ওপর শাস্তির ফায়সালা হয়ে গিয়েছিলো। আজাব আসতে আর বেশি বাকি নেই। ইউনুস নবী (আ.) পর্যন্ত লোকালয় ছেড়ে অন্য জায়গায় চলে গেছেন। আর কিছুক্ষণ পর কওমে ইউনুস খোদায়ী গজবে নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে।

এমন সময় ইউনুস নবীর (আ.) উম্মত একসঙ্গে আল্লাহর কাছে ক্ষমা ভিক্ষে চাইলো। বলল, হে আল্লাহ! আমরা ভুল করে ফেলেছি। আপনি আমাদের মাফ করে দিন। সঙ্গে সঙ্গে আল্লাহ তায়ালা আজাব রুখে দিলেন।

ক্ষমাপ্রার্থী কওমকে রহমতের চাদরে ঢেকে মায়ার কোলো জড়িয়ে নিলেন। আর ইউনুস নবীকে ওহি পাঠিয়ে বললেন, হে ইউনুস! এভাবে চলে আসাটা তোমার জন্য ঠিক হয়নি। পবিত্র কোরআনে এ ঘটনা বিস্তারিত বলা হয়েছে।

আজো যদি আমরা প্রভুর ক্ষমার কদমে লুটিয়ে পড়ি, তাহলে তিনি আমাদেরও মায়ার কোলে টেনে নেবেন। হে আল্লাহ! আমাদের ক্ষমা করে দিন। আমাদের মাফ করে দিন। করোনা ভাইরাস থেকে আমাদের রক্ষা করুন। এ গ্রহকে বাঁচান।

লেখক : বিশিষ্ট মুফাসসিরে কোরআন ও গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব, চেয়ারম্যান : বাংলাদেশ মুফাসসির সোসাইটি।

গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...

খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর