আপনি পড়ছেন

জার্মানির অণুজীব বিষয়ক অধ্যাপক হেনড্রিক স্ট্রেক বলছেন, করোনাভাইরাসকে আমরা যতটা ভয়ঙ্কর ভেবেছিলাম, ভাইরাসটি ততটা মারাত্মক না। আমরা এ বিষয়ে গবেষণা করছিলাম, তা প্রকাশ পাওয়ার আগেই বিভিন্ন দেশের সরকারগুলো লকডাউন ঘোষণা করে ফেলেছে। আমার মতে, তাদের এই সিদ্ধান্ত একটু আগেই নেয়া হয়ে গেছে।

empty bed in iran hospitalইরানের এক হাসপাতালে খালি বেড

তিনি বলেন, আমরা জার্মানিতে করোনার কারণে মৃত্যুহার দেখলাম শূন্য দশমিক ২৪ থেকে শূন্য দশমিক ৩৬ শতাংশ। যা ব্রিটিশ মহামারি বিশেষজ্ঞ নিল ফার্গুসনের শূন্য দশমিক ৮ থেকে শূন্য দশমিক ৯ শতাংশ থেকে অনেক কম।

আল আরাবিয়া বলছে, নীতিনির্ধারকদের কাছে করোনাভাইরাসের মৃত্যুহার জানা খুব জরুরি। এর ওপর ভিত্তি করেই তারা ভাইরাসের কারণে ক্ষতি ও পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়ে সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন।

যদি স্ট্রেকের হিসাব সঠিক হয়, তাহলে সরকারগুলোকে এই মুহূর্তে লকডাউন তুলে দেয়া উচিৎ। কিন্তু ফার্গুসনের হিসাব সঠিক হলে নীতিনির্ধারকদের আরো ভাবতে হবে তারা পরিস্থিতি নিয়ে কী করতে চায়।

মৃত্যুহার থেকে নিশ্চিত হওয়া যায় একটি ভাইরাস ঠিক কত সংখ্যক মানুষকে সংক্রমিত করতে পারে। যদি বেশি সংখ্যক মানুষ আক্রান্ত হয়ে যায়, তাহলে জনগণের দেহে নিজ থেকেই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা আছে।

তবে এ বিষয়ে এখনো নিশ্চিত কিছু বলতে পারছে না বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। তারা বলছে, একজন সংক্রমিত ব্যক্তি সুস্থ হয়ে গেলে তার দেহে ভাইরাসটির বিরুদ্ধে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হয় নাকি তা এখনো নিশ্চিত নই আমরা। যদি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরিও হয়ে থাকে তাহলে তা কতদিনের জন্য স্থায়ী সেটিও খতিয়ে দেখতে হবে।

বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ইতোমধ্যে লকডাউন থেকে বের হয়ে আসতে শুরু করে দিয়েছে। অনেক দেশে লকডাউন শিথিল করে মানুষকে রাস্তায় বের হওয়ার সুযোগ দিয়েছে। কিন্তু অনেক দেশেই এখনো চলছে লকডাউন। সেখানে পরিস্থিতি সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে আসার আগ পর্যন্ত সরকার কোনো ছাড় দিতে রাজি নয়।

german virologist professor hendrik streeckjpgজার্মানির অণুজীব বিষয়ক অধ্যাপক হেনড্রিক স্ট্রেক

স্ট্রেক বলছেন, ভাইরাসটি খুব ভয়ঙ্কর এমন কিছু নয়। সরকারগুলো নির্দিষ্ট সময়ের আগেই দেশগুলোতে লকডাউন ঘোষণা করে দিয়েছে। উদাহরণ হিসেবে যুক্তরাজ্যের কথাই বলা যাক।

তিনি বলেন, দেশটিতে শূন্য দশমিক ৩ শতাংশ মৃত্যুহার হলে ৩০ হাজার মৃত্যু হবে। এ সময় ১০ লাখ মানুষের সংক্রমণ হওয়ার সুযোগ আছে। ফার্গুসনের হিসাব মোতাবেক দেশটিতে শূন্য দশমিক ৮৫ শতাংশ মানুষের মৃত্যু হলে এই সংখ্যা অনেক বেড়ে যায়।

তার এই হিসাবের বর্তমানের সঙ্গে কোনো মিল নেই। হলে হয়তো যুক্তরাজ্যেই সব রেকর্ড তৈরি করে ফেলতো করোনাভাইরাস।

মরণঘাতী এই ভাইরাসটির প্রাদুর্ভাব ছড়িয়ে পড়ার পর থেকেই বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের গবেষক ও বিজ্ঞানীরা বলে আসছেন, এটি থামানোর একমাত্র উপায় এখন লকডাউন দেয়া।

এর বিপরীতেও অনেকে কথা বলেছেন। কিন্তু সে সময় তাদের কথা সবার কাছে পৌঁছায়নি। এখন ধীরে ধীরে তাদের বাণী মানুষের কাছে পৌঁছাতে শুরু করেছে।

কিছদিন আগেই স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও রসায়নে নোবেলজয়ী বিজ্ঞানী মাইকেল লেভিট বলেছেন, অর্থনৈতিক কার্যক্রম বন্ধ করে করোনাভাইরাসের বিপর্যয় রোধ করা কোনোভাবেই সম্ভব না। বিশেষ করে, চীনের দিকে লক্ষ করলেই তা বোঝা যায়।

চীন যেভাবে করোনা মোকাবেলা করেছে তা যদি পুরো বিশ্ব ভালোভাবে খেয়াল করতো, তাহলে হয়তো লকডাউন না দিয়ে ভিন্ন পদক্ষেপ নেয়া যেত। এক্ষেত্রে জার্মানি ও সুইডেন ব্যতিক্রম। তারা খুব একটা লকডাউন দেয়নি। ফলে অনেকে ভাইরাসটিতে সংক্রমিত হলেও তাদের বেশিরভাগই ইতোমধ্যে সুস্থ হয়ে গেছেন।

নোবেলজয়ী এই বিজ্ঞানী বলেন, করোনা সংকটে গৃহীত ব্যবস্থায় হতভাগাদের কাতারে থাকবে অস্ট্রিয়া, অস্ট্রেলিয়া ও ইসরায়েল। সেখানে খুব বেশি মানুষ আক্রান্ত হওয়ার আগেই তারা কড়া লকডাউন আরোপ করেছে। এতে করে বিশাল অর্থনৈতিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে তারা।

তিনি বলেন, যদি আবারো এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়, তাহলে মুখের মাস্ক, হাত জীবাণুমুক্তকরণসহ সকল ধরনের স্বাস্থ্য সুরক্ষা ব্যবস্থা চালু রাখতে অনুরােধ থাকবে। খেয়াল রাখতে হবে যেন কোথাও স্পর্শের দরকার না হয়। নগদ অর্থের বদলে মোবাইল ফোনে লেনদেনের ব্যবস্থা চালু করতে হবে।

গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...

খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর

Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.

Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.