আপনি পড়ছেন

মুমিনের জীবনে অত্যন্ত গুরুত্ব ও ফজিলতপূর্ণ মাস রমজান। বিশেষত এ মাসের শেষ দশকটি অধিক ফজিলতময়। হাদিসের বর্ণনা মতে, শেষ দশকের যে কোনও বেজোড় রাতে রয়েছে মহিমান্বিত লাইলাতুল কদর। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন ‘তোমরা রমজানের শেষ দশকের বেজোড় রাতে লাইলাতুল কদর অনুসন্ধান কর।’ বুখারি ২০১৭। 

about ramadan fast

পবিত্র কোরআনে সুস্পষ্টভাবে এ রাতের মহিমা ও ফজিলত বর্ণিত হয়েছে। আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন, ‘নিশ্চয় আমি কোরআন নাজিল করেছি লাইলাতুল কদরে।’ সূরা কদর, আয়াত ১।

মুফাসসিরগণ বলেন, লওহে মাহফুজ থেকে দুনিয়ার আকাশে পূর্ণ কোরআন একত্রে নাজিল করা হয়েছে কদরের রাতে। অতঃপর সেখান থেকে সুদীর্ঘ ২৩ বছরে রাসুল (সা.) এর কাছে মানবজীবনের প্রয়োজনের আলোকে ওহি আকারে প্রেরণ করা হয়েছে।

কোরআন কারিমে এ রাতকে হাজার মাসের চেয়েও শ্রেষ্ঠ বলা হয়েছে। আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন, ‘লাইলাতুল কাদরি খায়রুম মিন আলফি শাহর। হাজার মাসের শ্রেষ্ঠ রজনী লাইলাতুল কদর।’ সূরা কদর, আয়াত ৩।

রমজানের শেষ দশকে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর গুরুত্বপূর্ণ আরও একটি আমল হচ্ছে ইতেকাফ। যা হিজরতের পর কোনো রমজানে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বাদ দেননি।

উম্মুল মুমিনিন আয়েশা (রা.) বর্ণনা করেন, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মদিনায় হিজরতের পর ইন্তেকালের পূর্ব পর্যন্ত প্রতি রমজানের শেষ দশক ইতিকাফ করেছেন এবং তাঁর ইন্তেকালের পর তাঁর স্ত্রীরা ইতিকাফ করেছেন। বুখারি ও মুসলিম।

পুরুষ ইতিকাফ করবেন যে কোনও জামে মসজিদে। মহিলারা নিজ ঘরের কোনো নির্জন স্থানে ইতিকাফ করতে পারবেন। ইতিকাফকারী যেহেতু পার্থিব সব বিষয় থেকে বিমুখ হয়ে সর্বদা মসজিদে, মহান প্রভুর দরবারে অবস্থান করেন, ফলে তার প্রতিটি মুহূর্ত ইবাদত হিসেবে গণ্য হয়।

পাশাপাশি ইবাদত-বন্দেগি তার জন্য অত্যন্ত সহজ হয়ে যায়। বিশেষত লাইলাতুল কদর লাভ করার সৌভাগ্য অনায়াসে অর্জন করা যায়।

ইতিকাফের ফজিলত সম্পর্কে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘রমজানর শেষ দশক ইতিকাফের সওয়াব হচ্ছে, দুটি হজ্জ ও উমরাহ সমপরিমাণ সওয়াব। বায়হাকি।

ইতিকাফ মহান প্রভুর ভালবাসা ও সন্তুষ্টি অর্জনের অন্যতম পন্থা। নিজের ত্রুটি-বিচ্যুতি, অন্যায়-অপরাধ স্বীকার করার মাধ্যমে নিজেকে স্বীয় প্রভুর কাছে সঁপে দিয়ে তাঁর প্রিয়জন হওয়ার অবারিত সুযোগ রয়েছে এতে।

অশেষ ফজিলতপূর্ণ লাইলাতুল কদর এবং ইতিকাফের জন্য আমাদের এখন থেকেই প্রস্তুতি নিতে হবে। আসুন, পার্থিব সব কাজকর্ম আমরা দ্বিতীয় দশকে শেষ করে নিই। শেষ দশকটি প্রভুর সাথে একান্ত কিছু ভাব বিনিময়, ইবাদত করে তাঁর প্রেম আর নৈকট্য অর্জনে সচেষ্ট হই। আল্লাহ তায়ালা আমাদের তাওফিক দান করুন। আমিন।

লেখক : মুফতি ও সিনিয়র শিক্ষক, শাহজালাল জামেয়া ইসলামিয়া কামিল মাদরাসা, সিলেট।

গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...

খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর