আপনি পড়ছেন

পৃথিবীর সবচেয়ে মধুমাখা একটি নাম হচ্ছে ‘মা’। মায়ের মতো এমন মধুর শব্দ কোথাও নেই। মা শব্দটি ছোট কিন্তু এর বিশালতা আকাশের চেয়েও বড়। মা বলতে চোখের সামনে মায়ের সদা হাস্যময়ী ও জান্নাতি চেহারা ভেসে উঠে। মা শব্দের মধ্যেই লুকিয়ে আছে পৃথিবীর সব মায়া, মমতা, শীতল পরশ, অকৃত্রিম স্নেহ, আদর, নিঃস্বার্থ ভালোবাসা। মায়ের তুলনা মা নিজেই। মায়ের কোনো বিকল্প নেই।

 cach be tre so sinh

পৃথিবীতে বাবা-মায়ের ভালোবাসার সঙ্গে কোনো কিছুর তুলনা হয় না। নদীর তলদেশ নির্ণয় করা গেলেও মায়ের ভালোবাসার গভীরতা পরিমাপ করা যায় না। এমন দয়াময় এবং মযার্দাবান মানুষটিকে আমরা কতটুকু ভালোবাসা দিচ্ছি?

যে মা দশ মাস দশ দিন গর্ভে ধারণ করে তিল তিল করে আমাদের বেড়ে উঠতে সাহায্য করেন। ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর থেকেই মায়ের কষ্ট বহুগুণে বেড়ে যায়। রাতের পর রাত জেগে সন্তানের দেখভাল করলেও মায়ের কোনো ক্লান্তি আসে না।

সন্তানের সুখের জন্য হাসিমুখে সব কিছু বিলিয়ে দিতেও মা কার্পণ্য করেন না। সন্তানের সঙ্গে মায়ের নাড়ির যে সম্পর্ক রয়েছে তা কখনো ছিন্ন হবার নয়। মায়ের ঋণ কেউ শোধ করতে পারবে না।

সন্তান মায়ের জগৎ, তেমনি সন্তানের কাছে মা-ই সব। একটি সন্তান যখন খেতে পারে না, কথা বলতে পারে না এমনকি নিজের কাজ নিজেও করতে পারে না তখনও তাকে আগলে রাখেন মমতাময়ী মা। পরম মমতার চাদরের উষ্ণতায় আগলে বড় করেন। সব আবদার মা হাসি মুখে মেনে নেন।

আবু উমামা (রা.) থেকে বর্ণিত, এক ব্যক্তি রাসুল (সা.) কে বললেন, হে আল্লাহর রাসুল, সন্তানের ওপর পিতা-মাতার কী হক আছে? তিনি (সা.) বললেন, তারা তোমার জান্নাত ও জাহান্নাম। ইবনে মাজাহ।

আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, এক ব্যক্তি জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহর রাসুল (সা:), আমার সর্বোত্তম ব্যবহারের হকদার কে? রাসুল (সা.) বললেন, তোমার মা। লোকটি আবার জিজ্ঞাসা করলেন, তারপর কে? রাসুল (সা.) বললেন তোমার মা। লোকটি আবার জিজ্ঞাসা করলেন, তারপর কে? এবারও জবাব দিলেন, তোমার মা। লোকটি পুনরায় জিজ্ঞেস করলেন, অতপর কে? এবার রাসুল (সা:) জবাব দিলেন, তোমার বাবা। বুখারি ও মুসলিম।

বর্তমান সমাজে লোক দেখানো ভালোবাসা মায়ের প্রতি দেখানো হয়। মা দিবসে লাফিয়ে লাফিয়ে বলি মা আমি তোমাকে ভালোবাসি। আবার স্যোশাল মিডিয়ায় মায়ের জন্য ভালোবাসার বাণী লিখে প্রচার করি। আমরা অসুস্থ হলে মা আমাদের জন্য জীবনটা দিয়ে দিতে প্রস্তুত থাকেন। কিন্তু আমরা কখনো জানতে চেষ্টা করেছি মা তুমি কেমন আছো?’।

কখনো কি জানতে চেষ্টা করেছি মা তোমার শরীর ভালো আছে কি?’ আমাদের সামান্য মাথাব্যথা হলেও মাকে এসে বলি, ‘মা আমার ভালো লাগছে না’। কিন্তু মায়ের গুরুতর অসুখের কথাও আমাদের কখনো বলে না, কিংবা আমরা জানতে চেষ্টা করি না।

শরীরে অসুস্থতা নিয়েও রান্না করে যায় প্রিয় খাবারটি। ঘরের সব কাজ নিশ্চুপভাবে করে যায়। মা কখনোই বুঝতে দেয় না কষ্ট হচ্ছে বা আর পারছে না। আমরা কয়জনেই বা তা বুঝতে চেষ্টা করি। বরং যখন নিজেরা একটু বেশি বুঝতে শিখি, এরপর মায়ের ভুল ধরি এবং ধমক দিতে শুরু করি।

লেখক: প্রাবন্ধিক।

গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...

খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর